হাঁটু ও কোমরের ব্যথা : মুক্তির সহজ উপায়
হাঁটু ব্যথা - ছবি : সংগৃহীত
কোমর-হাঁটুর ব্যথ্যায় আজকাল মোটামুটি অনেকেই ভোগেন। অল্প বয়স থেকেই কোমর-হাঁটুর ব্যাথায় কাতর হয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। চিকিত্সকের পরামর্শে ওষুধ খেয়ে সাময়িকভাবে ব্যাথা কমে। কিন্তু কয়েক দিন বাদেই সেই একই সমস্যা। কিছুতেই সুরাহা পাওয়া যায় না কষ্টদায়ক ব্যাথ্যার।
অথচ, জীবনযাত্রায় সাধারণ কিছু পরিবর্তন করলেই কোমর-হাঁটুর ব্যাথা অনেকটা বশে রাখা সম্ভব। রোজ অল্প অল্প কিছু অভ্যাস মেনে চললেই এড়িয়ে যাওয়া যায় গাটের ব্যাথা।
কথায় বলে Precaution is better than cure। অর্থাৎ রোগ হওয়ার আগেই সাবধান হওয়া ভালো। কোমর-হাঁটুর ক্রনিক ব্যাথা একদিনে হয় না। বহুদিনের বদ অভ্যাসের ফলেই ব্যাথা শুরু হয় গাঁটে গাঁটে।
কোমর-হাঁটুর ব্যাথা এড়াতে কী করবেন?
১) এখনকার দিনে সবচেয়ে বড় সমস্যা পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব। দিনে অন্তত আধ ঘন্টা শারীরিক কসরত্ করার চেষ্টা করুন। কসরত শেষে অবশ্যই স্ট্রেচ করুন। এতে পেশী ও হাড় শক্তিশালী হবে। বৃদ্ধি পাবে নমনীয়তা। যোগ ব্যায়াম করতে পারলেও উপকার পাবেন।
২) এক টানা বসে থাকবেন না। অফিসে বসে কাজ করতে হলেও মাঝে মাঝে ব্রেক নিন। হাঁটাহাঁটি করুন। কোমর, পায়ের স্ট্রেচিং করুন।
৩) অফিসের কম্পউটারে বসে কাজ করলে সঠিক চেয়ার টেবিল ব্যবহার করুন। শিড়দাঁড়া যাতে মোটামুটি সোজা থাকে, সেই দিকে নজর রাখুন।
৪) জুতোর সঙ্গে কিন্তু কোমর-হাঁটুর ব্যাথার সম্পর্ক আছে। চেষ্টা করুন সঠিক মাপের ভালো মানের জুতো পরার। জুতো কেনার সময় নজর রাখুন নরম কুশন-যুক্ত সোলের দিকে।
৫) খাবারের পাতে রাখুন প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি ও ফলমূল। ব্রকোলি, গাজর, বিনস্, অঙ্কুরিত ছোলা খান বেশি পরিমাণে। দুধ সহ্য হলে রোজ খেতে পারেন। ডিম খান নিয়মিত। এতে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম-এর ঘাটতি পূরণ হবে।
৬) ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থেকে অনেক সময় কোমর-হাঁটুর ব্যাথা হয়। তাই একজন চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ইউরিক অ্যাসিড পরীক্ষা করিয়ে নিন। যদি দেখেন ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি, সেক্ষেত্রে এড়িয়ে চলতে হবে টম্যাটো, কাবুলি ছোলা, মুসুর ডালের মতো খাবার।
৭) নিজের ইচ্ছা মতো কোনো ওষুধ বা ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে শুরু করবেন না। চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে তবেই ওষুধ খান।
সূত্র : জি নিউজ
ব্যথানাশক ওষুধ সেবনে হৃদরোগ
আজাদুল কবির আজাদ
একটু ব্যথা হলেই ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করেন না এমন ব্যক্তির সংখ্যা কম। লাল বড়ি হিসেবে পরিচিত ডাইক্লোফেনাক সেবন করেননি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এতদিন জানা ছিল, এ ব্যথানাশক বড়ি সেবন করলে কিডনির সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু এ মাসে প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে, ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করলে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা দেখা দেয়। এ ওষুধ সেবনকারীরা অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনে আক্রান্ত হন। যেটি স্ট্রোক ও হার্ট ফেইলিওরের অন্যতম কারণ।
একদল ডেনিশ গবেষক ১৯৯৯ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনে আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর গবেষণা করেন।
এতে দেখা যায়, যারা নন-সিলেকটিভ এনএসআইডি- ব্যথানাশক ওষুধ যেমন অ্যাসপিরিন, ডাইক্লোফেনাক, কিটোরোলাক, আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন, এনডোমেথাসিন ইত্যাদি সেবন করেন তাদের অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনে আক্রান্ত হওয়ার হার ৪৬ শতাংশ ও কক্স-২ ইনহেবিটর যেমন- সেলেকক্সিব, মেলোক্সিকাম সেবন করেন তাদের ক্ষেত্রে ৭১ শতাংশ বেশি।
গবেষকরা আরো জানান, নন-সিলেকটিভ এনএসআইডি ও কক্স-২ ইনহেবিটর সেবন করলে প্রতি বছর প্রতি এক হাজারে চারজন ও সাতজন অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনে আক্রান্ত হন। এ গবেষণার নেতৃত্ব দেন ডেনিশ আরহাম ইউনির্ভাসিটি হাসপাতলের মারটেন স্ক্যামিড। এ মাসেই এটি বিখ্যাত ‘বিএমজে’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা অযথা ব্যথানাশক ওষুধ সেবন না করার পরামর্শ দিয়েছেন।