ভারতে করোনার তৃতীয় মিউট্যান্ট, পশ্চিমবঙ্গ হবে হটস্পট!

করোনাভাইরাস - ছবি : সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল ভারত। এবার ধরা পড়ল করোনার তৃতীয় মিউট্যান্ট স্ট্রেনের। ভাইরাসের মিউট্যান্ট পরিবর্তিত হলে আরো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ভারতে চিকিৎসকদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ এই নতুন মিউট্যান্টের করোনা ভাইরাসকে মোকাবিলা করা। সব চাইতে অশনি সঙ্কেত হলো এই, যে সমস্ত রাজ্যে এই ট্রিপল মিউট্যান্টের সন্ধান মিলেছে তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও।
গত অক্টোবরে সন্ধান মিলেছিল ডবল মিউটেশনের। তা নিয়ে পুরোপুরি আতঙ্কিত ছিলেন চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা। এ বারে তৃতীয় মিউট্যান্টের সন্ধান মেলায় দিশেহারা চিকিৎসককুল। বিশেষজ্ঞরা এই বিপদের আশঙ্কা বাড়িয়ে এই মিউট্যান্টকে পুরোপুরি বুঝতে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে প্রশ্ন উঠছে কী এই ট্রিপল মিউট্যান্ট?
কী এই ট্রিপল মিউট্যান্ট?
করোনার তিনটি স্ট্রেনের একই সঙ্গে উপস্থিতি। এই নয়া ভেরিয়েন্টের ফলে ফের বদলাবে করোনার উপসর্গ। অর্থাৎ, যে উপসর্গ এখনকার ভেরিয়েন্টের সংক্রমণের ফলে হচ্ছে, তার পরিবর্তন ঘটবে। আবার এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে একাধিক নতুন উপসর্গ। এত দিন দুটি স্ট্রেন একসঙ্গে হয়ে সংক্রামিত করছিল। এবার তিনটি স্ট্রেনের নয়া ভেরিয়েন্ট। স্ট্রেনের নতুনত্বের সন্ধান পাওয়া মানেই সংক্রমণের দ্রুততা আরো বাড়বে।
কেন এ ভাবে একাধিক মিউটেশন তৈরি হচ্ছে?
চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানীদের দাবি, একটি ভাইরাস যত বেশি মানুষকে সংক্রামিত করবে, তার মিউটেশন তত বাড়বে। এক্ষেত্রেও সেটিই হচ্ছে।
এই ট্রিপল মিউট্যান্ট ভারতের জন্য পরবর্তী চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, ছত্তিশগড় ও পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তার পিছনে নয়া এই ট্রিপল মিউট্যান্ট রয়েছে বলে মত চিকিৎসকদের। এমনকি এই নয়া ভেরিয়েন্টের জন্যই সারা বিশ্বেও ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। এমনকী, বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গ এই জাতীয় মিউটেশনের হটস্পট হয়ে উঠতে পারে। চিকিৎসকদের দাবি, এই মিউট্যান্ট মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। যার জন্য প্রচুর নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ের দরকার রয়েছে। আজকালকে চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, এটি ভাইরাসের স্বাভাবিক চরিত্র। আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। তবে সাধারণ মানুষকে অবগত করতে চাই, যে এই ভাইরাসের চেন না ভাঙলে আগামী দিনে বিপদ আসন্ন।
ভারতে অক্সিজেনের ট্যাঙ্ক লিক হয়ে অন্তত ২২ করোনা রোগীর মৃত্যু
করোনা পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের অভাবে রোগীদের চিকিৎসা অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাহত হচ্ছে। এই অবস্থায় বুধবার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল ভারতের মহারাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে। হঠাৎ অক্সিজেনের ট্যাঙ্কার লিক করায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২২ জন করোনা রোগীর।
সংবাদসংস্থা এএনআই জানায়, অক্সিজেনের একটি ট্যাঙ্ক লিক করে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে নাসিকের এক হাসপাতালে। একজন চিকিৎসক হাসপাতালে একটি ট্যাঙ্কারে গ্যাস ভরার সময় লিক করে যায়। এর ফলে ঘটে যায় ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। হাসপাতাল ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ইতিমধ্যেই ওই হাসপাতাল থেকে ২২ জন করোনা রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা।
মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী ড. রাজেন্দ্র সিংগানে জানিয়েছেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ২২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ঘটনাটি কীভাবে ঘটল তার আমরা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়েছি। ঘটনার তদন্ত হবে। যে বা যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী তাদের কাউকে ছাড়া হবে না।’
করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত আবশ্যকীয় হলো অক্সিজেন। এ ঘটনায় হাসপাতালে অক্সিজেনের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় রোগীদের। অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয় তাদের।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস