চীনের সিনোভ্যাক আশাতীত ভালো ফল দিচ্ছে!
চীনের সিনোভ্যাক আশাতীত ভালো ফল দিচ্ছে! - ছবি : সংগৃহীত
চীনের সিনোভ্যাক টিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল পশ্চিমি দুনিয়া। কারণ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দারুণ কিছু ফল দেখায়নি তা। কিন্তু প্রয়োগের পর একেবারে কিমাশ্চর্যম! আশাতীত ভালো ফল করেছে সিনোভ্যাক। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জার্কার্তায় ২৫,৩৭৪ স্বাস্থ্যকর্মীকে দেয়া হয়েছিল এই চীনা টিকা। প্রথম ডোজের ২৮ দিন পর দেয়া হয় দ্বিতীয় ডোজ।
দেখা গেছে, টিকাপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা ১০০ শতাংশ হারে মৃত্যুর হাত থেকে সুরক্ষিত। হাসপাতালে ভর্তির হার মাত্র ৪ শতাংশ।
এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছেন স্বয়ং স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুনাদি সাদিকিন। তিনি জানালেন ৯৪ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা গেছে। এ এক অসাধারণ ফলাফল, ট্রায়ালে যা ভাবাও যায়নি। সাদিকিনের কথায়, স্বাস্থ্যকর্মীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এবং মৃত্যু একধাক্কায় অনেকখানি কমে গেছে। কোন স্ট্রেনের বিরুদ্ধে সিনোভ্যাক ইন্দোনেশিয়ায় এত ভালো কাজ দিলো তা নিশ্চিত না হলেও, নতুন কোনো ভ্যারিয়্যান্ট নিয়ে চাপে পড়েনি দেশটা।
ট্রায়ালের চেয়ে ভালো ফলাফল করার বিষয়টা দেখা গেছে ব্রাজিলের ক্ষেত্রেও। তবে সিনোভ্যাক টিকার ক্ষেত্রে কোনো এলাকার বাসিন্দাদের গরিষ্ঠ অংশের টিকাকরণ হলে তবেই এই সুফল মেলে, বলছে তথ্য। জাকার্তার মতো ব্রাজিলের যে শহরে সিনোভ্যাক প্রয়োগ করা হয়েছিল সেই সেরানার জনসংখ্যা ৪৫,০০০। ফলে টিকাকরণ করতে বেগ পেতে হয়নি এবং মিলেছে ভালো ফল।
সূত্র : আজকাল
করোনা : চীনের উপহারের টিকা পেল বাংলাদেশ
চীন সরকারের উপহারস্বরূপ চাইনিজ সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের ৫ লাখ ডোজ টিকা পেয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। চীনের বন্ধুত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আরো অধিক পরিমাণে টিকা সহায়তা চেয়েছেন তিনি।
বুধবার বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে চীনের তৈরি করোনার সিনোফার্ম টিকা হস্তান্তর করেন। এর আগে বুধবার সকালেই বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি ফ্লাইটে চীন আনা টিকা বাংলাদেশে পৌঁছায়।
টিকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চীনের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা সবসময়ই বন্ধুপ্রতিম দেশ চীনের সহায়তা পেয়ে এসেছি। তাই চীনের কাছে থেকে আরো অধিক পরিমাণে করোনার টিকা পাওয়ার আশা করছি। আমরা জানি, চীনের সক্ষমতা অনেক বেশি এবং তারা আমাদের সহায়তা করবে।’
এ সময় ড. মোমেন চীনের সক্ষমতা প্রশংসার পাশাপাশি বাংলাদেশে চীনের টিকা উৎপাদনের আহ্বান জানান এবং এতে দুই দেশের লাভবান হবার দিকগুলোও তুলে ধরেন।
চীনের টিকার অনুমোদনের বিলম্বের কারণ ব্যাখা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,‘আমরা কিছু নিয়ম মেনে চলি। আগে চীনের তৈরি ভ্যাকসিনর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন ছিল না, তাই আমরা জনস্বাস্থ্য নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ছিলাম। এই কারণে চীনের টিকা অনুমোদনে দেরি হয়েছে। বর্তমানের চীনের টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত।’
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিগত বছরগুলোতে চীন-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত রাখা আশা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বন্ধু রাষ্ট্র চীনের উপহার পেয়ে ধন্যবাদ জানান। চীন থেকে অধিক পরিমাণে টিকা ক্রয়ের বাংলাদেশের আগ্রহের কথাও উল্লেখ করেন।
টিকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে চীনের পক্ষে উপস্থিত থাকা চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আজ বিশ্ব নার্স দিবসের এই দিনটিতে বাংলাদেশকে টিকা উপহার দিতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত। এই পদক্ষেপের মাধ্যমেই চীন সরকার করোনা ভ্যাকসিনকে বিশ্ব নাগরিকদের সহজলভ্য পণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ধাপে এগিয়ে গেল।’
নিজেদের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিকা ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও চীন বাংলাদেশের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে ঈদ উপহার হিসেবে ৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠায়।
চীন এ পর্যন্ত প্রায় ৮০টি উন্নয়নশীল দেশকে ভ্যাকসিন সহায়তা দিয়েছে।
সূত্র : ইউএনবি