করোনার সময় শিশুর জ্বর এলে কী করবেন?
করোনার সময় শিশুর জ্বর এলে কী করবেন? - ছবি : সংগৃহীত
করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে বাড়ির ছোট্ট সদস্যটির শরীর গরম হলেই পরিবারের সকলের মাথায় দুশ্চিন্তা দানা বাঁধছে। কী করে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হবে, সেই ভেবেই কূল পাচ্ছেন না অনেকে। তবে এমন জটিল অবস্থায় দাঁড়িয়ে এতটা ঘাবড়ে গেলে চলবে না। বরং ধীর স্থির থেকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক বাচ্চার জ্বর হলে ঠিক কী করবেন-
বাচ্চাদের জ্বর মূলত ভাইরাসের কারণে হয়। করোনা আসার আগে পর্যন্ত ভাইরাল ফিভারের মূল কারণ ছিল ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। কিন্তু করোনা এসে গোটা চিত্রটাই বদলে দিয়েছে। বাচ্চাদেরও করোনা হচ্ছে। তাই জ্বরকে সাধারণ ফ্লু হয়েছে ভেবে ফেলে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই।
বাচ্চার জ্বর এলে সচেতন হন। জ্বর মাপুন।
জ্বর ১০০ ফারেনহাইটের কাছাকাছি পৌঁছালেই শুরু করে দিন প্যারাসিটামল। সাধারণত পেডিয়াট্রিশিয়ান আগেভাগেই বাচ্চার প্যারাসিটামলের ডোজ ঠিক করে দিয়ে থাকেন। ওই ডোজেই প্যারাসিটামল খাওয়ান। আর প্যারাসিটেমলের ডোজ ঠিক করা না থাকলে, বাচ্চার প্রতি কেজি ওজনে ১৫ মিলিগ্রাম করে ধরে ওষুধটি খাওয়ান। অর্থাৎ বাচ্চার ওজন ১০ কিলো হলে ১৫০ মিলিগ্রাম প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে। নিয়মিত থার্মোমিটারে তাপমাত্রা মাপতে থাকুন।
বাচ্চার শরীরের পানির জোগান বাড়াতে হবে। পানি, দুধ জাতীয় পানীয় বেশি খাওয়ান। বাচ্চার বয়স ছয় মাসের নিচে হলে কেবল মাতৃদুগ্ধই পান করান।
প্রাথমিক ধাক্কা সামলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। চিকিৎসকের ক্লিনিকে যেতে না পারলে টেলিমেডিসিনের সাহায্য নিন।
চিকিৎসক করোনা পরীক্ষা করাতে বললে যত শিগগির সম্ভব টেস্ট করান। ফেলে রাখবেন না।
বাচ্চার করোনা হলেও ১০ বছরের নিচের বাচ্চাকে কেবল প্যারাসিটামল এবং একটু বেশি মাত্রায় পানি পান করাতে হবে। অন্য কোনো ওষুধ দেয়ার গাইডলাইন নেই। কেবলমাত্র ১২ বছরের ঊর্ধ্বদের সেকেন্ডারি ইনফেকশন এড়াতে প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া যেতে পারে। আর অবশ্যই চিকিৎসেকর পরামর্শ ছাড়া কোনো অ্যান্টিবায়োটিক বা ওই জাতীয় কোনও ওষুধ বাচ্চাকে খাওয়াবেন না।
বাচ্চা মাতৃদুগ্ধ পান করলে করোনা হলেও তাকে মাতৃদুগ্ধ পান করাতে হবে।
করোনা হলেও ২ বছরের নিচের বাচ্চাকে মাস্ক পরাবেন না। এতে তাদের ক্ষতি। ২ বছর ঊর্ধ্বরা অবশ্য মাস্ক পরতে পারে।
বাচ্চাকে একা আলাদা রাখতে যাবেন না। সমস্ত সতর্কতা নিয়ে তার সঙ্গেই থাকুন।
বাচ্চার করোনা নিয়ে খুব ঘাবড়ে যাবেন না। বাচ্চাদের রোগ খারাপ দিকে যাওয়ার আশঙ্কা কম।
ওষুধ খাওয়ানোর পরও জ্বর কমেছ না, জ্বর ক্রমশ বাড়ছে, বাচ্চার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে দেখলে সোজা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাসপাতালে যান।
করোনার বদলে সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা হলেও প্যারাসিটেমল এবং পানি পানই চিকিৎসা। রোগ তাতেই সারবে।
ইনফুলয়েঞ্জা ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাসের আক্রমণ থেকে জ্বর আসতে পারে। তেমন কিছু হলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ খাওয়াতে হবে।
সূত্র : বর্তমান