কংগ্রেসে ফের প্রশ্নের মুখে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব

অন্য এক দিগন্ত | May 03, 2021 12:53 pm
রাহুল গান্ধী

রাহুল গান্ধী - ছবি : সংগৃহীত

 

আর যেখানে যা-ই হোক, পশ্চিমবঙ্গে অন্তত বিজেপি হারুক!

ভারতের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় কংগ্রেসের অনেক নেতারাই এই মনস্কামনা রোববার পূর্ণ হলো। কিন্তু কেরল-আসামে কংগ্রেসের হার ‘রাহুল গান্ধী অ্যান্ড কোং’-কে নতুন করে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিলো।

প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলের স্বাভাবিক নিয়মেই এবার কেরলে কংগ্রেসের ক্ষমতায় আসার কথা ছিল। তার উপরে রাহুল নিজে এখন কেরলের এমপি। কংগ্রেস নেতৃত্বের আশা ছিল, সিএএ-এনআরসি-র ফলে আসামে তৈরি ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যেও দল ক্ষমতায় ফিরবে। কিন্তু সে আশায় পানি ঢেলে আসামে ফের বিজেপি এবং কেরলে ফের বাম জোট ক্ষমতায় ফিরল। পুদুচেরিতে গত পাঁচ বছর ধরে সরকার চালানোর পরে সেখানেও এন রঙ্গাস্বামীর কংগ্রেস, বিজেপি, এডিএমকে জোটের কাছে হেরে গেল কংগ্রেস। একমাত্র সান্ত্বনা পুরস্কার তামিলনাড়ু।

এই হারের পর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, বিজেপি বিরোধী শিবিরে কংগ্রেস কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়বে। ২০২৪-এ বিরোধী জোট তৈরি হলেও তার রাশ থাকবে আঞ্চলিক নেতানেত্রীদের হাতে। বিশেষ করে মমতা ব্যানার্জি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে আটকে দিয়ে বিরোধী জোটের চালিকাশক্তি হয়ে উঠবেন বলে প্রবীণ-নবীন নেতারা একমত। পি চিদম্বরমের পুত্র কার্তি টুইট করে বলেছেন, রাইসিনা হিলসে যাওয়ার রাস্তা চৌরঙ্গি লেন হয়ে যায়।

রোববার রাহুল গান্ধীসহ কংগ্রেস নেতারা মমতাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। একইসঙ্গে এআইসিসি-র মঞ্চ থেকে দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেছেন, জাতীয় স্তরে বিরোধী জোটের সুদৃঢ় পরিচালনা কংগ্রেসই করতে পারে। সরকারিভাবে এমন দাবি করলেও কংগ্রেস নেতারা বলছেন, রাজ্যে রাজ্যে হয় কংগ্রেস মুছে যাচ্ছে। নয়তো চালকের আসন থেকে নেমে আঞ্চলিক দলের গাড়িতে সওয়ার হতে হচ্ছে। পাঁচ রাজ্যের ফলাফলের পরেই কংগ্রেসের মধ্যে অসম-পশ্চিমবঙ্গে বদরুদ্দিন আজমল, আব্বাস সিদ্দিকিদের সঙ্গে হাত মেলানোর কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সুরজেওয়ালা বলেছেন, ফল বিশ্লেষণের সময় সব কারণই খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতাদের জি-২৩ গোষ্ঠী ফের দাঁত-নখ শানিয়ে রাহুলের বিরুদ্ধে আক্রমণে নামতে পারেন বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

রোববার রাহুল গান্ধী বলেছেন, 'আমরা বিনীত ভাবে মানুষের রায় মেনে নিচ্ছি।' রাহুলের বক্তব্য, কংগ্রেস নিজের আদর্শ ও মূল্যবোধের জন্য লড়াই চালাবে। রাহুলের অনুগামীরা মনে করছিলেন, আসাম-কেরল-তামিলনাড়ুতে জয়ের মঞ্চকে কাজে লাগিয়েই তাকে ফের কংগ্রেস সভাপতি পদে ফেরানো হবে। কিন্তু এ বার রাহুলের নেতৃত্বের পাশাপাশি তার অনুগামীরাও ফের প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ আসামের দায়িত্বে ছিলেন রাহুলেরই আস্থাভাজন জিতেন্দ্র সিংহ। কেরলের দায়িত্বে ছিলেন রাহুলের আর এক আস্থাভাজন, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল।

গত লোকসভা নির্বাচনের পরে দলের হারের দায়িত্ব নিয়ে সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল। পাঁচ রাজ্যের ভোটের আগেও তিনি সভাপতি পদে ফিরতে অরাজি ছিলেন। সূত্রের খবর, মূলত সেই কারণেই বিধানসভা নির্বাচনের ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে সভাপতি পদে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া হয়। বলা হয়েছিল, জুনে নির্বাচন হবে। এবার কি ফের সভাপতি পদে নির্বাচন পিছিয়ে যাবে?

রাহুল নিজে শনিবার বলেছিলেন, নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন হবে। কর্মীরা ঠিক করবে কে নেতৃত্ব দেবে। দল যা চাইবে, তিনি সেটাই করবেন বলেও রাহুল জানিয়েছিলেন। সুরজেওয়ালাও জানিয়েছেন, ৩০ জুনের মধ্যেই কংগ্রেসে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হবেন।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us