যেভাবে করোনা সামাল দিয়েছে চীন
যেভাবে করোনা সামাল দিয়েছে চীন - ছবি : সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণের খবর মিলেছিল চীনের উহান শহরে, ২০১৯-এর ডিসেম্বরে। তার পরের দেড় বছরে বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত ১৬ কোটি মানুষ। প্রাণ হারিয়েছেন ৩৪ লাখ। সংক্রমণ শীর্ষে আমেরিকা। শুধু ৬ লাখ মৃত্যু হয়েছে ওই দেশেই। ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত ইটালি, ব্রাজিল, ভারতসহ একাধিক দেশ। শুধু খবরে নেই ভাইরাসের উৎস সন্দেহে বিতর্কের শীর্ষে থাকা চিন। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ডোমিটার্স’-এর পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের সংক্রমণ তালিকায় চীন অনেক পিছনে। স্থান ৯৮!
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ। অথচ চীনে এ পর্যন্ত সংক্রমিতের সংখ্যা মাত্র ৯০,৯২০। মোট মৃত্যু ৪,৬৩৬। উল্টো দিকে, আমেরিকায় সংক্রমিত ৩ কোটি ৩৮ লক্ষ। ভারতে ২ কোটি ৫৭ লক্ষ। ব্রাজিলে দেড় কোটি। আমেরিকায় প্রাণহানি ৬ লক্ষ। ভারতে ২ লক্ষ ৮৮ হাজার। ব্রাজিলে ৪ লক্ষ ৪১ হাজার। দেড় বছর আগে ‘অজানা জ্বরে কাবু’ চীন কী ভাবে সামলে ফেলল অতিমারি? নাকি সবটাই গোপন রেখেছে তারা বাকি বিশ্বের থেকে? এ সব প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব নেই। বরং চীনের দাবি, সার্স-কোভ-২ প্রথম চিহ্নিত করেছে তারা। ভাইরাসের উৎস হওয়ার প্রমাণ নেই।
নিজেদের তৈরি প্রতিষেধকের সাহায্যেই টিকাকরণ চলছে চীনে। আন্তর্জাতিক নিয়মের পরোয়া না-করে গত বছরের মাঝামাঝি টিকা প্রয়োগ শুরু করে দিয়েছিল চীন। তখনো তাদের তৈরি প্রতিষেধকের গবেষণাপত্র কোনো আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় ধাপ সম্পূর্ণ হয়নি। পরে চীনের দেখাদেখি একই কাজ শুরু করে রাশিয়া। চীনের দাবি, এ পর্যন্ত ৪০ কোটি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে দেশে। যা আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানির মোট টিকাকরণের থেকেও বেশি। তবে এই সংখ্যা চীনের ১৪০ কোটির জনসংখ্যার কাছে সামান্য।
বর্তমানে চীন টিকাকরণের গতি আরো বাড়িয়েছে। টিকাকরণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নিয়মিত প্রচারও চালানো হচ্ছে। তবে এর মধ্যে নতুন করে বিক্ষিপ্ত কিছু করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে চীন থেকে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
এক মাস পর ভারতে কমবে করোনার সংক্রমণ
ভারতে আছড়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এই সংক্রামক ভাইরাসে। কিন্তু এরই মধ্যে আশার কথা শোনালেন গবেষকরা। বিশেষজ্ঞদের কথায়, জুন মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যেই কমবে সংক্রমণ। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ হাজারে ঠেকবে। কিন্তু এর পাশাপাশি আগাম সংকট প্রসঙ্গে সতর্কও করছেন গবেষকরা। তারা জানাচ্ছেন, যদি টিকাকরণ ঠিকমতো না হয় বা সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে না চলেন সাধারণ মানুষ, সেক্ষেত্রে পাঁচ-ছয় মাস পরে ফের আছড়ে পড়বে করোনার তৃতীয় ঢেউ।
করোনা সংক্রমণ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন IIT হায়দ্রাবাদের তিন গবেষক। এই গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ড. এম বিদ্যাসাগর জানান, টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় আরও গতি আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, 'যাঁরা করোনার প্রথম ঢেউয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পেরেছিলেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেখা যাচ্ছে তাঁদের ইমিউনিটি কমছে।'
তার কথায়, ‘করোনার বিরুদ্ধে যারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পেরেছেন তাদের ইমিউনিটিও ৬ থেকে আট মাসের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রথম ঢেউয়ে করোনা আক্রান্তদের ৩০ শতাংশ ফের দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়েছেন।টিকাকরণের মাধ্যমে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরো জানান, বিশেষজ্ঞদের হিসেব অনুযায়ী, জুন মাসের শেষেই দৈনিক কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজারে নামতে পারে। তিনি আরো বলেন, কমপক্ষে দেশের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষের কাছে টিকা পৌঁছে দিতে হবে। পরের বছর জানুয়ারি মাসের মধ্যে ১০০ কোটি মানুষের কাছে টিকা পৌঁছে দিলে বিপদ এড়ানো অনেকটাই সম্ভব হবে, দাবি এই বিশেষজ্ঞের।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা প্রাণ কেড়েছে ৪ হাজার ২০৯ জনের, নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫৯১ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ২৭ হাজার ৯২৫ জন। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ লাখ ৫৭ হাজার ২৯৫ জন। অর্থাৎ দৈনিক আক্রান্তের থেকে সুস্থতার হার অনেক বেশি।
সূত্র : এই সময়