অনন্য রেকর্ড গড়ল পাকিস্তান
অনন্য রেকর্ড গড়ল পাকিস্তান - ছবি : সংগৃহীত
দেয়াল লেখা আগেই হয়ে গিয়েছিল, ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ইনিংস ও ১৪৭ রানে ম্যাচ জিতে নিলো পাকিস্তান দল। ফলে খুব সহজেই ঘরের মাঠে ২-০ তে ব্রেন্ডন টেলরদের চুনকাম সম্পূর্ণ হল।
পাকিস্তানের ৫১০ রানের জবাবে মাত্র ১৩২ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস। তাই ৩৫০ রানেরও অধিক লিড হাতে থাকায় টেলরদের ফলোঅনে আবারো ব্যাট করার আহ্বান জানান বাবর আজম। কাজটা বরাবরাই কঠিন ছিল। জয় তো দূর, ম্যাচ ড্র করার মতোও অবস্থায় ছিলেন না টেলররা। দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রতিরোধ দীর্ঘস্থায়ী হল না। চুড়ান্ত ব্যর্থ হয়ে মাত্র ৬৮ ওভারেই গুটিয়ে গেল জিম্বাবোয়ে ইনিংস।
ম্যাচের প্রথম দিন থেকেই রেকর্ড ভাঙা গড়ার খেলায় মেতেছিলেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। শেষ দিনে এসেও একই রীতি বজায় থাকল। আবারো এক অনন্য নজির গড়ল পাকিস্তান দল। নিজেদের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবার পাকিস্তানের হয়ে বিপক্ষ দলের ১০ উইকেটই তুলে নিল বাঁ-হাতি বোলাররা।
দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইন আপে ধস নামানোর কাজটি করেন শাহিন আফ্রিদি ও নোমান আলি মিলে। পেস ও স্পিনের এই যুগলবন্দিতেই লজ্জার হার সুনিশ্চিত হয় টেলরদের। দুজনেই পাঁচটি করে উইকেট নিজের নামে করেন।
ক্রিজে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে স্ট্যাম্প আউট!
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো দূরের কথা, ঘরোয়া ক্রিকেটেও কখনো সেঞ্চুরি করেননি এমন কোনো ব্যাটসম্যান টেস্ট সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকলে অবধারিতভাবে সতর্ক দেখাবে তাকে। তবে নোমান আলি বিশেষজ্ঞ বোলার হওয়াতেই বোধহয় টেস্ট সেঞ্চুরির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেননি। নাহলে ব্যক্তিগত ৯৭ রানের মাথায় দাঁড়িয়ে এমন অসতর্কতার মাশুল দিতে হতো না তাকে।
জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে হারারের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ৫১০ রান তুলে ডিক্লেয়ার করে দেয় পাকিস্তান। আবিদ আলি কেরিয়ারের সেরা ২১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। আজহার আলি ১২৬ রান করে আউট হন। তবে সবাইকে চমকে দেন ৯ নম্বরে ব্যাট করতে নামা নোমান আলি।
৯টি চার ও ৫টি ছক্কার সাহায্যে ১০৪ বলে ৯৭ রান করে চিসোরোর বলে স্টাম্প আউট হয়ে ক্রিজ ছাড়েন পাকিস্তানের বাঁ-হাতি স্পিনার। ননোমানের ঝোড়ো ইনিংসের সুবাদেই রানের পাহাড়ে চড়তে সক্ষম হয় পাকিস্তান। তবে স্কোরবোর্ড দেখে বোঝার উপায় নেই ঠিক কীভাবে আউট হয়েছিলেন নোমান।
আসলে নোমান ক্রিজে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে স্টাম্প-আউট হয়েছেন বললে মোটেও ভুল বলা হয় না। তাও আবার ওয়াইড বলে। ১৪৮তম ওভারে চিসোরোর ওয়াইড বলে ব্যাট লাগানোর চেষ্টা করেন নোমান। বল ব্যাটে না লাগায় চলে যায় উইকেটকিপারের দস্তানায়। সব উইকেটকিপারকেই অভ্যাসবশত বল ধরে মাঝে মধ্যেই স্টাম্প ভেঙে দিতে দেখা যায়। এক্ষেত্রেও চাকাবভা সে রকম ঢংয়েই স্ট্যাম্প ভেঙে দেন।
তবে ব্যাটসম্যান নোমান যেহেতু বল তাড়া করে অফ-সাইডে অনেকটা ঝুঁকেছিলেন, তাই শট খেলার পর ডান পায়ে ভর দিয়ে পিছনে সরে আসতে হয় তাকে। বাঁ-হাতি নোমানের বাঁ-পা ক্রিজের অনেকটা ভিতরে থাকলেও ডান পা ছিল ক্রিজের বাইরে। তাই ডান পায়ে ভর দিয়ে বাঁ-পা হাওয়ায় ভাসা মাত্রই উইকেটকিপার স্ট্যাম্প ভেঙে দেন। তৃতীয় আম্পায়ার টেলিভিশন রিপ্লে দেখে নোমানকে আউট ঘোষণা করেন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস