এভারেস্টে করোনা আতঙ্ক আর মৃত্যু
এভারেস্টে করোনা আতঙ্ক আর মৃত্যু - ছবি : সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট বেসক্যাম্প খুলে দিয়েছে নেপাল। কিন্তু বেসক্যাম্পেও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন পর্বতারোহীরা।
নেপাল করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ ভালোভাবেই সামাল দিয়েছিল। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত নেপাল। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়ার মুখে। তারই মধ্যে মাউন্ট এভারেস্ট ক্লাইম্বিংয়ের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার। গত মরশুমে বেস ক্যাম্প বন্ধ রাখা হয়েছিল করোনার জন্য। কিন্তু এ বছর তা খুলে দেয়া হয়েছে।
অন্যবারের চেয়ে এ বছর প্রবতারোহী কম গেলেও বেসক্যাম্পে ভিড় ভালোই। শুরু হয়ে গেছে পর্বতারোহণও। বৃহস্পতিবার দু'জন পর্বতারোহীরও মৃত্যু হয়েছে। একজন সুইস এবং অন্যজন আমেরিকান। নেপালের পর্বতারোহণ সংস্থা জানিয়েছে, সুইস পর্বতারোহী সামিট করে ফেরার পথে খারাপ আবহওয়ার মধ্যে পড়েন। মৃত্যু হয়। মার্কিন পর্বতারোহী সামিট করতে পারেননি। ক্যাম্প ফিরে তার স্নো ব্লাইন্ডনেস শুরু হয়। তারপরেই তার মৃত্যু হয়। পর্বতারোহী সংস্থাটি জানিয়েছে, নিচ থেকে শেরপা পাঠানো হয়েছিল দুই পর্বতারোহীকে বাঁচানোর জন্য। কিন্তু শেরপারা পৌঁছানোর আগেই তাদের মৃত্যু হয়।
দিন কয়েক আগে এভারেস্ট বেসক্যাম্প থেকে একাধিক ক্লাইম্বারকে নামিয়ে আনা হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থাগুলো খবর করে। বলা হয়, বেসক্যাম্পে বেশ কিছু পর্বতারোহী করোনায় আক্রান্ত হন। দ্রুত তাদের হেলিকপ্টারে করে নামিয়ে নেয়া হয়। তবে নেপাল সরকার এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। পর্বতারোহী সংস্থাও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। নিয়ম অনুযায়ী, বেস ক্যাম্প পৌঁছানোর আগেই পর্বতারোহীদের করোনা পরীক্ষা হওয়ার কথা। অভিযোগ, তা ঠিক মতো হচ্ছে না।
নেপালে প্রতিদিন করোনায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতে ভরে গেছে। অভিযোগ, রোগীর চাপে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে। তার মধ্যে কেন এভারেস্ট বেসক্যাম্প খুলে দেয়া হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের সাউথ কল নেপালের দিকে। নর্থ কল চীনের দিকে। নেপালের করোনা পরিস্থিতি দেখে চীন নর্থ কল বন্ধ করে দিয়েছে। নেপাল থেকে কেউ যাতে চীনের এভারেস্টের দিকে যেতে না পারে, তার জন্য একটি বিভাজন রেখাও তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে অক্সিজেন সংকটও শুরু হয়েছে নেপালে। হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে এভারেস্টে যে সমস্ত অক্সিজেন ব্যবহার করা হয় পর্বতারোহণের জন্য, সেই অক্সিজেন হাসপাতালগুলিতে পাঠানোর ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। শেরপারা অক্সিজেন নামানোর ব্যবস্থা করছেন।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই বক্তব্য, যেভাবে এখন এভারেস্ট অভিযান নিয়ে ব্যবসা হচ্ছে, তাতে প্রকৃতির প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে। বেসক্যাম্প থেকে সামিট পর্যন্ত পর্বতারোহীদের জ্যাম হচ্ছে। এর উপর করোনার সময়েও এভারেস্ট বেসক্যাম্প খুলে দেয়া নিয়ে বিরক্তি এবং আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
সূত্র : ডয়চে ভেলে