আসামে মাদরাসা বন্ধ হচ্ছে, সৌদি আরবে পড়ানো হচ্ছে রামায়ণ-মহাভারত

জসিম উদ্দিন | May 19, 2021 06:29 pm
রামায়ণ-মহাভারত

রামায়ণ-মহাভারত - ছবি : সংগৃহীত

 

দুটো খবর আমাদের দৃষ্টি কাড়ার মতো। একটি হচ্ছে, ভারতের আসামের মাদরাসা শিক্ষা আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত করা। অন্যটি হচ্ছে, সৌদি আরবে পাঠ্যপুস্তকে পৌরাণিক মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারতের অন্তর্ভুক্তি। প্রথম খবরটি আমাদের দেশের সংবাদমাধ্যমে দেখা যায়নি। ভারতের জাতীয় গণমাধ্যমে অবশ্য এটি ফলাও করে প্রকাশ করা হয়েছে। দ্বিতীয়টিকে অবশ্য ‘খবর’ বলা যায় না। এটি ছিল গুজব। সামাজিক মাধ্যমে দেখা গেছে। এ খবরে উৎসাহী হয়ে সৌদি আরবকে বাহবা দিয়ে বাংলাদেশের এক ব্যক্তি একটি জাতীয় পত্রিকায় কলাম লিখেছেন। তবে এ দুটো ইস্যুতে বাংলাদেশের মানুষের উদ্বেগ এবং জানার কৌতূহল রয়েছে।

আসামের প্রাদেশিক সরকার মাদরাসা শিক্ষাকে বিলুপ্ত করেছে। মাদরাসায় পড়ানো হয় কুরআন, ইসলামিক স্টাডিজ, ফিকাহ, তাফসির, আরবি ভাষা প্রভৃতি। পার্লামেন্টে পাস হওয়া আইন অনুযায়ী প্রত্যেকটি বিষয় পাঠ্য হিসেবে পরিত্যাগ করা হয়েছে। মাদরাসা বোর্ড বাতিল করে প্রতিষ্ঠানগুলোকে মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আনা হয়েছে। মাদরাসায় পড়ানো বিষয়গুলোর মধ্যে কেবল আরবি ভাষা শিক্ষাকে রাখা হয়েছে। সৌদি আরবের সাথে ভারতের সম্পর্ক ক্রমেই ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। এ জন্য ভারত ও সৌদি আরব উভয় দেশের প্রচেষ্টা রয়েছে। ভারতের লক্ষ্য জনশক্তি রফতানি করে দেশটি থেকে নগদ কামাই করা। এ জন্য আরবি ভাষাটি শিক্ষা করা তাদের খুব প্রয়োজন। অন্য দিকে সৌদি আরব বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতার আসনে বসে থাকতে পছন্দ করলেও ভারতে ‘ইসলাম’ শিক্ষা বন্ধ করে দেয়ার নীতি নিয়ে তাদের দৃশ্যত মাথাব্যথা নেই। যেমন- তাদের কোনো মাথাব্যথা ছিল না কাশ্মিরিদের বিশেষ অধিকার আইন একতরফাভাবে বাতিল করে দেয়া হয় যখন, তখনো।

আইন অনুযায়ী আসাম প্রদেশের সংস্কৃত টোলগুলো বিলুপ্ত হবে না। মাদরাসা শিক্ষা যেহেতু বিলুপ্ত করে দেয়া হয়েছে সেজন্য টোলগুলোর একটা কসমেটিক পরিবর্তন বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার করেছে। এ টোলগুলোর এখন থেকে ‘স্টাডি সেন্টার’, ‘রিসার্চ সেন্টার’ নাম ধারণ করবে। এসব প্রতিষ্ঠান থাকবে কুমার ভাস্কর ভার্মা সংস্কৃত অ্যান্ড এনশিয়েন্ট ইউনিভার্সিটির অধীনে। কুরআন হাদিস ফিকাহ এগুলোর প্রতি ভারতের সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী অসহিষ্ণু। এগুলো বন্ধ করে দিয়ে তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে একচোট নিতে চায়। বাস্তবে প্রাতিষ্ঠানিক এসব শিক্ষা গ্রহণ করে কেউ মুসলমান হয়ে যায় না। যেমন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইসলামিক স্টাডিজে পড়েছেন। তার ধর্মীয় পরিচয় তিনি হিন্দু ব্রাহ্মণ। এখনো তার পরিচয় একই রয়েছে।

মাদরাসা শিক্ষা আসামে শুরু হয় ১৯১৫ সালে। এর কোনো সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্য ছিল না। পিছিয়ে পড়া আসামের মানুষকে অক্ষরজ্ঞান প্রদান করার জন্য এ শিক্ষা চালু করা হয়। এতে আসলে কাউকে ধর্মান্তরিত করা হয়নি। কিংবা এর মাধ্যমে মুসলমান জনসংখ্যার প্রবৃদ্ধি ঘটেনি। বরং হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরাট একটা অংশও নিরক্ষরতা মুক্ত হতে পেরেছে। এসব মাদরাসা না থাকলে তাদের নিরক্ষর থেকে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ছিল।

আসামের আইন পরিষদে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর আইনটি পাস হয়েছে। প্রদেশের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে তখন হেমন্ত শর্মা। আসামে সরকারিভাবে চালিত ৬০০ মাদরাসায় ছাত্রসংখ্যা এক লাখ ৪০ হাজার। আগামী বছরের এপ্রিল থেকে সেখানে আর কোনো মাদরাসা শিক্ষা থাকবে না। ওই আইন পাসের পর শর্মা মন্তব্য করেছেন এই বিল শুধু সরকার পরিচালিত মাদারাসার জন্য প্রযোজ্য। তবে স্বাধীনভাবে পরিচালিত কওমি মাদরাসাগুলোর ব্যাপারেও আইন আসছে। সেগুলোকে সরকারের কাছ থেকে নিবন্ধন নিতে হবে। সরকারের নির্ধারিত পাঠ্য বিষয় তাদের পড়াতে হবে। মন্ত্রী আগেই মোটামুটি সতর্ক করে দিলেন বাকি ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে কী ঘটতে যাচ্ছে। এখন হেমন্ত ‘প্রমোশন’ পেয়ে নতুন মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন।

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী একটি জাতীয় দৈনিক ৯ মে কলাম লিখে খবর দিচ্ছেন, ভারতের রামায়ণ ও মহাভারতকে সৌদি আরবে পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চৌধুরী সাহেবের মতে, সৌদি আরবে শিক্ষা সংস্কারের ক্ষেত্রে এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। ওই কলামে তিনি আরো মন্তব্য করেন, এমন সংস্কারের কথা দেশটিতে ১০ বছর আগে চিন্তাও করা যেত না।

তিনি আরো তথ্য দিয়েছেন, যেমন- সৌদি আরবে ইসলামী শিক্ষা ছাড়া অন্য কোনো শিক্ষা হারাম বা অবৈধ এবং দেব-দেবীর নাম উচ্চারণ করা হলে জিহ্বা কেটে ফেলার হুকুম রয়েছে। সৌদি আরবের ব্যাপারে বাংলাদেশে ব্যাপক অসত্য প্রচারণা অনেকটা ফ্যাশনের পর্যায়ে রয়েছে। বিশেষ করে এক শ্রেণীর প্রগতিশীল সৌদি আরবকে বর্বর নারী নির্যাতক কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং প্রাচীনপন্থী দেশ হিসেবে চিত্রিত করে আনন্দ পান। আধুনিক জামানায় এর চেয়ে ‘অসভ্য’ দেশ তাদের মতে আর হতে পারে না। শাহবাগের ‘গণজাগরণ’ মঞ্চেও এর প্রতিফলন দেখা গেছে। তারা সেখানে দাড়ি টুপি এসব প্রতীকের প্রতি কটাক্ষ করেছেন মূলত সৌদি আরব থেকে তা আমদানি হয়েছে এমন ধারণা থেকে। আরবীয় জোব্বাকেও সেখানে তখন অপমান করা হয়েছিল। বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির সবচেয়ে বড় জায়গা সৌদি আরব। আমাদের লাখ লাখ রেমিট্যান্স যোদ্ধা সে দেশে আয় করে সত্তরের দশক থেকে এ দেশের অর্থনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।

‘গণজাগরণ’ মঞ্চে যখন এমন উন্মাদনা চলছিল সেটা একটা ‘বিপ্লব’ হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। সরকার ও তার বাহিনী এই বিপ্লবীদের সব রকমের সেবা দিয়েছে। আমেরিকান দূতাবাস, ভারতীয় দূতাবাস সবাই তাদের প্রতি সহমর্মিতা পোষণ করেছে। সফররত ভারতীয় প্রেসিডেন্ট তাদের প্রশস্তি গেয়েছেন। অথচ সৌদি আরব এ ব্যাপারে তখন নিশ্চুপ। সৌদিরা আমাদের ‘মিসকিন’ বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে, এমন খবর পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশে যারা তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা বিদ্বেষ ছড়ায় ও তাচ্ছিল্য করে নাক সিঁটকায় তারা বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে থাকে। সৌদিরা মনে হয় এসব ব্যাপারে একেবারেই বেখবর।

সৌদি আরবের শিক্ষা পাঠ্যে মহাভারত রামায়ণ অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কলামিস্ট গাফ্ফার চৌধুরী যে খবর দিয়েছেন তার উৎস পাওয়া গেছে সামাজিকমাধ্যমে। গুজব কিভাবে ফুলে ফেঁপে খবর হয়ে গেল তার বিবরণ আমরা পরে দিচ্ছি। তার আগে দেখে নিই, শিক্ষা নিয়ে দেশটির ভাবনা কেমন। সৌদি আরব জিডিপির ৮ দশমিক ৮ শতাংশ খরচ করে শিক্ষার পেছনে। সারা বিশ্ব গড়ে জাতীয় শিক্ষার জন্য জিডিপির আনুপাতিক হারে যতটা ব্যয় করে সৌদি আরবে তার প্রায় দ্বিগুণ ব্যয় করা হয়। শিক্ষা দেশটির দ্বিতীয় প্রধান ব্যয়ের খাত। আর দেশটির শিক্ষাব্যবস্থায় ‘ইসলামী শিক্ষা’ একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে। সেখানে বিজ্ঞান ও সামাজিক শিক্ষাও অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে শেখানো হয়। দেখা যাচ্ছে, শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীদের সংখ্যা পুরুষদের চেয়ে বেশি। শিক্ষার ব্যাপারে এসব তথ্যের বিস্তারিত ভাণ্ডার একটু ঘাঁটাঘাঁটি করলে সহজে যে কেউ পেতে পারেন। এ দিকে বাংলাদেশের প্রধান ধারার সংবাদমাধ্যম একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছে। কিছু ব্যক্তি সুযোগ পেলেই ভুল প্রচারণা চালিয়ে নিজেদের বিদ্বেষ চরিতার্থ করতে গিয়ে সৌদি আরবকে টার্গেট করেন। তারা এটাও বেমালুম ভুলে যান, সৌদি আরব আর ইসলাম সমার্থক নয়।
এবার আমরা দেখব, সৌদিতে রামায়ণ ও মহাভারত পড়ানোর উৎসটি কোথায়। সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান ‘ভিশন ২০৩০’ নামে এক উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা নিয়েছেন। ২০১৬ সালে ঘোষণা করা ওই ভিশনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, দেশটির অর্থনীতিকে তেলনির্ভরতা থেকে বের করে আনা। শিল্প ব্যবসা বাণিজ্য বিনোদন ও পর্যটনের ‘বিপ্লব’ ঘটাতে চান তিনি। এ জন্য শিক্ষাব্যবস্থায় সংস্কার চান যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া যুবকরা দেশের অর্থনীতিকে আমূল বদলে দিতে পারেন। এই ভিশনের মধ্যে এতদিন অনুসৃত ধর্মীয় শিক্ষার সাথে বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যাপক প্রচলনের কথা রয়েছে। কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি যে, পশ্চিমে শিক্ষিত হওয়া সালমান সেখানে পাঠ্যপুস্তকে রামায়ণ ও মহাভারত অন্তর্ভুক্ত করেছেন। উল্লেখিত লেখক নিজ দায়িত্বে তার কলামে বাংলাদেশে এই খবর জানাচ্ছেন, তবে কোনো তথ্য সূত্র দেননি।

এ ধরনের একটি খবর সামাজিকমাধ্যমে দেখা গেছে সনাতন ধর্মের কিছু লোকের পোস্টে। উক্ত সম্প্রদায়ের সাধারণ সদস্যরা উৎফুল্ল হয়ে এসব পোস্ট দিচ্ছেন। এতে খারাপ কিছু নেই। রামায়ণ মহাভারত পড়ে জ্ঞান আহরণ করা যেতে পারে। তারা আনন্দিতও হতে পারেন। ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সদস্য হিসেবে যে কেউ এ ধরনের খবর জেনে থাকলে সেটা সামাজিকমাধ্যমে দিতে পারেন। যারা এমন খবর দিয়েছেন তাদের মধ্যে দায়িত্বশীল ও গুরুত্বপূর্ণ কাউকে দেখা যায়নি। কেউ কেউ যখন এই খবর জানাচ্ছেন তখন এ ধরনের ভিত্তিহীন খবর নিয়ে সৌদি আরবে নাগরিক প্ল্যাটফর্মে প্রতিক্রিয়া চলছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, তাদের কাছে এটা একটা ‘উদ্ভট খবর’। প্রধানধারার কোনো সংবাদমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হয়নি। অনুসন্ধানে শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, এ খবরের সোর্স একজন সৌদি নাগরিক।

