মমতার সমালোচনা করে বিপদে কঙ্গনা
মমতার সমালোচনা করে বিপদে কঙ্গনা - ছবি : সংগৃহীত
কঙ্গনা রানাওয়াতের নাম বিতর্কে জড়ানোটা নতুন কোনো ঘটনা নয়, এবার পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত টুইটের জেরে আইনি জটে বলিউডের ‘কন্ট্রোভার্সি কুইন’। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভরাডুবির পর থেকেই কঙ্গনার টুইটারের দেয়াল জুড়ে শুধুই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের তরজা। আর সেখানেই তিনি উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ, শুধু তাই নয় বাঙালি জাতিকেও অপমান করেছেন। এর জেরেই এবার কঙ্গনার নামে কলকাতা পুলিশের দ্বারস্থ হাইকোর্টের আইনজীবী সুমিত চৌধুরী। ই-মেইল মারফত কঙ্গনার নামে মামলা দায়ের করেছেন তিনি।
সুমিত চৌধুরীর স্পষ্ট অভিযোগ, কঙ্গনা পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা নষ্ট করতে চাইছেন। তিনি বলেন, ২ মে কঙ্গনা যে তিনটি টুইট করেছেন তা পশ্চিমবঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গবাসীর অপমান। তিনি লিখিতভাবে কলকাতা পুলিশকে জানান, ‘বিজেপির পক্ষ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অশান্তি ছড়াতে চাইছেন কঙ্গনা। পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলার ভারসাম্য নষ্ট করতে চাইছেন এই অভিনেত্রী। এনআরসি ও সিএএ-র সমর্থনে কথা বলে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন’। ই-মেইল মারফত পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন আইনজীবী।
২১৩টি বিধায়ক নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মসনদে বসছেন মমতা, অথচ তাকে ‘দানব’, ‘ভিলেন’ বলে আক্রমণ করেন কঙ্গনা। পশ্চিমবঙ্গ শিগগিরই কাশ্মীরে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করে লেখেন- 'বাংলাদেশী আর রোহিঙ্গারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সবচেয়ে বড় শক্তি… যা ট্রেন্ড দেখছি তাতে বাংলায় আর হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ নেই এবং তথ্য অনুযায়ী গোটা ভারতের অন্য এলাকার তুলনায় বাংলার মুসলিমরা সবচেয়ে গরিব আর বঞ্চিত। ভাল আরেকটা কাশ্মীর তৈরি হচ্ছে'।
অপর এক টুইটে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের অস্তিত্ব সংকটের কথা জানান কঙ্গনা। এরপরেও থেমে থাকেননি তিনি, ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ এনে বিজেপি এমপি স্বপন দাশগুপ্তর এক টুইটের প্রেক্ষিতে তিনি সরাসরি হিংসায় প্ররোচনা দিয়ে বসেন, দাবি জানান রাষ্ট্রপতি শাসনের। সোমবার রাতে, টুইটারের দেয়ালে লেখেন- ‘এটা ভয়ঙ্কর... গুন্ডাগিরি মেরে ফেলার জন্য আমাদের সুপার গুন্ডাগিরির প্রয়োজন... তিনি (মমতা) শেকলহীন দানবের মতো, তাঁকে দমন করার জন্য দয়া করে ২০০০ সালের প্রথম দিকের বিরাট রূপটা দেখান মোদিজী... #PresidentRuleInBengal’।
এই বিতর্কিত টুইটের জেরে ইতিমধ্যেই টুইটার কর্তৃপক্ষ কঙ্গনা রানাওয়াতের অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করেছে।
দুই সভা রাহুলের, ২ কেন্দ্রেই জামানত জব্দ কংগ্রেসের, একই হাল ৮৫ শতাংশ আসনে
পশ্চিমবঙ্গে এসে প্রচার চালালেও ন্যূনত গড় রক্ষায় ব্যর্থ হলেন রাহুল। আসনের বিচারে এই রাজ্য থেকে নিশ্চিহ্নই হয়ে গেল কংগ্রেস। এমনকী, নিজের গড়ও ধরে রাখতে পারেননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও। বাম-আইএসএফের সঙ্গে জোট বাঁধলেও কংগ্রেসের প্রাপ্তির ভাঁড়ার শূন্য।
ফলে, তাদের জন্য সামনে আরো বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। কারণ, সংযুক্ত মোর্চা যেখানে যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, তার মধ্যে থেকে ৮৫ শতাংশ জায়গাতেই কংগ্রেস প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে চলেছে। এর মধ্যেই রয়েছে, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি ও গোয়ালপোখর কেন্দ্র, যেখানে গত ১৪ এপ্রিল খোদ রাহুল গান্ধী এসে দলের হয়ে প্রচার সেরে গিয়েছিলেন।
ভোটের শুরু থেকেই আইএসএফের সংযুক্ত মোর্চায় অন্তর্ভুক্তি নিয়ে অস্বস্তিতে ছিল কংগ্রেস। এমনকী, ব্রিগেড সভায় আব্বাসকে ঘিরে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল, তাতে ঘোর আপত্তি ছিল কংগ্রেসের। সেজন্য সেদিন প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করে ফেলেছিলেন অধীরবাবু। তার সত্ত্বেও কংগ্রেসকে টপকে একটি আসন পেয়ে গিয়েছে আব্বাস সিদ্দিকির দল। শুধু তাই নয়, হাড়োয়া, বসিরহাট উত্তর, দেগঙ্গা ও ক্যানিং পূর্বে বিজেপিকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে তারা।
জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার বিষয়টা ঠিক কি?
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মনোনয়ন জমা দেয়ার সময় প্রার্থীদের যে অঙ্কের টাকা কমিশনের ঘরে জমা দিতে হয়, মূলত তাকেই জামানত বলা হয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রার্থী যদি তার কেন্দ্র থেকে ন্যূনতম ১৬.৫ শতাংশ ভোট না পান তাহলে, ওই টাকা কমিশনের ঘর থেকে আর ফেরত পাবেন না ওই প্রার্থী।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস