সামরিক সহায়তা কিভাবে পায় হামাস
হামাসের সমরাস্ত্র - ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজায় রোজা এবং ঈদ ও এর পরবর্তী দিনগুলোতে ন্যাক্কারজনক গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল। সারা দুনিয়া গাজার সাথে সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করছে।
দখলদার ইসরাইলের এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিরোধ করতে হামাস এ পর্যন্ত হাজার তিনেক রকেট নিক্ষেপ করেছে যার ৫০ বা ৬০ শতাংশ আয়রন ডোম দিয়ে প্রতিরোধ করতে পেরেছে ইসরাইল। তবে বাকি রকেটগুলো ঠিকই লক্ষ্য বস্তুতে হামলা করে ইসরাইলিদের মনে ভয় ধরিয়ে দিতে পেরেছে।
এই যখন পরিস্থিতি তখন প্রশ্ন উঠছে হামাস এই রকেটগুলো পায় কোথা থেকে। রকেট হামাস নিজেই বানায়। তবে প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ আসে ইরান, সিরিয়া, লেবানন থেকে। এক্ষেত্রে ইরান পাইওনিয়ার। তারা হামাসের টানেল নির্মাণ টেকনোলজিস, রকেট নির্মাণের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। সিরিয়া ভূখণ্ডে হামাসের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয় ইরান। এছাড়া হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য ইরানি প্রক্সি যোদ্ধার কাছে থেকেও অস্ত্র, অস্ত্র নির্মাণের উপকরণ, প্রশিক্ষণ তারা পেয়ে থাকে। ইরান সাধারণত এগুলো দেয় স্মাগলিংয়ের মাধ্যমে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিনে কোনো কিছুই প্রবেশ করতে দেয় না ইসরাইল। মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির আমলে গাজাবাসী যথেষ্ট সহযোগিতা পেয়ে থাকলেও সিসির আমলে মিসর সীমান্তে দেয়াল তুলে দিয়েছে যাতে গাজাবাসী দেশটিতে ঢুকতে না পারে।
তুরস্ক বিভিন্ন সময়ে খাদ্য, ওষুধ দিয়ে ফিলিস্তিনকে সহযোগিতা করলেও সামরিক কোনো সহযোগিতা করে না। কোনো সহযোগিতা যে করে না সেটা আবার তাকে ইসরাইলের কাছে মুচলেকা দিতে হয়। আরব নিউজ ইসরাইলকে হিপোক্রেট শব্দ সংযোজিত শিরোনাম করেছিলো গত বছর।
https://www.arabnews.com/node/1680041/middle-east
হামাসের খাদ্য, ওষুধের চেয়ে সামরিক সহযোগিতা বেশি জরুরি। আর সেটা সবচেয়ে সহজে করতে পারে তুরস্ক। কিন্তু তুরস্ক হলো ইসরাইলের বড় ব্যবসায়ী অংশীদার। তুরস্ক-ইসরাইলের বাণিজ্যিক সম্পর্কে জানতে জেরুসালেম পোস্টের লিংকে ঢুকুন।
https://www.jpost.com/middle-east/turkish-israel-trade-on-the-rise-as-diplomatic-relations-hit-bottom-645852
সম্প্রতি ইরান হামাসের সাথে তার সহযোগিতা ও সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ করেছে। ইসরাইলের জেরুসালেম পোস্ট নিউজটি গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে।
https://www.jpost.com/arab-israeli-conflict/iran-reveals-its-strategy-advising-hamas-on-war-against-israel-668265
কাতার হামাসের বড় অর্থদাতা দেশ। তবে সামরিক সহযোগিতা ইরান থেকেই বেশি আসে। জার্মানির ডয়েচেভেলে এরকমই রিপোর্ট করেছে।
https://www.dw.com/en/who-is-hamas/a-57537872
নিউইয়র্ক টাইমস বড় পরিসরে রিপোর্ট করেছে। তারা বিভিন্ন তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে হামাস, ইসলামিক জিহাদ ও অন্য মুজাহিদিন গ্রুপের কাছে ৩০ হাজারের বেশি বিভিন্ন পাল্লার রকেট আছে। ইসরাইলি সামরিক বিশেষজ্ঞরা হামাসের গতি, নিক্ষেপ, লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত বিশ্লেষণ করে অবাক হয়েছেন। হামাসের সাফল্য তাদের ধারণার চেয়ে বেশি। এই প্রযুক্তি তারা কোথায় পেল- এই প্রশ্নের উত্তরেও তারা ইরানকেই খুঁজে পেয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট-
https://www.nytimes.com/2021/05/13/world/middleeast/gaza-rockets-hamas-israel.html
অনেকেই তুরস্ক বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোগানকে কৃতিত্ব দিতে উঠে পড়ে লেগেছেন। কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন, পাকিস্তান ও তুরস্ক মিলে একটি সামরিক বাহিনী গঠন করতে চান এরদোগান! অথচ তুরস্ক তার মাটিতে ১৯৯৬ সাল থেকে ইসরাইলি সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। তাদের মধ্যে প্রতিরক্ষা চুক্তিও হয়েছে ১৯৯৬ সালে।
নিচের লিংকের প্রথম আর্টিকেলে বিস্তারিত আছে সেখানেও ইসরাইলের শত্রু রাষ্ট্র ইরানের কথা আছে।
https://www.tandfonline.com/doi/full/10.1080/1356788960261
হামাসের প্রতি যে সকল দেশ সহানুভূতিশীল, তারা আর যাহোক উম্মাহর কাছে ইনসাফের আচরণ আশা করে। উম্মাহর উচিত ভুল তথ্য ও আবেগের দাসত্ব না করে সঠিক তথ্য জানা।