তারপরও আব্বাস সিদ্দিকিরই বাজিমাত
আইএসএফ প্রধান আব্বাস সিদ্দিকি, ইনসেটে নওশাদ সিদ্দিকি - ছবি : সংগৃহীত
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে হঠাৎ করে ‘উড়ে এসে জুড়ে বসে’ প্রচারের আলো কেড়ে নিয়েছেন এমন কারো নাম বলতে গেলে কার কথা মনে পড়তে পারে?
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিপর্ব থেকে শুরু করে ফল ঘোষণা পর্যন্ত যারা খুঁটিনাটি সব কিছুর উপর নজর রেখেছেন তাদের একাংশের মতে ওই নামটি এ বার হতেই পারে আব্বাস সিদ্দিকি। তৃণমূল বিরোধী, বিজেপি বিরোধী আরো যে একটি শক্তি ছিল এ বার ভোটের লড়াইয়ে ওই সংযুক্ত মোর্চার শরিক ‘ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)’-এর প্রধান। ঘুটিয়ারি শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকির ভাইপো।
তৃণমূলের মুসলিম ভোটে ভাঙন ধরাতে এ বার কিছুটা যেন হঠাৎই কংগ্রেস ও বামপন্থীদের বন্ধু হয়ে ওঠেন আব্বাস। অথবা তাকেই বন্ধু বানিয়ে ফেলেন বামপন্থীরা, কংগ্রেসও! আব্বাস নিজের দলও গড়ে ফেলেন এ বছরের গোড়ায়।
তার পর থেকেই প্রচারের আলো কেড়ে নিতে তার তৎপরতা অনেকেরই নজরে পড়তে শুরু করে। সংযুক্ত মোর্চার দুই বড় শরিক বামপন্থী দলগুলো ও কংগ্রেসকেও অবাক করে দিয়ে গত ২৮ জানুয়ারি বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশে প্রচারের আলো কেড়ে নিয়েছিলেন আব্বাস। মঞ্চে গরম বক্তৃতা দিয়ে আর তার আগে তার বিপুল সংখ্যক অনুগামীদের নিয়ে ব্রিগেডের সভায় পৌঁছে। মঞ্চে তার ভাষণের সময় কিছুটা বিব্রত বোধ করতেও দেখা গিয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে। অথচ আব্বাসকে প্রচারের আলোয় আসার সুযোগ করে দিয়েছিলেন বামপন্থীরা, কংগ্রেসও।
ফল ঘোষণার দিন আরো বেশি প্রচারের আলো কেড়ে নিলেন আব্বাস। তুলনায় বেশি পরিচিত তৃণমূল এবং বিজেপি প্রার্থীদের ভাঙড়ে তার দলের প্রার্থী তার ভাই নওশাদ সিদ্দিকি হারিয়ে দেয়ায়। যেখানে প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হিসাবে লোকসান হয়েছে কংগ্রেস ও বামপন্থীদের, হারানো মুসলিম ভোট তাদের কিছুটা ফিরে পাওয়ারও ইঙ্গিত মেলেনি এ বারের ফলাফলে তখন ভোট-লড়াইয়ে বামপন্থী ও কংগ্রেসের শরিক আব্বাস প্রচারের আলোয় ফের এসে গেলেন ভাঙড়ে বাজিমাত করে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
আব্বাসের রাজনৈতিক জমি বাঁচাল ফুরফুরাই, একমাত্র জয়ী সিদ্দিকি
বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের মুখরক্ষা করল সেই ফুরফুরাই। শূন্য হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়ে মোর্চার একমাত্র প্রার্থী হিসেবে জয় পেলেন আব্বাস সিদ্দিকির ভাই নওশাদ। ভাঙড় কেন্দ্রে ২৬ হাজার ৭৩৬ ভোটে জিতলেন তিনি। সেইসঙ্গে বাংলার ভোটে রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রথম খাতা খুলল আইএসএফ।
আইএসএফের সঙ্গে বাম ও কংগ্রেস জোট করার ব্য়াপারে বিশেষ ভূমিকা ছিল নওশাদের। কিন্তু সেই জোটের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে জয় পেলেন আইএসএফ চেয়ারম্যান নিজে। ভোট গণনার প্রথম দিকে বেশ পিছিয়ে ছিলেন তিনি। তবে বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ভাঙড়ের তৃণমূল গড়ে ভাঙন ধরালেন ফুরফুরার নেতা। তৃণমূল প্রার্থী রেজাউল করিমকে ২৬ হাজার ৭৩৬ ভোটে হারালেন ভাইজানের ভাই।
এদিকে ব্রিগেড ময়দানে গর্জে উঠলেও ভোট বাক্সে বর্ষাতে দেখা গেল না ভাইজান আব্বাস সিদ্দিকির দলকে। তাঁর দল তথা মোর্চার একা সলতে হয়ে জ্বলে রইলেন নওশাদ সিদ্দিকি। অন্যদিকে উনিশের লোকসভা ভোটে শূন্য হাতে ফেরা বামেদের হালেও পরিবর্তন এল না।
ঐশী, মীনাক্ষী, সৃজনদের মতো তরুণ মুখ থেকে শিলিগুড়িতে অশোক-মডেল, একুশে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেল বামেরা। একই হাল কংগ্রেসেরও। একটি আসনও উদ্ধার করতে পারল না তারা। তখন জোটের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে জয় পেলেন নওশাদ।
সূত্র : টিভি৯