নওফ আলমারবি নামে ভদ্রমহিলা আরব ইয়োগা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা। মোদি সরকারের আমলে ২০১৮ সালে তাকে ভারতের পক্ষ থেকে ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এই আরব মহিলার শিশুসন্তান পড়ে একটি বেসরকারি সৌদি স্কুলে। সেখানে তিনি বাচ্চার স্কুলের প্রশ্নপত্রের শূন্যস্থান পূরণের একটি ইমেজ সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করেছেন।

এ দিকে এপ্রিলের ১৬ তারিখে বিজেপির দুটো প্রচারণা সাইটে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। তাতে দাবি করা হলো, সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ প্রকল্প অনুযায়ী দেশটিতে রামায়ণ ও মহাভারত শিক্ষা দেয়া হবে। নিবন্ধের মধ্যে তারা ভারতীয় উপমহাদেশ বিষয়ক স্কুল প্রশ্নপত্রের শূন্যস্থানের ছবি প্রদর্শন করেছেন। এর একটি প্রশ্নে দেখা যাচ্ছে ভারতের দুটো মহাকাব্যের নাম রামায়ণ ও মহাভারত। দুটো প্রচারণা সাইটেই এই আরব ভদ্রমহিলার করা টুইটটি প্রদর্শন করা হয়। ওই টুইটে প্রশ্নপত্রের শূন্যস্থান পূরণের স্ক্রিনশটের পাশাপাশি তিনি লিখেছিলেন, সৌদি আরবের নতুন ভিশনে শিক্ষা পাঠ্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সাম্যপূর্ণ ও সহনশীল ভবিষ্যৎ নির্মাণে সাহায্য করবে। তিনি আরো লিখেছেন, স্ক্রিনশটটি আমার সন্তানের আজকের পরীক্ষার। তিনি উল্লেখ করেন এটি সোস্যাল স্টাডিজ বিষয়। এতে রয়েছে হিন্দু ধর্ম বৌদ্ধ ধর্ম রামায়ণ মহাভারতের ইতিহাস এবং নাটক। পোস্টটি ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত দুই হাজার রিটুইট হয়। ভিশন ২০৩০ তে সৌদি সরকারের স্কুল পাঠ্যে রামায়ণ মহাভারত অন্তর্ভুক্ত করার কোনো খবর এই ইয়োগাপ্রেমী ভদ্র মহিলা দেননি। তিনি তার সন্তান যে বেসরকারি স্কুলে পড়ে তার একটি পাঠ্য বিষয়ের প্রশ্নপত্রে রামায়ণ মহাভারত মহাকাব্য অংশটির স্ক্রিনশট দিয়েছিলেন। ভারতের সাম্প্রদায়িক প্রচারবিদরা এটিকে সৌদিতে মহাকাব্য দু’টি পাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে বলে দশমুখে গুজব ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রাজ্ঞ কোনো মিডিয়াব্যক্তি এ গুজব ভিত্তি ধরে আনন্দিত হয়ে কলাম লিখে ফেললে সেটা মানানসই হয় না।

বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের বিশিষ্ট একটি অংশের কার্যক্রম বরাবরই বিস্ময়ের সৃষ্টি করে থাকে। তারা ‘জাতির শিরোমণি’ হয়ে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দুহাতে কুড়াচ্ছেন। এর বিনিময়ে জাতির স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে জাতিকে খুব কমই সঠিক পথ দেখিয়েছেন। নাগরিকপঞ্জি তৈরি করে আসামের বিরাট একটি জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রহীন করে দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর ভারতের ক্ষমতাসীন মহল হুমকি সৃষ্টি করছেন। তারা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি সীমান্তবর্তী রাজ্যে ‘বিদেশীর’ ধুয়া তুলছেন। ভারতের সংখ্যালঘুদের জমিজমা ভিটেমাটিহীন করে দেয়ার অব্যাহত ষড়যন্ত্র তারা করছেন। রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য এগুলো সবচেয়ে বড় হুমকি। আসামের মাদরাসা শিক্ষা বন্ধ করে দেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বুদ্ধিজীবী শিরোমণিরা এ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে জাতিকে দিশা দেবেন। এমনকি আমাদের মাদরাসা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু সেটিও বলবেন। সেটি না করে, এই শিরোমণিরা তাদেরই প্রচারবিদের দায়িত্ব পালন করছেন। খুশিতে আহ্লাদিত হয়ে যাচ্ছেন ‘পশ্চাৎপদ’ সৌদি আরবে মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারত পড়ানো হবে বলে। এই গুজবই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খবর হয়ে গেল!

jjshim146@yahoo.com

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us