করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর যেসব পরীক্ষা করা দরকার
করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর যেসব পরীক্ষা করা দরকার - ছবি : সংগৃহীত
করোনাভাইরাসে সংক্রমণ এখন পানি-ভাতের মতো হয়ে গেছে। কখন হবে, কার হবে কেউ জানে না। নিয়ম মেনে ঘরে বসে থাকলেই যে পার পাওয়া যাবে, এমনও নয়।
চিকিৎসা নিয়েও প্রচুর বিভ্রান্তি। সরকারি হাসপাতালে সহজে জায়গা পাওয়া যায় না। বেসরকারি হাসপাতালের খরচ বেলাগাম, স্থানও অকুলান। ফলে যাদের রিপোর্ট পজিটিভ কিন্তু উপসর্গ তেমন নেই বা হালকা থেকে মাঝারি উপসর্গ আছে তাদের ঘরেই আর সবার থেকে আলাদা করে আইসোলেশনে থাকতে বলা হচ্ছে। সঙ্গে চলছে চিকিৎসা ও নজরদারি। কিছু কিছু প্রাইভেট হাসপাতাল হোম কেয়ার সার্ভিসের কথা ঘোষণা করলেও, এখন পর্যন্ত যা হচ্ছে সবই প্রায় দূরভাষ মারফত। মানুষ সুস্থও হচ্ছেন তাতে। করোনা থেকে সেরে ওঠার পর আরো ভালো করে রোগীদের যত্ন নিতে হবে বলে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এই সময় কিছু পরীক্ষা করিয়ে নেয়া খুবই ভালো।
পোস্ট কোভিড চেকআপ কেন করা উচিত?
আমাদের ইমিউন সিস্টেমটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কোভিড শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে প্রভাবিত করতে পারে, পোস্ট কোভিড চেকআপ করলে আপনার শরীর কতটা ভালো তা জানা যায়। কোভিড ভাইরাস ফুসফুস-সহ গুরুতর অঙ্গগুলোতে গভীরভাবে প্রভাব ফেলতে পারে তাই পোস্ট-কোভিড পরীক্ষা করিয়ে নেয়া দরকার।
আইজিজি অ্যান্টিবডি টেস্ট
সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার পরে, দেহে সহায়ক অ্যান্টিবডি তৈরি করলে ভবিষ্যতে সংক্রমণ রোধ করে। অ্যান্টিবডিগুলোর মাত্রা নির্ধারণ করলে আপনাকে প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হয়। তবে আপনি যদি প্লাজমা অনুদানের জন্য যোগ্য হন তবে বিশেষত সহায়ক। সাধারণত, অ্যান্টিবডি তৈরি হতে এক সপ্তাহের কাছাকাছি সময় লেগে যায়, তাই কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আপনি যদি প্লাজমা দান করতে চান তাহলে নেগেটিভ হওয়ার এক মাসের মধ্যে এই পরীক্ষা করুন, যা অনুদানের জন্য আদর্শ সময়।
সিবিসি পরীক্ষা করুন
সিবিসি পরীক্ষা হলো একটি মৌলিক পরীক্ষা যা বিভিন্ন ধরণের রক্ত কোষের (আরবিসি, ডাব্লুবিসি, প্লেটলেট ইত্যাদি) পরিমাপ করে। এটি কোভিড সংক্রমণের জন্য ভালো।
গ্লুকোজ, কোলেস্টেরল পরীক্ষা
গ্লুকোজ যখন দেহকোষের মধ্যে ঢোকে তখন সেটা অক্সিডাইজড হয় এবং তার থেকে অডিনোসিন ট্রাই ফসফেট (এটিপি) অর্থাৎ এনার্জি তৈরি হয়। এই এনার্জি থেকেই একটি কোষ তার কাজ করার জন্য পুষ্টি পেয়ে থাকে। এই এনার্জি পাওয়া যায় গ্লুকোজ থেকে। আপনার রক্তের গ্লূকোজের নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করলে দেখা যায় যে জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলি কীভাবে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাকে প্রভাবিত করে। এটি আপনার ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সাহায্য করে।
নিউরো-ফাংশন টেস্ট
করোনা রোগীর নেগেটিভ হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর নিউরো-ফাংশন টেস্ট করা জরুরি। চিকিত্সক ও বিশেষজ্ঞরা নেগেটিভ হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর নিউরো-ফাংশন টেস্ট করতে পরামর্শ দেন।
ভিটামিন ডি টেস্ট
ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ, যা প্রতিরোধক করতে সহায়তা করে। ভিটামিন-ডি অত্যাবশ্যক, তাই করোনামুক্ত হওয়ার পর পরীক্ষা করিয়ে নেয়া জরুরি।
বুকের স্ক্যান
ভাইরাস কতটা ফুসফুসে প্রভাব ফেলেছে তার জন্য স্ক্যান করিয়ে নেয়া জরুরি। যদিও চিকিৎসকরা বলেছেন যে বেশিরভাগ মানুষের ফুসফুস সিওভিডের পরে ভালো হয়ে যায়। যারা ট্রিপল মিউট্যান্ট দ্বারা আক্রান্ত হন তাদের সিটি স্ক্যান এবং ফুসফুস পরীক্ষা করে নেয়া জরুরি।
হার্ট ইমেজিং এবং কার্ডিয়াক স্ক্রিনিং
একটি কোভিড-১৯ সংক্রমণ শরীরে ব্যাপক প্রদাহ সৃষ্টি করে যা হৃৎপিণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ পেশীগুলোকে দুর্বল করে এবং ক্ষতি করে। যার ফলে অনেকেরই পোস্ট-কোভিড সমস্যা দেখা যায়। তাই সঠিকভাবে ইমেজিং স্ক্যান এবং হার্ট ফাংশন টেস্ট করা জরুরি। যেসব রোগীর বুকে করোনামুক্ত হয়ার পরও বুকে ব্যথা হয়, তাদের এই পরীক্ষা করা দরকার।
সূত্র : এই সময়