চোখে লাল ভাব আর পানি পড়ছে, করোনা নয় তো?
চোখে লাল ভাব আর পানি পড়ছে, করোনা নয় তো? - ছবি : সংগৃহীত
চোখ লাল হয়ে গেছে? পানি পড়ছে টানা? আইসোলেশন বা নিভৃতবাসে থাকাই ভালো। কারণ, একে করোনাভাইরাসের নতুন উপসর্গ বলে চিহ্নিত করছেন দেশ-বিদেশের চিকিৎসকেরা। এই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বিশেষভাবে শিশুদের মধ্যে। তবে বড়দেরও এমন সমস্যা হচ্ছে।
এত দিন জ্বর, গলা জ্বালা, গা হাত-পা ব্যথা, স্বাদ-গন্ধ না পাওয়ার মতো কিছু উপসর্গ দেখা দিলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে মনে করা হচ্ছিল। এ বার দেখা যাচ্ছে তারই সঙ্গে রয়েছে আরো একটি উপসর্গ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতেই বহু শিশু আক্রান্ত হচ্ছে ভাইরাসে। আর তাতেই আরো বেশি করে নজরে পড়ছে চোখ থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর বিষয়টি।
তবে তার মানে একেবারেই এমন নয় যে শুধুই শিশুদের ক্ষেত্রে এই উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। ব্যবসায়ী প্রিয়ব্রত সরকারের বেশ কিছু দিন ধরেই চোখে হালকা জ্বালা ভাব ছিল। তার পরে পানি পড়তে থাকে। ভেবেছিলেন চোখ ওঠা রোগ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসকের কাছেও যাইনি প্রথমে। ভেবেছিলাম ঘরে থাকলে সেরে যাবে।’’ তবে এক-দু’ দিনের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় গা-হাত-পায়ে ব্যথা। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলায় করোনা পরীক্ষা করতে বলেন তিনি। রিপোর্ট এলে দেখা যায় সংক্রমিত হয়েছেন প্রিয়ব্রত।
চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনা ছড়াচ্ছে শুধু নাক বা মুখ দিয়ে নয়। চোখ থেকে অনেকের শরীরেই সংক্রমণ ছড়ায়। চক্ষু চিকিৎসক সৌমেন মণ্ডল জানাচ্ছেন, এই উপসর্গ নতুন নয়। বরং চীন দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপের কথা ধরা পড়েছিল চোখের সংক্রমণের চিকিৎসা করতে গিয়েই। তিনি বলেন, ‘গত বারও কনজান্কটিভাইটিস্ কোভিডের একটি উপসর্গ হিসেবে দেখা গেছে এবং চোখ থেকে সংক্রমণ ছড়াতে দেখা গেছে। তবে এ বার তা আরো বেশি হচ্ছে।’ সৌমেন জানান, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও এমন উপসর্গ দেখা দিয়েছে। চোখ ওঠার মতো চোখ লাল হয়ে যাওয়ার সমস্যা যেমন হচ্ছে, তেমন রেটিনার শিরা-উপশিরায় প্রদাহ বা ভাস্কুলাইটিস্ও হচ্ছে।
ফলে চোখে লাল ভাব দেখা দিলে এক বার করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। যোগাযোগ করতে হবে চিকিৎসকের সাথেও।
সহজেই ঘুম আসে ‘৪-৭-৮’ নিঃশ্বাস প্রক্রিয়ায়?
করোনাভাইরাস অতিমারীর সময় নানা কারণে ঘুম কমছে অনেকেরই। একদিকে বাড়ি থেকে না বেরোতে পারার ফলে অবসাদ, অন্যদিকে কাজ নিয়ে অনিশ্চয়তা। উদ্বেগে সময় কাটাচ্ছেন একটা বড় অংশের মানুষ। এরই প্রভাব পড়ছে ঘুমের ওপর।
কিন্তু ঠিক করে ঘুমাতে না পারলে কাজকর্ম করার শক্তিটাই চলে যাবে। ফলে ঘুম দরকার। এই কারণেই হালে জনপ্রিয় হচ্ছে ‘৪-৭-৮’ নিঃশ্বাস পদ্ধতি। ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে এটি। তেমনই দাবি আমেরিকার চিকিৎসক অ্যান্ড্রু ভাইল-এর।
ঘুম-বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রু কয়েক বছর আগে ঘুমিয়ে পড়ার এই পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেছিলেন। তখন এটি তেমনভাবে জনপ্রিয় না হলেও, হালে অতিমারীর সময়ে জনপ্রিয় হয়েছে এটি। কী এই পদ্ধতি?
প্রথমে চিৎ হয়ে শুয়ে নিঃশব্দে ৪ সেকেন্ডের একটি নিঃশ্বাস নিতে হবে। মুখ যেন বন্ধ থাকে এই সময়। নিঃশ্বাস নিতে হবে নাক দিয়ে।
এ বার বুকের মধ্যে সেই বাতাস ধরে রাখতে হবে ৭ সেকেন্ড।
তার পরে এই বাতাস ৮ সেকেন্ড ধরে মুখ দিয়ে ছাড়তে হবে। ছাড়ার সময় শিস দেয়ার মতো হালকা শব্দ করতে পারলে ভালো।
গোটা পদ্ধতিটি সব মিলিয়ে ৪ বার করতে হবে।
দেখা গেছে এই প্রক্রিয়ার ফলে দ্রুত ঘুম আসে। করোনার সময়ে যখন অনেকেরই ঘুম কমে গেছে, তখন বহু মানুষই দ্বারস্থ হচ্ছেন এই প্রক্রিয়ার।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা