টিকা নিয়ে যে সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে চীন ও ভারত
টিকা নিয়ে যে সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে চীন ও ভারত - ছবি : সংগৃহীত
কানাডার সব মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেবার জন্য যত ভ্যাকসিন প্রয়োজন দেশটি তার তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি টিকা কেনায় গত বছরের শেষ দিকে সমালোচনার মুখে পড়ে দেশটি। তবে যেটা দেখা যায় যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা পাবার তালিকায় তারা নাম লেখায়নি।
এর কারণ হলো, কানাডার একটা উদ্বেগ ছিল যে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার ক্ষমতায় থাকলে আমেরিকা রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা বসাবে আর সেই উদ্বেগ থেকে কানাডা ইউরোপের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক কারখানাগুলোয় অর্থ লগ্নীর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তাদের সেই সিদ্ধান্ত সুবিবেচনার হয়নি।
ইউরোপের কারখানাগুলো এখন টিকা সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে, এবং সম্প্রতি দেখা গেছে, আমেরিকা নয় বরং ইইউ-ই রফতানির ওপর এখন নিষেধাজ্ঞা জারির হুমকি দিয়েছে এবং সেই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নও করেছে। ইতালি অস্ট্রেলিয়ায় কিছু ভ্যাকসিনের রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে।
তবে কিছু কিছু দেশ, যা আশা করা হয়েছিল, তার থেকে অনেক ভালো করছে।
জনগোষ্ঠীর যত মানুষকে ইতোমধ্যেই টিকা দেয়া হয়েছে তার আনুপাতিক হিসাবে ইইউ-র দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো করেছে সার্বিয়া।
তাদের সাফল্যের কারণ আংশিকভাবে টিকাদান কর্মসূচি কার্যকরভাবে সাথে শুরু করা। এছাড়া ভ্যাকসিন কূটিনীতি থেকেও তারা লাভবান হয়েছে। কারণ পূর্ব ইউরোপে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় প্রতিযোগিতায় নেমেছে রাশিয়া আর চীন।
সার্বিয়া পেয়েছে রাশিয়ার স্পুটনিক ভি টিকা, চীনের সিনোফার্ম, আমেরিকা/জার্মানির ফাইজার এবং যুক্তরাজ্যে উদ্ভাবিত অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন।
এ পর্যন্ত সার্বিয়ার বেশিরভাগ মানুষকে দেয়া হয়েছে সিনোফার্মের ভ্যাকসিন।
যেসব দেশ সিনোফার্মের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা জনগণকে দেবে, তারা ভবিষ্যতে বুস্টার ডোজ দিতে চাইলে সেজন্যও তাদের চীনেরই মুখাপেক্ষী হতে হবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতও সিনোফার্ম টিকার ওপর নির্ভরশীল। দেশটিতে যে টিকাদান প্রক্রিয়া চলছে তাতে ফেব্রুয়ারি মাসে ৮০% ডোজই দেয়া হয়েছে সিনোফার্মের টিকা। আমিরাত স্থানীয়ভাবে সিনোফার্ম টিকা উৎপাদনের জন্য ওষুধ কারখানাও গড়ে তুলছে।
"চীন সেখানে উৎপাদন স্থাপনা তৈরি করছে এবং প্রশিক্ষিত কর্মী দেবার কথা বলছে। কাজেই চীন সেখানে দীর্ঘ মেয়াদে একটা প্রভাব রাখছে," বলছেন আগাথ দ্যেমারে। "ফলে ভবিষ্যতে কোনো কিছুর ব্যাপারে চীনকে না করা গ্রহীতা দেশগুলোর সরকারের জন্য খুবই জটিল হয়ে দাঁড়াবে।"
তবে বিশ্বের মহা শক্তিধর একটা দেশ হবার অর্থ এই নয় যে আপনার দেশের জনগোষ্ঠী সবার আগে টিকা পাবে।
ইআইইউ-র গবেষণায় আভাস দেয়া হয়েছে যে, বিশ্বে টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে শক্তিধর দুটি দেশ চীন এবং ভারত ২০২২ সাল শেষের আগে যথেষ্ট সংখ্যায় তাদের জনগোষ্ঠীকে টিকা দিয়ে উঠতে পারবে না। কারণ দুই দেশের জনসংখ্যা বিশাল। ফলে দেশ দুটিকে একদিকে এত মানুষকে টিকা দেবার বিষয়টি এবং অন্যদিকে স্বাস্থ্যকর্মীর ঘাটতি মোকাবেলা করতে হবে।
সূত্র : বিবিসি