বড় ভাঙন ধরতে চলেছে বিজেপিতে! তৃণমূলে ফিরছে দলবদলুরা
মমতা ব্যানার্জি - ছবি : সংগৃহীত
এবারের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধান সভার নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে রাজ্য বিজেপির। পার্লামেন্ট সদস্য থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের ভাঙিয়েও মুখ পুড়েছে গেরুয়া শিবিরের। যে স্বপ্ন ফেরি করা হয়েছিল তা বাস্তবায়িত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে এখন পরাজিত প্রার্থীদের একাংশ দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি শুরু করেছেন। আবার তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়া বেশ কয়েকজন নেতা তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার চেষ্টা করছেন। এমনকী বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সহ–সভাপতি কাশেম আলি যোগাযোগ করেছেন বলে সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে মুকুল রায়ের হাত ধরেই পদ্মাসনে বসেন কাশেম। রাজ্য স্তরের দায়িত্বও পান। এখন তিনি ফিরতে চান তৃণমূল কংগ্রেসেই। এই মুসলিম নেতা রোববার বলেন, ‘খুব ভুল করেছি। শরীর সুস্থ হলেই নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়ে আসব। আমি তৃণমূল কংগ্রেসেই ফিরে যেতে চাই। আসলে বিজেপি দলটা মুসলিমদের জন্য নয়। তবে অনেকেই আমার সঙ্গে ফিরতে চান। বিজেপি নির্বাচনী প্রচারে যেভাবে সংখ্যালঘুদের আক্রমণ করেছে সেটা বাংলার মানুষ ভালোভাবে নেয়নি।’
তবে কাশেমেই থেমে থাকছে না বিষয়টি। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ২০২০ সালে ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দেন হুগলির পুরশুড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক শেখ পারভেজ রহমান। তিনি এখন বীতশ্রদ্ধ। যদিও এখানে বিজেপি জিতেছে। তবু গেরুয়া শিবির ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতে চান পারভেজ। তিনি বলেন, ‘আমরা পুরনো নেতারা না থাকাতেই আরামবাগ লোকসভা এলাকায় ৪টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস হেরে গিয়েছে। অভিমানে দল ছেড়েছিলাম। এখন ফিরতে চাই।’
হুগলির আর এক প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আলমগির মোল্লাও ফেরার কথা ভাবছেন। তবে তিনি স্বীকার করেননি। বিজেপিতে যাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক কবিরুল ইসলামও এখন ঘরওয়াপসি চাইছেন। তিনি বলেন, ‘বিজেপিতে এসে ভুল করেছি। যে দলের রাজ্য সভাপতি বলেন, মুসলিমদের দরকার নেই, সেখানে থাকার মানে হয় না।’ এই পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে তাহলে জেলায় জেলায় বিজেপির সংগঠন টেকানো মুশকিল হয়ে যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
করোনায় মৃতের আসল সংখ্যা চেপে যাচ্ছে গুজরাতের বিজেপি সরকার, অভিযোগ চিদম্বরমের
করোনাভাইরাসে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা লুকিয়ে যাচ্ছে গুজরাত সরকার। এমনই অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সরকার এবং গুজরাত সরকারের জবাব চাইল কংগ্রেস।
গুজরাতের ৩৩ টি জেলার পরিসংখ্যান (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দু্স্তান টাইমস) তুলে ধরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী পি চিদম্বরম দাবি করেন, গত বছর মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসে যে সংখ্যক ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছিল, তার তুলনায় চলতি বছর ওই একই সময়ের (মার্চ, এপ্রিল এবং মে'র প্রথম ১০ দিন) মধ্যে ঢের বেশি মৃত্যুর সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। যা কোনোভাবেই স্বাভাবিক হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না। করোনাভাইরাসে মৃত্যুর জেরেই ডেথ সার্টিফিকেটের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ করেন চিদম্বরম। তিনি বলেন, 'দু'বছরের মধ্যে পার্থক্য হল ৬৫,০৮৫। কিন্তু গুজরাত সরকার দাবি করছে যে মাত্র ৪,২১৮ জনের করোনায় মৃত্যু হয়েছে। বাকি যারা মারা গিয়েছেন, তাদের মৃত্যুর কারণ কী? কীভাবে রাজ্য সরকার নিজেদেরই জারি করা ডেথ সার্ফিটিকেটের সংখ্যাকে খারিজ করে দিতে পারে?'
শনিবার একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন উল্লেখ করে কংগ্রেস নেতা শক্তিসিং গোহিল ও চিদম্বরম দাবি করেছিলেন, চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে ১০ মে'র মধ্যে গুজরাতের ৩৩ টি জেলায় ১২৩,০০০ টি ডেথ সার্টিফিকেট জারি করা হয়েছে। গত বছর একই সময় ৫৮,০০০ টি ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছিল গুজরাত সরকার। চিদম্বরম দাবি করেন, 'দু'বছরের পরিসংখ্যানের মধ্যে এত ফারাক কেন, তার ব্যাখ্যা অবশ্যই দিতে হবে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বলেন, 'আমরা দৃঢ়ভাবে সন্দেহ প্রকাশ করছি যে করোনাভাইরাসের কারণেই বেশি মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য সরকার করোনায় মৃতের প্রকৃত সংখ্যা চেপে দিচ্ছে। গঙ্গায় অজ্ঞাতপরিচয় মানুষের লাশ ভেসে ওঠার ফলে আমাদের সন্দেহে সিলসমোহর পড়েছে। গঙ্গার পার বরাবর ২০০টি মৃতদেহ বালিতে পোঁতা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে।'
কংগ্রেসের আরো সন্দেহ, কয়েকটি রাজ্য সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে করোনায় প্রকৃত মৃতের সংখ্যা চেপে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস