মাচায় তৃপ্তি তরমুজ : ক্ষেতেই প্রতিমণ ১৮০০
মাচায় তৃপ্তি তরমুজ - ছবি : সংগৃহীত
মেহেরপুর জেলায় মাচা পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে জহিরুল ইসলামের সাফল্য জেলা কৃষি বিভাগকে মুগ্ধ করেছে। এ প্রথম মেহেরপুরের মাটিতে মাচা পদ্ধতিতে ‘তৃপ্তি’ জাতের হলুদ রংয়ের তরমুজ চাষ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে সদর উপজেলার সুবিদপুর ব্লকে উজ্জলপুর গ্রামের মাঠে জহিরুল ইসলাম তরমুজ চাষ করেন। জহিরুল উজ্জলপুর গ্রামের বাসিন্দা। সরেজমিনে দেখা যায় মাচায় ঝুলছে তৃপ্তি (হাইব্রিড) জাতের হলুদ রঙের তরমুজ। তাপদাহের মধ্যে এখন তরমুজের ব্যাপক চাহিদার কারণে জমি থেকেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে তরমুজ। দেশী তরমুজ মাটিতে থাকে। এ তরমুজ মাচায় চাষ করতে হয়।
তরমুজ চাষি জহিরুল ইসলাম জানান- ঝুলে থাকার কারণে তরমুজের ওজন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লতা থেকে তরমুজ ছিঁড়ে পড়ে যাবে। এজন্য যখন তরমুজ আড়াই শ’ গ্রাম ওজনের হবে এ সময় থেকে প্রতিটি তরমুজ নেটের ব্যাগ দিয়ে মাচার সঙ্গে বেঁধে দিতে হবে। তরমুজ রোপণের পর থেকে ৬০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ দিনের মধ্যে বাজারজাত করা যায়। তিনি ২৫ কাঠ জমিতে এ তরমুজ চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। ২ লাখ টাকার বেচাকেনা হবে বলে আশা করছেন।
জহিরুল ইসলাম আরও জানান- নিরাপদ ফল উৎপাদন এবং সুষম সার ব্যবস্থাপনায় তৃপ্তি (হাইব্রিড) জাতের তরমুজ মারাত্মক সুস্বাদু। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকার কারণে ফলন হয়েছে ভালো। ‘অসময়ের এ তরমুজের ব্যাপক চাহিদা বাজারে। রোপণের পর ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে তরমুজ বেচাকেনা শুরু হয়। জমি থেকে প্রতিমণ তরমুজ ১৬ শ' টাকা থেকে ১৮ শ' টাকা দরে ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নাসরিন পারভিন তরমুজ চাষ নিয়ে জানান- অসময়ে তরমুজের চাষ করে জহিরুল ইসলাম যে সাফল্য পেয়েছে আমরা এতে খুশি। সাধারণত তরমুজ বৃষ্টির মৌসুমের আগেই শেষ হয়ে যায়। ১ বিঘা জমিতে সবোর্চ্চ সাত থেকে আটটি বেড তৈরি করা যাবে। চারা রোপণের মাত্র ৩০ দিনেই পুরো মাচায় গাছ উঠে যাবে এবং ফুল ও ফল ধরা শুরু হবে। বাকি ৩০ দিনের মধ্যে তরমুজ তোলার উপযুক্ত হয়ে যাবে। সকালবেলা স্ত্রী ও পুরুষ ফুল ফোটার সাথে সাথে স্ত্রী ফুলকে পুরুষ ফুল দিয়ে পরাগায়িত করে দিলে ফলন ভালো হয়। তবে জমিতে অবশ্যই পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকতে হবে।
এ তরমুজ অক্টোবর মাসে চাষ করা লাভজনক। কারণ ডিসেম্বরে সাধারণত দেশী ফল তেমন পাওয়া যায় না। এসময় বাজারজাত করতে পারলে আর্থিক লাভবান নিশ্চিত।
তিনি আরো জানান, হাইব্রিড জাতের তরমুজ বীজ দেশের বাইরে থেকে আসায় বীজের দাম বেশি। বারি উদ্বাবিত দুইটি ইনব্রিড জাত লাল ও হলুদ এর বীজ রাখা যায়। এটা সম্প্রসারণ করা গেলে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় কমে যাবে।
সূত্র : বাসস