ইসরাইলের সাথে কেন সম্পর্ক জোরদার করছে সিঙ্গাপুর
ইসরাইলের সাথে কেন সম্পর্ক জোরদার করছে সিঙ্গাপুর - ছবি : সংগৃহীত
নব্য স্বাধীন সিঙ্গাপুরের জন্য যেন বেঁচে থাকাই বড় সমস্যা হয়ে ওঠে। ১৯৬৫ সালে মালয়েশিয়া থেকে স্বাধীন হওয়ার পর অর্থনৈতিক ভিত্তি হারিয়ে ফেলে সিঙ্গাপুর। অনেকে বলেন, দরিদ্র ও অনুন্নত বলে মালয়েশিয়া সাথে রাখতে চায়নি। ইন্দোনেশিয়ার সুকর্নো তখনো নব্য কলোনিবাদীদের সাথে যুদ্ধই করছিলেন। এসব পারিপার্শ্বিকতা সিঙ্গাপুরের বেড়ে ওঠার অনুকূল ছিল না।
সিঙ্গাপুরের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লি সিন লুং, যিনি ২০০৪ থেকে ক্ষমতায় আছেন, নেতানিয়াহুর আমন্ত্রণে তেলআবিব যান। মূলত দুদেশের নিবিড় সম্পর্ক ৫০ বছরের মাইলফলক অতিক্রম করায় এই সফর। লায়ন সিটি সিঙ্গাপুর ও ইহুদি রাষ্ট্রের সম্পর্ক ১৯৬৯ সালে তাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার আগে থেকে। এটি আমরা অনেকে খেয়াল রাখি না।
তখন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পিতা লি কুয়ান ইয়ু মালয়েশিয়া ফেডারেশন থেকে বের হয়ে সিঙ্গাপুরে পৃথক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করেন। তখন তার সেনাবাহিনী বলতে ছিল দুটি পদাতিক রেজিমেন্ট, সেনাপতি ছিলেন একজন ব্রিটিশ অফিসার, দুই তৃতীয়াংশ ছিল বিদেশী সৈনিক, অনেকটা ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসরাইল রাষ্ট্রের মতো। সিঙ্গাপুর নিজের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য ডিফেন্স সেক্টর সুদৃঢ় করার সিদ্ধান্ত নেয়।
মি: লি কুয়ান প্রথমে হড়হ-ধষরমহবফ ভাবধারার মিসর ও ভারতের দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং গোপনে ইসরাইলি মিলিটারি অ্যাডভাইজারদের আমন্ত্রণ জানান। এদের মধ্যে জেনারেল রেহাভান জেভী, কর্নেল ইয়াকুভ ইলেজারী, কর্নেল ইয়াহুদা গোলানসহ আরো অনেক অফিসার ছিলেন যাদের সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ মেক্সিকান ব্যবসায়ী পরিচিতিতে দেশে রাখেন। তাদের গতিবিধি ও জনসমক্ষে বের হওয়া গোপন রাখা হয়। এরাই সিঙ্গাপুর মিলিটারিকে তৈরি করতে থাকে। প্রতিষ্ঠিত হয় নতুন মিলিটারি ডকট্রিন : ব্রাউন বুক।
সিঙ্গাপুর সেনাবাহিনীকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মতো করে তৈরি করা হয়েছে, প্রশিক্ষণ ও আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুর মুসলিম দেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত ও অনিরাপদ। এজন্য শক্ত সেনাবাহিনী গড়ে তোলা হয়েছে, ইসরাইলের মতো।’ ইসরাইলের নিরাপত্তা ও ইন্টেলিজেন্স বিশেষজ্ঞ ইউসি ম্যালমেন এ কথা বলেন।
সিঙ্গাপুরিয়ানদের, চাই তারা চীনা, মালয়ী বা ভারতীয় বংশোদ্ভূত সংখ্যালঘু হোক না কেন দু’বছরের মিলিটারি সার্ভিস ও রিজার্ভ ডিউটিতে থাকতে হয়। এটি বছরে ৪০ দিন পর্যন্ত হতে পারে। ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত এই নিয়ম চালু থাকে।
বর্তমানে সিঙ্গাপুরের সেনাবাহিনীকে দক্ষিণ এশিয়ার শক্তিশালী সেনাবাহিনী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই সেনাবাহিনী ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত একই অস্ত্র ব্যবহার করে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাজার হাজার রিজার্ভ সেনা একত্র করতে পারে। এখন শহর স্টেট থেকে আস্তে আস্তে ইসরাইলি মিলিটারি পরামর্শকরা দেশত্যাগ করলেও উভয় দেশের মধ্যে ডিফেন্স টেকনোলজি ও শিল্প সবার অলক্ষ্যে অনেক উন্নতি লাভ করেছে। সিঙ্গাপুর এখন ইসরাইলের আধুনিক অস্ত্রের ও মিলিটারি শিল্পের বড় গ্রাহক। মূলত গত ৪০ বছরে সতর্কতার সাথে গোপনে সিঙ্গাপুরকে সামরিকীকরণ করা হয়েছে।
