করোনা : ধূমপান কি প্রতিষেধকের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়?
করোনা : ধূমপান কি প্রতিষেধকের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়? - ছবি : সংগৃহীত
সম্প্রতি কয়েকজন চিকিৎসক উপদেশ দিয়েছেন, করোনাভাইরাসের টিকাকরণের আগে ও পরে যেন ধূমপান না করা হয়। এতে অনেকে যারা নিয়মিত ধূমপান করেন, তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, কোভিডের প্রতিষেধক আদৌ তাদের শরীরে কাজ করবে কি না। কতটা ভয়ের কারণ রয়েছে, জেনে নেয়া যাক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) তরফ থেকে বারবার সতর্ক করা হয়েছে, যারা ধূমপান করেন, তাদের কোভিড হলে, এই রোগের প্রভাব অনেক বেশি গুরুতর হতে পারে। তাই যারা ধূমপান করেন, তাদের টিকাকরণ যাতে আগে করানো হয়, সে কথাও বলা হয়েছে।
নিয়মিত ধূমপান যারা করেন, তাদের ফুসফুস অনেকটাই কমজোরি হয়ে পড়ে। করোনা হলে যেহেতু শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসের সমস্যা দেখা দেয়ার বেশি আশঙ্কা রয়েছে, তাই যাদের ফুসফুস আগে থেকেই কমজোরি, তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা বেশি হতে পারে। এই কারণেই দ্রুত টিকাকরণের উপদেশ দেয়া হয়।
ধূমপান প্রতিষেধকের ক্ষমতা কতটা কম করে দিতে পারে, সেটা বুঝতে গেলে জানা প্রয়োজন প্রতিষেধক কী করে কাজ করে। মৃত বা কমজোরি ভাইরাস থেকে তৈরি হয় প্রতিষেধক যা শরীরে গেলে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা সেটার সঙ্গে লড়াই করা শুরু করে। যে ক্ষমতাটা তৈরি হয়ে থাকল, সেটাই পরবর্তীকালে আসল ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে আরও দ্রুত কাজ শুরু করে দিতে পারে। তাই রোগে আক্রান্ত হলেও তার প্রভাব অনেকটাই কম হবে টিকাকরণ হয়ে গিয়ে থাকলে।
নিময়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার, বেশি করে জল এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম যাদের রুটিনে বহুদিন থেকে বাঁধা, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি তাড়াতাড়ি কাজ করবে এবং তার প্রভাবও শরীরে থাকবে অনেক দিন। কিন্তু যারা ধূমপান বা মদ্যপান করেন, তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার গতি অন্যদের তুলনায় কম হতে পারে। তাই সতর্ক থাকার জন্য বহু চিকিৎসক পরামর্শ দিচ্ছেন, টিকাকরণের কয়েকদিন আগে এবং পরে ধূমপান না করতে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
করোনা সময়ে কেন পর্যাপ্ত পানি পান জরুরি?
পানি পান করা যে দরকার, তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু করোনার এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে পানি পান করার প্রয়োজনীয়তা আরো বেড়ে গেছে। এর অন্যতম কারণ, শরীরকে ডিডাইড্রেড হতে দেয়া যাবে না। আমাদের দেশের মতো আর্দ্র ও গরম শহরে শরীর সহজে ডিহাইড্রেড হয়, পর্যাপ্ত পানি খেলে তা হবে না। অসুস্থতার অন্যতম কারণ শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। দীর্ঘদিন ধরে অভ্যাস না থাকার ফলে পানির অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রেও বেশি পানি খাওয়া দরকার বলে মনে করেন সেলিব্রিটি পুষ্টিবিদ পূজা মাখিজা।
যথাযথ হাইড্রেশন
পর্যাপ্ত পানি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সচল রাখে, যা করোনাভাইরাস ঠেকানোর কাজে সহায়তা করে বিস্তর। কাজেই পানি খেতে হবে শরীরের প্রয়োজন বুঝে। কার কতটুকু পানি প্রয়োজন তা জেনে নিতে হবে পরিবারের চিকিৎসকের থেকে। শরীরের ধরণ, ক্রনিক অসুখ, গঠনপ্রকৃতি, হাড় বা হৃদরোগের সমস্যা ইত্যাদি নানা ফ্যক্টর বুঝে চিকিৎসক ঠিক করে দেবেন, কতটুকু পানি শরীরের প্রয়োজন।
পুষ্টিবিদের মতে, এক একজনের শরীরের অবস্থা ও ধরণ অনুযায়ী পানি খাওয়ার পরিমাণ ঠিক করা উচিত। সাধারণ সুস্থ মানুষ ২.৫-৩ লিটার পানি খেতে পারেন। খুব বেশি ব্যায়াম ও ঘরের কাজে করলে প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষ ৩.৫-৪ লিটার খেতে পারেন। তবে তিন লিটারের বেশি পানি খেলে চিকিৎসকরে পরামর্শ নিয়েই খাওয়া উচিত। কারণ অতিরিক্ত পানি পানের কিছু ক্ষতিকর দিকও আছে। এ ছাড়া কোনো রোগের কারণে যদি পানি কম খাওয়ার নির্দেশ থাকে, যেমন কিডনির অসুখ, হার্ট ফেলিওর ইত্যাদি তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পানি খাওয়া বাড়াবেন না। উল্টে বরং ক্ষতি হয়ে যাবে। তবে শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী পানি খেলে, করোনা ঠেকানো ছাড়া আরো কিছু উপকার মিলবে।
সূত্র : এই সময়