মোদির ওপর যে ঝড় বইয়ে দিলেন মমতা
মোদি ও মমতা - ছবি : সংগৃহীত
মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাফল্যকে ৫০ ভাগ নিচে নামিয়ে আনা কী বার্তা দিলো মোদি-শাহ’র বিজেপিকে? পশ্চিমবঙ্গে হ্যাটট্রিক বিজয়ের নায়িকা মমতা ব্যানার্জি নিজের আসন জেতার প্রতি মনোযোগ না দিয়ে তার দলের জন্য ভাঙ্গা পায়ে অবিরাম প্রচারাভিযান চালিয়ে অবিস্মরণীয় এক জয় এনে দিয়েছেন। এই জয় নিছক মোদি-শাহ’র জন্য একটি রাজ্য জয়ের স্বপ্নকে গুঁড়িয়ে দেয়া নয়, এটি সঙ্ঘ পরিবার ও বিজেপির যে ডকট্রিনাল লক্ষ্য তার ওপরও অনেক বড় আঘাত। এটি একটি আঞ্চলিক বিজয় কিন্তু সর্বভারতীয় রাজনীতিতে সৃষ্টি করেছে বিরাট ভূ-কম্পন।
সুধেন্দ্র কুলকারনীর মতো বিশ্লেষকও বলছেন, বিজেপির জন্য এই ফলাফলে শঙ্কা বাজতে শুরু করেছে। যদিও দলটি এই ভেবে সান্ত্বনা পেতে পারে যে আসাম, কেরালা, পুন্ডিচেরি, তামিলনাড়ু ও পশ্চিমবঙ্গ- পাঁচটি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল পাঁচ বছর আগের চেয়ে কমবেশি ভালো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ২০১৬ সালের মাত্র তিনটি আসন থেকে বেড়ে ২০২১ সালের ৮০টির কাছাকাছি এসেছে। কেরালা ও তামিলনাড়ুতে খাতা খোলাটাই ছিল বিজেপির বড় বিষয়। দক্ষিণের এই দুটি রাজ্য থেকে উচ্চপ্রত্যাশা গেরোয়া শিবিরের কোনো সময় ছিল না। পুন্ডিচেরি একটি ক্ষুদ্র কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ায় সেখানকার ভোটাভুটির প্রভাবও কম। আর আসামে জয়ের ধারাই অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু এই পশ্চিমবঙ্গে ২০১৯ সালেও লোকসভায় যে আসন বিজেপি পেয়েছিল ওইসব বিধানসভা আসনে জয় পেলে বিজেপির আসন সংখ্যা ১২১ ছাড়িয়ে যেত। আর বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যের ব্যাপারে যে ডকট্রিন বিজেপির রয়েছে সেটি বাস্তবায়নের জন্য পশ্চিমবঙ্গে জয় করার কোনো বিকল্প ছিল না। আর এই রাজ্যের প্রচারে শুধু নরেন্দ্র মোদিই নন, অমিত শাহ, জেপি নড্ডা, যোগি আদিত্যনাথ থেকে শুরু করে সরকার ও দলের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব লোকই এসেছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে বিজেপি এবং তার দুই শীর্ষ নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উদ্বেগের অনেক বিষয় রয়েছে। বিশেষত, মোদি প্রধানমন্ত্রী হবার পর থেকে বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ সংকটের মুখোমুখি হচ্ছেন। ভারত ও ভারতের বাইরে সবার মধ্যে এই ধারণা তৈরী হয়েছে যে মোদি সরকার কোভিড সঙ্কটকে মোকাবেলায় চরমভাবে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি করে ফেলেছে। পাঁচ রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির গড় হতাশাজনক সাফল্য ছাড়াও করোনা মহামারীর দ্বিতীয় তরঙ্গের মোকাবেলায় তার সুস্পষ্ট ব্যর্থতার সমালোচনার অভূতপূর্ব উত্তাপ অনুভব করতে শুরু করেছেন মোদি-শাহরা।
এই সমালোচনার বেশিরভাগই পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জিকে বিতাড়িত করতে বিজেপির অসাধারণ এক ব্যর্থতার কারণে বাড়ছে। দলের ৩৬ বছরের ইতিহাসে কখনো কোনো একক রাজ্য নির্বাচনে জয়ের জন্য এতটা অর্থ ও শক্তি সম্পদ দিয়ে লড়াই করা হয়নি। মোদি ও শাহ রাজ্যটিতে বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠাকে একটি মর্যাদার বিষয় বানিয়ে ফেলেছিলেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২টির মধ্যে ১৮টি আসন জয়ের সময় বিজেপি ১২১ বিধানসভা কেন্দ্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়েছিল। তারা ভেবেছিল পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনে পরের মেয়াদে জয় অনেকটাই নিশ্চিত। অমিত শাহ বারবার বলছিলেন, বিজেপির আসন সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যাবে। তারা নির্বাচনী যুদ্ধ জয়ের জন্য ইডি, সিবিআই, আয়কর বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, এবং অর্থ বরাদ্দের মতো অস্ত্র যা তাদের হাতে ছিল তার সবটাই কাজে লাগিয়েছেন। যে রাজ্যে এখন পর্যন্ত সমস্ত রাজনৈতিক দলই স্বল্প বাজেটে নির্বাচন করে আসছে সেখানে বিজেপি প্রচারণায় অর্থের বন্যা বইয়ে দিয়েছে।
তারা নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে প্রায় দু’মাস ব্যাপী আট দফায় নির্বাচন করে। করোনা পরিস্থিতির কারণে শেষ তিন ধাপের নির্বাচন একবারে করার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতার মানবিক আবেদনও উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ তামিলনাড়ুতে এক দিনেই ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে লম্বা সময় নিয়ে নির্বাচন করা হয়েছে যাতে বিজেপির শীর্ষ দুই নেতা প্রচারের সর্বোচ্চ সময় পেতে পারেন। এটি দেখে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক কাউকে কাউকে ব্যঙ্গাত্মকভাবে বলতে শোনা গেছে, ‘মোদি ও শাহ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিদিনের যাত্রী হয়ে উঠেছেন’। প্রচারে আরো বেশি বিরক্তিকর বিষয় ছিল মোদি ও শাহের বক্তৃতার বিষয়বস্তু। ‘দিদি ও দিদি’ টানটান করে উচ্চারণ করে দেয়া ভাষণ মোদির প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মোটেই মানানসই ছিল না। বেশিরভাগ সাধারণ ও অভিজাত বাঙালি এটিকে একজন নারীর প্রতি অবমাননা হিসেবে দেখেন।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পরাজয় মোদির জন্য বিশেষভাবে উদ্বেগজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে এই কারণে যে দল তাকে এই রাজ্যে মমতা ব্যানার্জির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে এনেছিলেন। মোদির ‘জনপ্রিয়তা’ সম্পর্কে এই মিথ পশ্চিমবঙ্গে ব্যর্থ হওয়ার একইসাথে তার নেতৃত্বের করোনাভাইরাসে ব্যাপক মৃত্যু ও যন্ত্রণা রোধ করতে ব্যর্থতা বাড়তি বিপদ হয়ে দেখা দিয়েছে।
বিজেপির রাজনীতির মূল অস্ত্র হিসাবে নির্বাচনে দীর্ঘ দিন ধরে ধর্মীয় লাইনে মেরুকরণকে কৌশল হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। পশ্চিমবঙ্গের প্রচারেও ধর্মীয় মেরুকরণ কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। বিজেপি তৃণমূলকে ‘মুসলিম তুষ্টির’ জন্য অভিযুক্ত করে প্রচার চালায় এবং ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানকে প্রায় একটি রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করে। দেখা যায় সৃষ্ট মেরুকরণ যতটা না একটি পক্ষকে উদ্দীপ্ত করে, তার চেয়ে বেশি আতঙ্কিত করে তোলে অন্য পক্ষকে। মুসলিমরা বেশির ভাগ তৃণমূলকে সমর্থন করলেও একটি বড় অংশ আগে কংগ্রেস ও বামফ্রন্টকে সমর্থন করতে দেখা গেছে। এবার বিজেপির উগ্র প্রচার অভিযান এবং এনআরসি করে বিপুলসংখ্যক মুসলিমকে অনাগরিক করার ঘোষণায় আতঙ্কিত হয়ে মুসলিম সম্প্রদায় কংগ্রেস ও বামদের শক্ত ঘাঁটিতেও তৃণমূলকে সমর্থন দিয়েছে।
অন্যদিকে, বিজেপি ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গকে জয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করে। এ জন্য পশ্চিমবঙ্গের আসনে আসনে রথযাত্রা করেও হিন্দুদের উগ্র হিন্দুত্ববাদে উদ্বুদ্ধ করা যায়নি। প্রফেসর অমর্ত্য সেনের মতো মানুষ পশ্চিমবঙ্গের লোকজনকে সেক্যুলার ও উদারপন্থীদের সমর্থন জানানোর আহবান জানিয়েছেন। এতে পশ্চিমবঙ্গের উদারপন্থী সেক্যুলার ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিরাট অংশ তৃণমূলের ঘাসফুলে ভোট দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ অন্য দলের নেতাদের বাগিয়ে এনে বিজেপির বাজিমাৎ করার প্রচেষ্টা এবং এ ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহারকে ভালোভাবে নেয়নি।
নরেন্দ্র মোদির পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে বাংলাদেশকে ব্যবহারের বিষয়টিও সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশে মোদি দুই মথুয়া মন্দিরে হাজিরা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের তিন কোটি মথুয়ার সমর্থন পেতে চেয়েছিলেন বলে উল্লেখ করা হয় এই রাজ্যের মূল ধারার মিডিয়ায়। মমতা নিজেই নির্বাচন কমিশনের কাছে এ ব্যাপারে বিধি ভঙ্গের অভিযোগ আনেন মোদির বিরুদ্ধে। মমতা এমন কথাও বলেছেন বাংলাদেশে গিয়ে মোদি দাঙ্গা বাঁধিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশে তার সফরকে কেন্দ্র করে ১৫ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
মোদির সফরের বিরোধিতা করার কারণে তার সফরের পর পরই বাংলাদেশে হেফাজতে ইসলাম এবং মাদরাসাগুলোর উপর যে দমনপীড়ন নেমে এসেছে সেটাকে মোদির পক্ষ থেকে সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থার চাপেই ঘটছে বলে মনে করা হয়। একইসাথে আসামের মতো পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপি ক্ষমতায় এলে সব মুসলিম ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার আতঙ্কও তৈরি হয়। কোচবিহার জেলার সিটালকুচিতে ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়া চলাকালে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে চারজন দরিদ্র ভোটার (সবাই মুসলিম) মারা গিয়েছিলেন। তাদের জন্য শোকের পরিবর্তে বিজেপির রাজ্য ইউনিটের প্রবীণ নেতারা বলেছেন, আরো বেশি হত্যা করা উচিত ছিল। দলটির মুসলিম বিরোধী পক্ষপাতিত্ব পুরো প্রচারণা জুড়েই স্পষ্ট ছিল।
এটি অবাক হওয়ার মতো বিষয় নয়, নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার বিজেপির কৌশলটি মূলত ধর্মীয় ভিত্তিতে ভোটারদের মেরুকরণের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। মমতা সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়ে গেরোয়া পার্টির ৭০ শতাংশ বনাম ৩০ শতাংশ গেমের পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে বলে বেড়ান। অর্থাৎ ৭০ শতাংশ হিন্দু ভোট এক হলে ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট অকার্যকর হয়ে যাবে। কথায় কথায় তিনি ‘বেগম মমতা’ বলে তাদের দলের হিন্দু সমর্থকদের চোখে মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করার চেষ্টা করেন। সাধারণভাবে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু ও মুসলিম উভয় ভোটাররা এই বিভাজন কৌশলকে পরাস্ত করেছেন। মমতার নিরবিচ্ছিন্ন প্রচার, তাৎক্ষণিকভাবে ২০১৯ সাল থেকেই তৃণমূলের ভোটের অংশ বৃদ্ধি করার চেষ্টা এবং বিভাজনবিরোধী বক্তব্য পশ্চিম বাংলার উদার হিন্দুরা গ্রহণ করে নিয়েছে। তৃণমূলের ‘গুন্ডাদের’ ২ মের পর জেলে ঢোকানোর নরেন্দ্র মোদির আগাম ঘোষণা তৃণমূল নেতাকর্মীদের আতঙ্কিত করেছে, সেইসাথে নীরবে কাজ করে যেতে তাদের প্ররোচিত করেছে।
প্রকৃতপক্ষে, বিজেপির বিষাক্ত রাজনীতির বিষয়টি তামিলনাড়ু ও কেরালায়ও ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু এটি আসামে কিছুটা কাজ করেছে, সেখানে বিরোধী পক্ষের পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তামিলনাড়ুর এম কে স্টালিন এবং কেরালায় পিনারাই বিজয়নের মতো শক্তিশালী ও ক্যারিশম্যাটিক নেতা ছিলেন না বলে যিনি সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিতে পারেন।
সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের মোদি-শাহ এবং যোগী আদিত্যনাথের এই কার্ড আগামী বছর উত্তরপ্রদেশ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে কতটা কাজে লাগবে তা নিয়েও এখন কিছুটা সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে এ কার্ডটি যদি আরো বেশি সংখ্যক রাজ্যে ভোটারদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হয় এবং যদি বিজেপি বিরোধী দলগুলো এক হয়ে তাদের কাজ শুরু করে তবে একটি বিশ্বাসযোগ্য ঐক্যবদ্ধ বিকল্প প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে আর মমতা ব্যানার্জির কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসাবে আবির্ভূত হতে পারেন। বিজেপির জন্য এ কারণে শঙ্কার জায়গাটি বড় হচ্ছে বলে মনে হয়।
পশ্চিমবঙ্গের বিপর্যয় শুধু মোদির জন্য নয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জন্যও একটি বড় ধাক্কা। তিনি রাজ্যে বিজেপিকে ক্ষমতায় বসাতে বলেন যাতে নির্বিঘ্নে সরস্বতী পূজা এবং কোনো বাধা ছাড়াই তাদের দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন চালাতে পারেন। অথচ পশ্চিমবঙ্গের মানুষ তৃণমূলের আমলে তো নয়ই, বাম ফ্রন্টের আমলেও এ ধরনের কোনো বাধার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেনি।
পশ্চিমবঙ্গের ফলাফলের জাতীয় প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজেপির এক প্রবীণ নেতা বলেন ‘বিপাক্ষ কে স্বর আব উথেঙ্গে’। বিজেপিবিরোধী মমতা ব্যানার্জি, পিনারাই বিজয়ন ও এম কে স্টালিন প্রমুখ নির্বাচিত নেতারা ফেডারেল রাজনীতির শক্তিশালী অংশ হতে পারেন, তারা বিকল্প মঞ্চ বানাতে অন্যদের সাথে ভূমিকা রাখতে পারবেন।
সমাজবাদী পার্টির এক প্রবীণ নেতা বলেছেন, 'এটি আমাদের উত্তরপ্রদেশেও আশা জাগায়, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি পরাজয়ের ফলে কেবল ইউপি নয়, জাতীয়ভাবে বিরোধীদের উপর উদ্দীপক প্রভাব পড়তে পারে। মমতা পুরো বিরোধীদের আশাবাদী করেছেন।' তিনি আরো বলেন, 'পরের বছরের প্রথম দিকে যোগী আদিত্যনাথ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে সমর্থন চাইলে এই ছায়া ছড়িয়ে পড়বে। বিশেষত যখন উত্তর প্রদেশে হাশপাতালের বিছানা, অক্সিজেন এবং ওষুধের ঘাটতিতে কোভিডে সারি সারি মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।'
পশ্চিমবঙ্গের এক প্রবীণ পর্যবেক্ষক বলেন, 'যদি কেউ বাংলার ইতিহাস জানে তবে তাদের এটি জানা উচিত ছিল যে অন্য অনেক জায়গার মতো এই ভূখণ্ডকে সাম্প্রদায়িক লাইনে মেরুকরণ করা যায় না। এস পি মুখার্জি স্বাধীনতা পূর্ব বাংলায় এ কে ফজলুল হক সরকারের অংশ ছিলেন।'
তামিলনাড়ুর স্ট্যালিন অথবা কেরালার বিজয়ন জাতীয় রাজনীতিতে খুব কমই আসেন, অন্য দিকে মমতা ব্যানার্জি প্রায়ই জাতীয় মঞ্চে অংশ নেন, একটি ফেডারেল ফ্রন্টের ধারণা এগিয়ে নেবার চেষ্টা করেন। কংগ্রেস ও ওয়াইএসআরসিপি, টিআরএস ও বিজেডিসহ অন্যান্য আঞ্চলিক দলের সমন্বিত ফেডারেল ফ্রন্টের নেতৃত্বে স্বাগত জানানো হতে পারে মমতাকে। এটিই বিজেপির বড় রকমের এক আশঙ্কা ছিল। আর এ জন্যই দলটির সব নেতা পশ্চিমবঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মমতা হারানোর জন্য।