ইতালিতে ১০২ টাকায় আস্ত একটি বাড়ি!
ইতালিতে ১০২ টাকায় আস্ত একটি বাড়ি! - ছবি : সংগৃহীত
মেয়রের একটা শর্ত আছে। হাজার হোক, বাড়ি এমন পানির দরে ছেড়ে দেয়ার কারণ তো অধিবাসীর সংখ্যা বাড়ানো। তাই তিনি জানিয়েছেন যে বাড়ি কিনে ফেলে রেখে দিলে চলবে না, তার সংস্কারসাধনের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে, সেইসাথে স্থানীয় ব্যাংক থেকে একটা ৪ হাজার ইউরোর বীমাও কিনতে হবে
পকেটে থাকতে হবে স্রেফ ৯০ টাকা; পাহাড়-সমুদ্রে ঘেরা আস্ত একটা বাড়ি কিনে ফেলা যাবে !
আমাদের এই গ্রামের নামটি কাস্তিগ্লিওনে দি সিসিলিয়া (Castiglione di Sicilia) আর আমাদের এই নদীর নামটি? উঁহু, নদীর অবশ্য এখানে দেখা মিলবে না। তবে সব নদী শেষ পর্যন্ত যেখানে গিয়ে মেশে, দেখা মিলবে সেই সাগরের। পাহাড় আর সমুদ্র দিয়ে মোড়া গ্রামটি! মেয়রের নামও জানে গাঁয়ের পাঁচজনে- আন্তোনিও কামার্দা (Antonino Camarda)! আর তিনিই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে গ্রামের মোট ৯০০টি বাড়ি এ বার বিক্রি করে দেবেন। খুব বেশি পয়সা খরচের দরকার নেই, পকেটে মাত্র ১ ইউরো, অর্থাৎ বাংলাদেশী মুদ্রায় ১০২ টাকা মতো থাকলেই হলো! তাহলেই ইতালির সিসিলির তাওরমিনার কাছে মাউন্ড এটনা পাহাড়ের কোলে কাস্তিগ্লিওনে দি সিসিলিয়া গ্রামে একখানা বাড়ির মালিক হতে পারবেন বিশ্বের যেকোনো দেশের নাগরিক!
তা, গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যদি এমনতরো নয়নমনোহর হয়, তবে এত বাড়ি ফাঁকা কেন পড়ে আছে সেখানে? কারণটা নেহাতই অর্থনৈতিক। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়ে আর যা-ই হোক, পেট তো আর ভরে না। তাই এক সময়ে এই সব বাড়ির অধিবাসীরা সেই যে রওনা দিয়েছিলেন শহরের দিকে, তার পর আর ফিরে আসেননি। এই অবস্থা শুধু কাস্তিগ্লিওনে দি সিসিলিয়ার একার নয়, ইতালির অনেক গ্রামই এই লোক না থাকার সমস্যায় ধুঁকছে। এর আগেও ইতালির বেশ কিছু গ্রামে এই ভাবে বাড়ি বিক্রি হয়েছে। তবে কাস্তিগ্লিওনে দি সিসিলিয়া সংখ্যার অনুপাতে টেক্কা দিচ্ছে সবাইকে, ৯০০টা বাড়ি বিক্রি তো আর মুখের কথা নয়!
মেয়র আন্তোনিও কার্মাদা জানিয়েছেন, যে বাড়িগুলো একেবারে বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, সেগুলো স্রেফ ১ ইউরোর বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হবে। আর যেগুলো সংস্কারসাধনের তেমন প্রয়োজন নেই, সেগুলোর জন্য দাম ধার্য করা হয়েছে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউরো, বাংলাদেশী মুদ্রায় ধরলে চার লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা। এমন কিছু বেশি কিন্তু নয়, এই টাকায় বিদেশে বাড়ি করার সুবিধা পাওয়া যায় স্রেফ বরাতজোরে!
তবে, মেয়রের একটা শর্ত আছে। হাজার হোক, বাড়ি এমন পানির দরে ছেড়ে দেয়ার কারণ তো অধিবাসীর সংখ্যা বাড়ানো। তাই তিনি জানিয়েছেন যে বাড়ি কিনে ফেলে রেখে দিলে চলবে না, তার সংস্কারসাধনের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে, সেইসাথে স্থানীয় ব্যাংক থেকে একটা ৪ হাজার ইউরোর বীমাও কিনতে হবে। ১৯০০ সালেও গ্রামের সদস্য সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার, এখন এসে ঠেকেছে ৩ হাজারে- এটুকু তো মেয়র চাইবেনই!
সূত্র : নিউজ ১৮