করোনার নয়া স্ট্রেনে আক্রান্ত মধ্যবয়সীরা, ভয় ধরাচ্ছে শিশুদের সংক্রমণের হারও
করোনার নয়া স্ট্রেনে আক্রান্ত মধ্যবয়সীরা, ভয় ধরাচ্ছে শিশুদের সংক্রমণের হারও - ছবি : সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউ অনেক বেশি আক্রমনাত্মক। সংক্রামিত করার শক্তি বেশি, তাই উপসর্গ থাকা রোগীর সংখ্যা এ বারে তুলনায় অনেক বেশি। ফলে দ্রুত মানুষকে সংক্রামিত করে দিচ্ছে। বিশেষ করে ভারতীয় মিডিয়ায় এ নিয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা ভয়জাগানিয়া। এখানে কিছু তথ্য প্রকাশ করা হলো।
* জ্বর, সর্দি-কাশি, ফুসফুসে সংক্রমণের মতো উপসর্গ তো আগেই ছিল। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার সঙ্গে সঙ্গেই আরো বেশ কিছু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।
* করোনার নতুন স্ট্রেনে আক্রান্ত হলে জ্বর থাকছেই, তবে শরীরের তাপমাত্রা থাকছে উপরের দিকে। এছাড়াও কানে কম শোনা, পেশীতে ব্যথা, ত্বকে ইনফেকশন, চোখে ঝাপসা দেখা, পেট খারাপ এবং চোখে কনজাংটিভাইটিসের মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে।
* রোববার দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১০,৭৩২ জন। ২০২০ সাল থেকে আজকের দিন পর্যন্ত এটাই সর্বাধিক, জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
* বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, করোনার প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউ অনেক বেশি আক্রমনাত্মক। সংক্রামিত করার শক্তি বেশি, তাই উপসর্গ থাকা রোগীর সংখ্যা এ বারে তুলনায় অনেক বেশি। ফলে দ্রুত মানুষকে সংক্রামিত করে দিচ্ছে। চিকিৎসকদের দাবি, আগামী দু-সপ্তাহ অত্যন্ত বিপজ্জনক।
* দিল্লির একটি নামী বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন, এ বারে উপসর্গ থাকা এবং উপসর্গহীন দু-ধরণের রোগীর সংখ্যাই অনেক বেশি। তবে আগামী কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে ভাইরাসের এই স্ট্রেন প্রথমটির তুলনায় বেশি সংক্রামক কিনা তা বুঝতে। তবে এই স্ট্রেন যে অনেক বেশি সংক্রামক, তা হলফ করে বলা যায়।
* তবে ভয় ধরাচ্ছে কম বয়সীদের আক্রান্ত হওয়া। প্রথম স্ট্রেন বয়স্কদের বেশি সংক্রামিত করলেও, দেখা যাচ্ছে এ বারে শিশু থেকে মধ্য বয়স্কদের বেশি আক্রমণ করছে। এমনকি ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরাও সমানভাবে করোনা আক্রান্ত হচ্ছে। দিল্লির চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, গত এক সপ্তাহে ৩০-৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে সংক্রমনের হার বেশি।
* ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে রিপোর্ট সামনে এসেছে, তাতে চোখ কপালে উঠেছে অভিভাবকদের। রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্চ থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ৭৯,৬৮৮ জন শিশু করোনা আক্রান্ত হয়েছে।
* শিশুদের জন্য এখনই করোনা টিকা দেয়ার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।AstraZeneca একটি টিকা শিশুদের জন্য তৈরি করলেও, তার ট্রায়াল সফল হয়নি। শিশুদের শরীরে যাওয়ার পর রক্ত জমাট বাধছিল, যার ফলে ইউরোপীয় দেশগুলোতে সাতজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়।
* ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিলের মধ্যে শুধুমাত্র মহারাষ্ট্রেই ৬০,৬৮৪ শিশু করোনা আক্রান্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৯,৮৮২ জনের বয়স পাঁচ বছরের কম। ছত্তিশগড়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৫,৯৪০ জন, যাদের মধ্যে ৯২২ জনের বয়স পাঁচ বছরের কম। কর্ণাটকে আক্রান্ত হয়েছে ৭,৩২৭ জন, যাদের মধ্যে ৮৭১ জনের বয়স পাঁচ বছরের কম। উত্তর প্রদেশে ৩,০০৪ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যাদের মধ্যে ৪৭১ জনের বয়স পাঁচ বছরের নিচে।
* দিল্লিতেও সংখ্যাটা কম নয়। ২,৭৩৩ জন শিশু রাজধানীতে সংক্রমনের শিকার, তাদের মধ্যে ৪৪১ জনের বয়স পাঁচ বছরের নিচে।
সূত্র : নিউজ ১৮