‘ইসরাইলে উৎপাদিত প্রায় সব ধরনের অস্ত্র সিঙ্গাপুরে আছে। অনেক অস্ত্রের প্রটোটাইপ তৈরির জন্য সিঙ্গাপুর অর্থায়ন করে থাকে। পরে লাইসেন্সের ভিত্তিতে সিঙ্গাপুর ওই অস্ত্র উৎপাদন করতে পারবে।’ ম্যালমেন এই তথ্য জানান।
দু’দেশের মধ্যে অস্ত্র চুক্তি বিশ্লেষণে দেখা যায়, এসব অস্ত্রের মধ্যে ট্যাংক, আকাশ থেকে ভূমিতে আক্রমণযোগ্য বারাক মিসাইল, হারমেস ড্রোন সিস্টেম, সর্বশেষ ইসরাইলি প্রযুক্তির ইলেকট্রনিক ডিভাইসসমৃদ্ধ ফাইটার জেট ও যুদ্ধ জাহাজ রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দুদেশের মধ্যে সামরিক ইন্টেলিজেন্স তথ্য আদান প্রদান ও সহযোগিতা বাড়ানো হয়েছে। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে জামিয়া ইসলামিয়ার উত্থান। এই দল বালিতে ২০০২ সালে বোমাবর্ষণ করেছিল এবং ২০০৩ সালে জাকার্তার ম্যারিয়ট হোটেলে বোমা হামলা চালায়। তা ছাড়া আলকায়দা ও তার অঙ্গ সংগঠন হিজবুল্লাহ সমর্থিত নেটওয়ার্ক দমন করার জন্য ইসরাইল সিঙ্গাপুরকে একটি সামরিক হাব হিসেবে ব্যবহার করছে। ২০১৪ সালে ইসরাইল মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রি সিঙ্গাপুরে সুপার হিরন ড্রোনের এয়ার শো করে। ইসরাইলের অ্যারো স্পেস ইন্ডাস্ট্রি এই সুপার ড্রোন বানায়। এই শোতে ইসরাইল প্রথম ‘আয়রন বীম’ প্রতিরক্ষা শিল্ড প্রদর্শন করে। বলা হয়, বিশ্বে সারা জাগানো আয়রন ডোমের কার্যকারিতার পর এই বীম বিশ্ববাসীকে দেখানো হলো। এই বীমের সহায়তায় মর্টার, মিসাইল বা স্বল্প দূরত্ব থেকে লেজার গাইডেড মিসাইল ছোড়া হলে তা ইন্টারসেপ্ট করা যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, উন্নত ড্রোন টেকনোলজিও সিংহ-শহরটি পেয়ে যাচ্ছে। এতসব ছাড়াও ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট রিভলিন সিঙ্গাপুরে গিয়ে প্রয়াত প্রিমিয়ারকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান, যিনি ৯১ বছরে ২০১৬ সালের মার্চে মৃত্যুবরণ করেন।
১ এপ্রিলের ২০২১, সিঙ্গাপুরে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত সাগি কার্নি মিডিয়ায় বলেন, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় মুসলিম দেশসমূহ বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার ইসরাইলের সাথে ‘ভৎঁরঃভঁষ ৎবষধঃরড়হং’ সম্পর্ক রয়েছে বহু বছর ধরে। তিনি বেশ জোর দিয়ে কথা বলেছেন এজন্য যে, ইসরাইলের সাথে আরো মুসলিম দেশ আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদান এর মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে। এই মুহূর্তে ইন্দোনেশিয়া বা মালয়েশিয়ার সাথে ইসরাইলের সরকারিভাবে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। রাষ্ট্রদূত কার্নি বলেন, তেলআবিবের প্রতি মুসলিম দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তিত হচ্ছে। তেল আবিব বিষয়টিকে সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করতে কাজ করতে পারে। উল্লিখিত দুটি মুসলিম দেশের কোনোটিই ঢাকঢোল পিটিয়ে তেল আবিবের সাথে সম্পর্ক চাউর করতে চায় না।
তাহলে ফ্রুটফুল রিলেশন বলতে মি. কার্নি কী বুঝাতে চেয়েছেন? আলোচনাকালে তিনি আরো জানিয়েছিলেন, মালয়েশিয়ার সাথে তেল আবিবের কোনো বিরোধ নেই, তেমনি ইন্দোনেশিয়ার সাথেও কোনো বিরোধিতা নেই। সবার সাথে ইসরাইল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায়। তবে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইলে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াকে এগিয়ে আসতে হবে। কার্নি বলেন, ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক করার জন্য আমরা কাউকে জোর করতে পারি না।’ স্মরণ করা যেতে পারে নেতানিয়াহু ২০১৬ সালে ইন্দোনেশিয়াকে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বলেন। ইন্দোনেশিয়া জানিয়ে দেয়, যদি ফিলিস্তিনিদের পৃথক রাষ্ট্র গঠন করা না হয় তবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা যাবে না। হাজার মাইল দূরে থাকলেও ইসরাইল ইন্দোনেশিয়ার ইসলামী জাগরণকে ভয় করে। এ থেকে সিঙ্গাপুরকে সামরিক শক্তিধর হাব হিসাবে গড়ে তোলার কারণটা আঁচ করা যায়। সম্প্রতি চারটি মুসলিম দেশ সম্পর্ক স্বাভাবিক করলেও ইন্দোনেশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হবে না মর্মে জানিয়ে দেয়া হয়।
তেমনি মালয়েশিয়াও ফিলিস্তিনিদের অধিকারের শর্ত জুড়ে দেয়। কোনো গোপন চুক্তি ইসরাইল করছে না। তেল আবিব মুসলিম বিশ্বের সাথে পেরাডম সিফট করতে চায়। কার্নি এমনই মনে করেন। ইসরাইল এখন বলছে, বন্ধুত্ব ও শান্তি চুক্তির ধরন এখন বদল করা হয়েছে, ‘শান্তির বদলে শান্তি, বাণিজ্যের বদলে বাণিজ্য, যোগাযোগের বদলে যোগাযোগ, পর্যটনের বদলে পর্যটন’। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা অনেক চুক্তি করেছে এসব চুক্তির বদলে তারা পেয়েছে ‘নির্যাতন’।
ইন্দোনেশিয়া আবরাহাম চুক্তির (আমিরাত-ইসরাইল চুক্তি) আলোকে কোনো চুক্তি করলে প্রথমত নিজ দেশের সব দলের অভিমত-ঐকমত্য চাইবে এবং ফিলিস্তিনি ইস্যুর অনেক খুঁটিনাটির সমাধানও চাইবে। এই দুটিই বড় বাধা।
মালয়েশিয়ার কাছেও কোনো ম্যাজিক ফর্মুলা নেই। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমিরাত স্বাধীন হিসাবে যে কোনো চুক্তি করতে পারে, কিন্তু আমরা চুক্তির আগে ফিলিস্তিনিদের শান্তি ও স্বাধীনতার বিষয়টি দেখব। ইসরাইল ৫০ বছর ধরে সিঙ্গাপুরকে সামরিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এই দুটি দেশের সাথে চুক্তি করতে আরো ৫০ বছর অপেক্ষা করতে হবে না। সময় খুব দ্রুতই অভিষ্টের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, চারটি মুসলিম দেশ ইতোমধ্যে সম্পর্ক করায় ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার জন্য ফিলিস্তিন ইস্যু জোরদার করার বিষয়টি দুর্বল হয়ে পড়বে। ইন্দোনেশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ইউন মাচমুদি এই অভিমত ব্যক্ত করেন। সম্পর্কোন্নয়ন করার বিরুদ্ধে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার ‘রেডিক্যাল’ দল রয়েছে। তারা সরকারকে প্রচ- চাপ দিয়েছে ইসরাইলের সাথে কোন সংযোগ যেন রাখা না হয়। ইসলামী দলগুলোর বিষয়ে সিঙ্গাপুরের নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির থিংক ট্যাংক সৈয়দ হুজায়ফা বিন উসমান আলকাফও সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছেন। ইহুদি পলিটিক্যাল স্টাডিজ রিভিউতে গ্রেগ বার্টন ও কলিন রুবেন স্টেন বলেন, ইসলামী দলগুলোর চাপের দিকটি লক্ষ্য করে ইন্দোনেশিয়া সরকার ইসরাইলের সাথে চুক্তির জন্য উচ্চমূল্য নির্ধারণ করেছে।
