গলা ভেঙে গেলে কোভিডের ভয় কতটা?
গলা ভেঙে গেলে কোভিডের ভয় কতটা? - ছবি : সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ফের আতঙ্ক বয়ে এনেছে। চার পাশে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে মানুষ আরো সজাগ হতে বাধ্য হয়েছেন। জ্বর, কাশি ও স্বাদ-গন্ধ চলে যাওয়া যদিও এই রোগের সবচেয়ে বড় উপসর্গ, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আরো নতুন ধরনের উপসর্গ। বিশেষ করে, রূপ পরিবর্তিত ভাইরাসের ক্ষেত্রে। অনেক কোভিড আক্রান্তই জানিয়েছেন, তাঁদের গলা ভেঙে গিয়েছিল। বা গলে বসে কণ্ঠস্বর বদলে গিয়েছিল।
কখন চিন্তিত হবেন
গলা ভাঙলেই কি চিন্তার বিষয়? তেমন নয়। ধরুন, গরমের চোটে দেদার ঠান্ডা পানি খেয়েছেন ফ্রিজ থেকে বার করে। কিংবা মিল্কশেকে বরফের পরিমাণ একটু বেশি হয়ে গিয়েছিল। সন্ধ্যাবেলা গোসল সেরে ভিজে গায়ে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়েছেন। এই ধরনের পরিস্থিতিতে আপনার গলা এমনিই ভাঙতে পারে। তবে মাথায় রাখতে হবে যে, হঠাৎ বিনা কারণে গলা ভাঙলে সেটা চিন্তার বিষয়। যেহেতু কোভিড মূলত শ্বাসনালীর রোগ, আপনার স্বরযন্ত্রও তার অংশ। তাই গলার স্বরে কোনো অস্বস্তিকর বদল হলে তা কোভিডের উপসর্গ হতেই পারে।
কী করণীয়
* কয়েক দিন দেখুন, কোভিডের অন্য কোনো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কি না।
* তত দিন বাড়ির অন্যদের থেকে আলাদা থাকার চেষ্টা করুন।
* সব সময় মাস্ক ব্যবহার করুন। মাস্কের ফিটিং ঠিক আছে কি না দেখে নিন।
* গলা ব্যথা কমাতে ভেষজ চা, হালকা গরম পানি এবং অন্য ঘরোয়া টোটকা নিয়ম করে খান। সারা দিনে সুবিধামতো গার্গল করুন।
* অন্য উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে কোভিড পরীক্ষা করান।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পরও মৃত্যুর শঙ্কা!
গোটা দুনিয়ায় এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫ কোটি ৯২ লাখ ৫৪ হাজার ৩১০ জন। এই রোগে মারা গিয়েছে ৩১ লাখেও বেশি মানুষ। যারা সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদেরও কিন্তু ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। অন্তত পরের ৬ মাস। গবেষণা কিন্তু সে রকমই বলছে।
করোনার উপসর্গ হলো জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, গন্ধ–স্বাদ চলে যাওয়া। আপাতভাবে মনে হতে পারে, এ আর এমন কী? বেশিরভাগ ভাইরাসজনিত জ্বরেও এ রকমই তো হয়। একবার সেরে উঠলেই কেল্লাফতে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে সে রকম নয়। এর প্রভাব দীর্ঘদিন থেকে যাচ্ছে মানুষের শরীরের। অঙ্গ, তন্ত্র, যন্ত্রগুলোকে ক্ষয় করে দিচ্ছে।
গবেষণায় এই বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছে সেন্ট লুইয়ের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন। ওই গবেষকদলের মতে, করোনা থেকে সেরে ওঠার পরেও ৬ মাস পর্যন্ত ওই রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা থেকে যায়। ৮৭ হাজার করোনা রোগীর ওপর সমীক্ষা চালিয়েছে গবেষক দল।
অনেক করোনা আক্রান্তের শরীরেই তেমন উপসর্গ থাকে না। বাড়িতে আইসোলেশনে থেকেই রোগ নিরাময় হয়। তাঁদের পুরোপুরি সারতে সময় লাগে প্রায় এক মাস। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এর পরের ৬ মাসে তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা বেড়ে যায় ৬০ শতাংশ। অনেক করোনার রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়। সেক্ষেত্রে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সারতে অনেক বেশি সময় লাগে। হাসপাতালে ভালো চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে উঠলেও তাঁদের মৃত্যুর আশঙ্কা থেকেই যায়। গবেষকরা বলছেন, এই ধরনের রোগীদের প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে ২৯ জনের পরের ৬ মাসে মৃত্যু হতে পারে।
কেন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও মৃত্যু আশঙ্কা থেকেই যায়? গবেষকরা বলছেন, করোনা মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ, তন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পরও ৩৭৯ ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে ওই ব্যক্তি।
সূত্র : আজকাল