খাওয়ার মানসিক রোগ থেকে অটোইমিউন ডিজিজ
খাওয়ার মানসিক রোগ থেকে অটোইমিউন ডিজিজ - ছবি : সংগৃহীত
যারা ইটিং ডিজঅর্ডার বা খাদ্য সম্পর্কিত মানসিক রোগে আক্রান্ত হন তাদের মধ্যে অটোইমিউন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি
শরীর সাধারণত নিজস্ব উপাদানগুলোকে চিনতে পারে। বাইরের কোনো পদার্থ বা অণুজীব যেমন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস দেহের ভেতরে প্রবেশ করলে ইমিউন সিস্টেম তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এতে বাইরের ক্ষতিকর অণুজীব বা পদার্থ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে দেহকে রোগমুক্ত রাখে। কিন্তু দেহের ভেতরের পদার্থগুলোর বিরুদ্ধে যদি এমন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে তবেই দেখা দেয় অটোইমিউন ডিজিজ। এগুলো হলো এমন ধরণের রোগ যে রোগে শরীর নিজের বিরুদ্ধে কাজ করে।
সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে যারা ইটিং ডিজঅর্ডার বা খাদ্য সম্পর্কিত মানসিক রোগে আক্রান্ত হন তাদের মধ্যে অটোইমিউন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয় এ নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করে। ১৬ বছর ধরে প্রায় দুই হাজার ইটিং ডিজঅর্ডার যেমন বুলেমিয়া নার্ভোসা, অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা, বিঞ্জ ইটিং ডিজঅর্ডারে আক্রান্তদের নিয়ে গবেষণা করা হয়।
এতে দেখা যায় যারা ইটিং ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত তাদের মধ্যে অটোইমিউন ডিজিজে আক্রান্তের হার ৯ শতাংশ। অন্য দিকে স্বাভাবিক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে তা মাত্র ৫ শতাংশ। সম্প্রতি প্লোস ওয়ান জার্নালে এ গবেষণা তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
কানাজাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান
জিংকের উপকারিতা
ডা: আহাদ আদনান
জিংক বা দস্তা একটি পুষ্টিকণিকা, যা আমাদের হাতের কাছেই পাওয়া যায়। এমন বিভিন্ন খাবারে থাকে এবং আমাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর উল্লেখযোগ্য কাজগুলো হচ্ছে-
ষ শরীরের কোষ তৈরি ও ক্ষয়রোধ করা : প্রতিনিয়ত নতুন কোষ তৈরি এবং এর মাধ্যমে ত্বক, চুল, নখের বৃদ্ধি। পেশিকলার বৃদ্ধি ও সংরক্ষণ; হাড়ের বৃদ্ধি ও ক্ষয়রোধ; শিশুদের বৃদ্ধি বজায় রাখা; গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানকালীন সময়ের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা মেটানো ও ডিএনএ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা।
ষ দেহের ইমিউন ব্যবস্থা শক্তিশালী করে এর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ষ দেহের বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে কাজ করে : দুই শতাধিক অণুঘটককে কার্যকর করে। শর্করা, আমিষ তৈরিতে সাহায্য করে; রক্তের গ্লুকোজের সঠিক মাত্রা বজায়ে সাহায্য করে ও বিপাকের উপযোগী চঐ বজায় রাখে।
ষ শরীরের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ নিষ্ক্রিয় করে।
ষ খাদ্য হজমে সহায়তা করে : এটি পাকস্থলির অম্লের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। বিভিন্ন অণুঘটককে কার্যকর করে।
ষ স্নায়ুতন্ত্র কর্মক্ষম, সচল রাখতে সাহায্য করে।
ষ শরীরের ক্ষতপূরণ ত্বরান্বিত করে।
ষ মৃদু আলো /অন্ধকারে দেখার জন্য চোখের রেটিনার প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরিতে সাহায্য করে।
ষ স্বাদ, গন্ধ অনুভবের প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখে এবং এর মাধ্যমে রুচি বাড়ায়।
ষ ৫ আলফা রিডাকটেজ নামক অণুঘটকের মাত্রা হ্রাস করে। এর মাধ্যমে পুরুষের টাক হওয়ার প্রবণতা কমায় এবং প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি সীমিত রাখে।
ষ ডায়রিয়ার মাত্রা কমায় এবং প্রতিরোধে সহায়তা করে।
অতএব, বুঝতেই পারছেন জিংক শরীরের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এবার নজর দেয়া যাক আমাদের জন্য সহজলভ্য এমন কিছু জিংকসমৃদ্ধ খাবারের দিকে। কলিজা, গোশত, শিম, মটর, বাদাম, মাশরুম, পালংশাক, লেটুস, চিংড়ি, টক দই, তিল, মিষ্টি কুমড়ার বীচি এসবে প্রচুর জিংক থাকে।
কারো যদি স্বাদ, গন্ধ নিতে সমস্যা দেখা দেয়, রুচি কমে যায়, বিষণ্নতা থাকে, ঘন ঘন ঠাণ্ডা ও সংক্রামক ব্যাধি লেগেই থাকে, শিশুদের ঘন ঘন ডায়রিয়া হয়, বৃদ্ধি ঠিকমতো না হয়, তাহলে হয়তো অতিরিক্ত জিংকের চাহিদা থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
লেখক : রেজিস্ট্রার, আইসিএমএইচ, মাতুয়াইল, ঢাকা