ভারতে জুন পর্যন্ত চলবে করোনার ঝাপটা!

অন্য এক দিগন্ত | Apr 28, 2021 04:47 pm
ভারতে জুন পর্যন্ত চলবে করোনার ঝাপটা!

ভারতে জুন পর্যন্ত চলবে করোনার ঝাপটা! - ছবি : সংগৃহীত

 

ভারতে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। ভারতজুড়ে চলছে মৃত্যু মিছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান ভেঙে ফেলেছে অতীতের সমস্ত রেকর্ড। এক দিনে মৃত্যু হয়েছে ৩২৯৩ জনের। যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এদিকে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান জানান দিচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯৬০ জন। পাশাপাশি একদিনে কোভিড মুক্ত হয়েছেন ২ লাখ ৬১ হাজার ১৬২ জন।

ভারতের এই মুহূর্তে চিন্তা বাড়াচ্ছে বিপুল সংখ্যক অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বুলেটিন অনুযায়ী, দেশে অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ২৯ লাখ ৭৮ হাজার ৭০৯ জন। যা চিন্তার ভাজ ফেলেছে চিকিৎসকদের কপালে। মৃ্ত্যু মিছিলেও কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না। চিকিৎসকদের মতে আগামী জুন মাস পর্যন্ত করোনার বড় রকমের ঝাপ্টা চলবে ভারতে। এর থেকে মুক্তির একমাত্র রাস্তা যেকোনো উপায়ে করোনার শৃঙ্খল ভাঙা। নাহলে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সম্পূর্ণ ভেঙে পড়বে। রোখা যাবে না মৃত্যু মিছিল। বিশেষজ্ঞরা আরো জানাচ্ছেন, কুম্ভ মেলার পর উত্তরাখন্ড, বিহারে করোনা বাড়ছে। এদিকে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাটে মে মাসের পর থেক সংক্রমণ নিম্নমুখী হতে শুরু করবে। তবে নির্বাচনের জন্য পশ্চিমবঙ্গে আগামী জুন মাস পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার নেবে বলেই তাদের মত।

মূলত নির্বাচনী প্রচারের বিষয়টিকেই পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার জন্য দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। নির্বাচনের নামে মানুষকে ক্রমশই বিপদের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে বলেও মত চিকিৎসকদের।
সূত্র : এই সময়

সঠিক নথিভুক্তি হলে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াত ৫০ কোটি, বাড়ত মৃতের সংখ্যা

করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের ধাক্কায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতি ভারতে। ইতিমধ্যেই প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। এমনকি মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যাও বেশি বলে দাবি করেছেন তারা।

সংবাদসংস্থা সিএনএন-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এই দাবি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা নথিভুক্ত মৃত্যুর প্রায় ৩০ গুণ। অর্থাৎ সঠিক নথিভুক্তি হলে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ কোটি ছাড়াত বলেই দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। নয়াদিল্লির সেন্টার ফর ডিজিজ ডাইনামিক্স ইকোনোমিক্স অ্যান্ড পলিসি-র ডিরেক্টর রামনন লক্ষ্মীনারায়ণ বলেন, ‘আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় যে অনেক গরমিল রয়েছে তা প্রায় সবাই জানেন। গত বছর আমরা হিসেব করে দেখেছিলাম প্রতি ৩০ জনের মধ্যে ১ জনের সংক্রমণ পরীক্ষায় ধরা পড়েছে। মৃত্যুও অনেক কম নথিভুক্ত হচ্ছে।’

এই প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হূ)-র চিফ সায়েন্টিস্ট সৌম্যা স্বামীনাথন বলেন, ‘এখন ভারতে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। প্রতি দিন প্রায় ২০ লাখ নমুনা পরীক্ষা করছি আমরা। কিন্তু এখনো সেটা সন্তোষজনক নয়। এখন ভারতে সংক্রমণ হার ১৫ শতাংশ। দিল্লির মতো কিছু শহরে সেটা ৩০ শতাংশ। এতে বোঝাই যাচ্ছে আগে নমুনা পরীক্ষা কম হত বলেই অনেক আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যেত না।’

স্বামীনাথন আরো বলেন, ‘আমরা সেরো সার্ভে করার সময় দেখেছি অনেক মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি রয়েছে। অর্থাৎ কোনও না কোনও সময় তারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। অর্থাৎ যা নথিভুক্ত হয়েছে তার থেকে অন্তত ২০-৩০ গুণ প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা।’

মৃত্যুর ক্ষেত্রেও এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। হেমন্ত শেওয়ারে নামের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ভারতে অনেক মৃত্যুও নথিভুক্ত হয় না। কারণ হাসপাতালের থেকে অনেক বেশি মানুষের মৃত্যু বাড়িতে বা অন্য জায়গায় হয়। মৃত্যুর কারণ লিখে শংসাপত্র দেওয়ার জন্য সেখানে চিকিৎসক উপস্থিত থাকেন না। কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গে হাসপাতালে শয্যার অভাব দেখা দিয়েছে। বাড়ি বা রাস্তাঘাটে অনেক আক্রান্তের মৃত্যু হচ্ছে। সেগুলি হিসেবেই থাকছে না।

এই প্রসঙ্গে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োস্ট্যাটিসটিক্স ও এপিডেমায়োলজির অধ্যাপক ভ্রমর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এই সময় বিভিন্ন শহরে যে ভাবে গণহারে কোভিড আক্রান্তদের শেষকৃত্য হচ্ছে তাতেই বোঝা যাচ্ছে প্রকৃত মৃত্যুর বেশির ভাগই নথিভুক্ত হয়নি। আমাদের ধারণা নথিভুক্ত হওয়া মৃত্যুর থেকে প্রায় ৫ গুণ প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা।’

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us