এতসব কথা সত্ত্বেও বিভিন্ন সূত্রে পরিবেশিত তথ্যে জানা যাচ্ছে, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার সাথে ইসরাইলের গোপন সম্পর্ক রয়েছে। দশক ধরে দুটি দেশে ইসরাইলি উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা ভিজিট করছেন। ইন্দোনেশিয়া ও ইসরাইলের সাথে ভিন্ন দেশের মাধ্যমে বাণিজ্য চলমান রয়েছে যা ২০১৩ সালে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ছিল। ২০০৯ সাল থেকে তেল আবিবে ইন্দোনেশিয়া-ইসরাইল ইকোনোমিক কাউন্সিল অফিস কাজ করছে।
মালয়েশিয়ার চিত্রও কোনো ভিন্ন নয়। ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক চলমান, উভয় দেশের মধ্যে ১.৫ বিলিয়ন ডলারের ট্রেড ভলিউম। ইসরাইল থেকেই বেশি পণ্য মালয়েশিয়ায় রফতানি হয়েছে যদিও বিগত চার বছরে ট্রেড ভলিউম উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমে যায়। গত বছর তেল আবিব মাত্র ৬.৮১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করে। ইন্দোনেশিয়ার মতো মালয়েশিয়াও ইসরাইলের সাথে বাণিজ্যের জন্য তৃতীয় দেশ ব্যবহার করে। তৃতীয় দেশ সংযুক্ত থাকায় ট্রেড ভলিউম যথাযথ থাকে না। তথ্যের জন্য ইসরাইলের ফরেন ট্রেড পরিসংখ্যানের দ্বারস্থ হতে হয়। টাইমস অব ইসরাইল অবশ্য এসব তথ্যাদি প্রচার করে থাকে। তৃতীয় দেশের কথা বলা হলেও মূলত সিঙ্গাপুরের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালিত হয়। একসময় সিঙ্গাপুরে কিছুই ছিল না, খাওয়ার পানি পর্যন্ত মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা হতো। এখন অবস্থা বিপরীত।
সিঙ্গাপুর ও ইসরাইল দুটি সহযোগী দেশ হিসাবে পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও কূটনৈতিক সম্পর্কের গোল্ডেন জুবলী পালন করেছে বেশ কিছু দিন হলো। (২০১৯ সালে ৫০ বছর পূর্তি হয়।) ইসরাইলি বিশ্লেষকরা বলছেন, জন্মলগ্ন থেকেই দুটি দেশের আর্থ-সামাজিক ও নিরাপত্তা ইস্যুর মধ্যে প্রচুর মিল রয়েছে। দুটি দেশ তাই পার্টনারশিপের আলোকে উন্নয়ন করছে। ইসরাইলের হাতে এসব বিষয় ছাড়াও কূটনীতি ও রাজনৈতিক ইস্যু কাজ করেছে। যেখানে চর্চিত হয় সেখানে মোসাদ কর্মকান্ড বিস্তার করে। মুসলিম বিশ্বের ও বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে তা সহজে বোধগম্য হবে। প্রতিষ্ঠাতা প্রধানমন্ত্রী মি: ইউর আত্মজীবনী ‘ফ্রম থার্ড ওয়ার্ল্ড টু ফাস্ট : দি সিঙ্গাপুর স্টোরি ১৯৬৫-২০০০’ প্রকাশিত হলে ৩০ বছরের অনেক গোপন তথ্য বিশ্ববাসীর কাছে প্রকাশিত হয়। প্রয়াত ইসরাইলী সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াকুব আলাজারির নেতৃত্বে গোপন মিলিটারি মিশন সিঙ্গাপুর সেনাবাহিনীকে উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরণ করা হয় মর্মে তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘নট বর্ন ইন সিঙ্গাপুর : ফিফটি পারসোনালিটিইস হু সেভড দি ওয়ার্ল্ড’-এ অনেক রোমাঞ্চকর তথ্য-উপাত্ত প্রকাশিত হয়। সিঙ্গাপুরের সাথে পড়শি কোনো দেশের বড় কোনো বিরোধ নেই। তার পরও বছরের পর বছর কেন এই সামরিকীকরণ তা নিয়ে অনেক বিশ্লেষক দক্ষিণ এশিয়ায় অশনি সংকেত দেখতে পাচ্ছেন।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার