করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পরও মৃত্যুর শঙ্কা!
করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পরও মৃত্যুর শঙ্কা! - ছবি : নয়া দিগন্ত
গোটা দুনিয়ায় এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫ কোটি ৯২ লাখ ৫৪ হাজার ৩১০ জন। এই রোগে মারা গিয়েছে ৩১ লাখেও বেশি মানুষ। যারা সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদেরও কিন্তু ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। অন্তত পরের ৬ মাস। গবেষণা কিন্তু সে রকমই বলছে।
করোনার উপসর্গ হলো জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, গন্ধ–স্বাদ চলে যাওয়া। আপাতভাবে মনে হতে পারে, এ আর এমন কী? বেশিরভাগ ভাইরাসজনিত জ্বরেও এ রকমই তো হয়। একবার সেরে উঠলেই কেল্লাফতে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে সে রকম নয়। এর প্রভাব দীর্ঘদিন থেকে যাচ্ছে মানুষের শরীরের। অঙ্গ, তন্ত্র, যন্ত্রগুলোকে ক্ষয় করে দিচ্ছে।
গবেষণায় এই বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছে সেন্ট লুইয়ের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন। ওই গবেষকদলের মতে, করোনা থেকে সেরে ওঠার পরেও ৬ মাস পর্যন্ত ওই রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা থেকে যায়। ৮৭ হাজার করোনা রোগীর ওপর সমীক্ষা চালিয়েছে গবেষক দল।
অনেক করোনা আক্রান্তের শরীরেই তেমন উপসর্গ থাকে না। বাড়িতে আইসোলেশনে থেকেই রোগ নিরাময় হয়। তাঁদের পুরোপুরি সারতে সময় লাগে প্রায় এক মাস। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এর পরের ৬ মাসে তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা বেড়ে যায় ৬০ শতাংশ। অনেক করোনার রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়। সেক্ষেত্রে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সারতে অনেক বেশি সময় লাগে। হাসপাতালে ভালো চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে উঠলেও তাঁদের মৃত্যুর আশঙ্কা থেকেই যায়। গবেষকরা বলছেন, এই ধরনের রোগীদের প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে ২৯ জনের পরের ৬ মাসে মৃত্যু হতে পারে।
কেন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও মৃত্যু আশঙ্কা থেকেই যায়? গবেষকরা বলছেন, করোনা মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ, তন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পরও ৩৭৯ ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে ওই ব্যক্তি।
নারী-পুরুষে বিভেদ!
সংক্রমণের ক্ষেত্রে কি নারী পুরুষে বিভেদ করছে করোনা ভাইরাস? কথাটা শুনতে অবৈজ্ঞানিক মনে হলেও বিজ্ঞানই এ কথায় সায় দিচ্ছে। এক গবেষণা বলছে, পুরুষদের শরীরে উপস্থিত টেস্টোস্টেরন হরমোন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কিছুটা হলেও কমিয়ে দেয় বা দমিয়ে ফেলে।
উল্টোদিকে মেয়েদের শরীরের ইস্ট্রোজেন হরমোন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ফলে করোনা সংক্রমণে পুরুষদের বিপদ বেশি, জানিয়েছেন গবেষকরা।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় টেস্টোস্টেরন যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তা জানিয়েছে একাধিক গবেষণা। যাদের শরীরে এই হরমোন যত বেশি, করোনা সংক্রমণে তাদের তত বেশি রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা।
করোনায় পুরুষদের আরো নানা ঝুঁকির কথা শোনা গেছিল আগেই। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, সংক্রমণের ফলে ছেলেদের বন্ধ্যাত্ব আসা অসম্ভব নয়।
সূত্র : আজকাল