গুজরাতে প্রচণ্ড বেগে আঘাত হানতে পারে তাউটে
গুজরাতে প্রচণ্ড বেগে আঘাত হানতে পারে তাউটে - ছবি : সংগৃহীত
আরো শক্তিশালী হয়েছে ঘূর্ণিঝড় 'তাউটে'। ইতিমধ্যে সেটি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। যা সোমবার সন্ধ্যায় গুজরাত উপকূল পৌঁছে যাবে। ভারতের আবহাওয়া দফতর মৌসম ভবন জানিয়েছে, সোমবার রাতে সেই ঘূর্ণিঝড়ের দাপট সবথেকে বেশি থাকবে। ঘণ্টায় ১৫০-১৬০ কিলোমিটার বেগে বইবে ঝড়। কখনো কখনো তা ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটারে পৌঁছে যেতে পারে।
মৌসম ভবনের সাম্প্রতিক বুলেটিন অনুযায়ী, শনিবার রাত আড়াইটের সময় পূর্ব-মধ্য আরব সাগরের উপর অবস্থান করছে 'তাউটে'। যা শেষ ছ'ঘণ্টায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আপাতত সেটি গোয়ার পানজিমের দক্ষিণ-পশ্চিমে ১৫০ কিলোমিটার, গুজরাতের ভেরাবলের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ৭৩০০ কিলোমিটার এবং মুম্বইয়ের দক্ষিণে ৪৯০ কিলোমিটারে দূরে অবস্থিত। আগামী কয়েক ঘণ্টায় তা ক্রমশ বাড়িয়ে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে সোমবার সন্ধ্যায় গুজরাত উপকূলের কাছে পৌঁছাবে। মঙ্গলবার সকালে পোরবন্দর এবং মাহুভার মাঝখান দিয়ে সেই ঘূর্ণিঝড় গুজরাত উপকূল পার করবে।
ইতিমধ্যে 'তাউটে' কর্নাটক উপকূলে প্রবেশ করে গিয়েছে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই। সংবাদসংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, 'ঘূর্ণিঝড় তাউটে কর্নাটক উপকূলে আছড়ে পড়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দুটি দল এখানে আছে। আমরা রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীরও তিনটি দল মোতায়েন করেছি। কর্নাটকের তিনটি উপকূলবর্তী জেলায় ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন ১,০০০ জন।'
অন্যদিকে, মুম্বইয়ে ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় ৫০০ জন করোনাভাইরাস রোগীকে অন্যান্য সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বৃহন্মুম্বই পুরনিগম। শনিবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। পালঘর, রায়গড়, রত্নাগিরি এবং সিন্ধুদুর্গের মতো উপকূলবর্তী জেলার দিকে বাড়তি নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্তও সমুদ্রতটে সতর্ক থাকতে বলেছেন। ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ১৮ টি হেলিকপ্টার এবং ১৬ টি পণ্যবাহী বিমান তৈরি রেখেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। প্রস্তুতি সেরে রেখেছে ভারতীয় নৌবাহিনীও। ইতিমধ্যে বিভিন্ন নীচু জায়গা থেকে লোকজনকে সরানো হয়েছে। খাবার সরবরাহ করেছে নৌবাহিনী। কেরালা, কর্নাটক, গুজরাত, গোয়া এবং মহারাষ্ট্রে একাধিক দল মোতায়ন করেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
সূত্র ; হিন্দুস্তান টাইমস
পশ্চিমবঙ্গে ১৫ দিনের লকডাউন শুরু
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে শুরু হয়েছে ১৫ দিনের লকডাউন। রোববার সকাল ৬টা থেকে আগামী ১৫ দিন অর্থাৎ ৩০ মে পর্যন্ত চলবে এই লকডাউন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্যই ফের এমন কড়া বিধি-নিষেধ জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন। শনিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন ব্যানার্জি সংবাদ সম্মেলন করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
আগামী ১৫ দিন কেবল জরুরি পরিষেবায় ছাড় দেয়া হয়েছে। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, জরুরি পরিষেবার সাথে যুক্ত দফতরগুলি ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকছে এই ১৫ দিন। বন্ধ থাকছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও। এটিএম পরিষেবা স্বাভাবিক থাকলে ব্যাংক সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত খোলা থাকবে। মুদিখানা ও বাজার খোলা থাকবে শুধুমাত্র সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত। আগেই লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ বার তার সাথে গণপরিবহনের অন্যান্য মাধ্যমও (বাস, মেট্রো, ফেরি পরিষেবা) সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেল। তবে জরুরি প্রয়োজনে রাস্তায় কিছু ট্যাক্সি এবং অটো চলাচলে ছাড় রয়েছে।
পাশাপাশি রাত ৯টার পর জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ রাস্তায় বার হতেও পারবেন না ভোর ৫টা পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে যদি কোনো ব্যক্তি রাস্তায় বার হন তা হলে পুলিশ তাকে আটক করতে পারে। এমনকি তার বিরুদ্ধে মহামারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাও নিতে পারে পুলিশ।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা