ইসরাইল-ইরান বিরোধ মিটে যাচ্ছে?
ইসরাইল-ইরান বিরোধ মিটে যাচ্ছে? - ছবি সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যে বড় একটি পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চলছে বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি শতকের প্রথম দশকের শেষ দিক থেকে এই পরিবর্তনের অনেক বিষয় দৃশ্যমান হয়ে উঠে। যুক্তরাষ্ট্রের ওবামা প্রশাসনের সময় আরব বসন্তের সূচনা হয়। এর প্রতি বিপ্লবের ঘটনাও একই প্রশাসনের সময় ঘটে। এর পর আমেরিকার ক্ষমতায় আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প শাসনের প্রভাব সম্ভবত সবচেয়ে বেশি পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। এ সময় ইসরাইল-ফিলিস্তিন এবং ইসরাইল- আরব রাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন এক অবস্থা তৈরি হয়।
ওবামা প্রশাসনের সময়কার আরব বসন্ত ও এর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া ছাড়াও অরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল ইরানের সাথে ৬ ক্ষমতাধর জাতির পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর। এ সময় ইরানের এক ধরনের আধিপত্য ভীতি মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ে। মিসরীয় পণ্ডিত হাসনাইন হাইকল তখন বলেছিলেন মধ্যপ্রাচ্যে ইরানকেন্দ্রিক এক প্রভাব বলয় তৈরি হতে যাচ্ছে। তিনি মিসরীয় শাসকদের ইরানের সাথে যোগসূত্র তৈরি করার পরামর্শ দেন।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সেই ধারা আর থাকেনি। যে ধারা অনুসারে ধারণা করা হচ্ছিল মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের সাথে ইরানের একটি অন্তরালের সমঝোতার মাধ্যমে তেহরানকে পশ্চিম এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে দেয়া হবে। ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর ইরানের প্রভাব সৃষ্টি এবং সিরিয়ায় পতনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছার পরও বাশার আসাদের কর্তৃত্বকে ধরে রাখা, ইয়েমেনে হাউছিদের উত্থানের সুযোগ সৃষ্টি- এসবকে এর সাথে সংশ্লিষ্ট বলে বিশ্বাস করা হয়।
বাইডেন আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার পর এই প্রক্রিয়ায় ট্রাম্প শাসনে যে ছেদ পড়েছিল সেটি আবার শুরু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে ইরানের সাথে চীনের ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তির পর সেই প্রক্রিয়া সামনে এগুচ্ছে কিনা তা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়। এখন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তেহরানের আবার আলোচনা শুরু হয়েছে। এর আগে ইরাকের সর্বোচ্চ শিয়া ধর্মীয় নেতার সাথে পোপের তাৎপর্যপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঠিক এ সময়টাতে একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ লেখা প্রকাশ হয় কয়েকটি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়।
এটি চীনের সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির মিডিল ইস্ট স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. ফ্যান হাংডারের (FAN HONGDA) লেখা। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি বুঝার জন্য এই লেখার সুপ্ত বার্তাগুলো পাঠ করা প্রয়োজন। এর সুপ্ত বক্তব্যটি হলো নিজের সক্ষমতার অতিপ্রকাশ অনেক সময় শক্তিক্ষয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কৌশল ও নতি শিকার কখনো এক জিনিস নয়। আহমাদিনেজাদ প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ইসরাইলকে অস্তিত্বহীন করা ইরানের উদ্দেশ্য হিসেবে প্রকাশ করা হয়। অথচ ইহুদিদের সাথে ইরানের পূর্বসুরি পারস্য সাম্রাজ্যের শত্রুতার সম্পর্ক ছিল না। শেলজুক অথবা উসমানীয় খেলাফত যাদের অধীনে ছিল এখনকার ইসরাইলি ভূখণ্ড তাদের সাথে পারস্যের সুসম্পর্ক ছিল না। যে ক্রুসেড জেরুসালেমকে কেন্দ্র হয়েছে তার কোনোটার নেতৃত্বে শিয়া ধারার নেতারা ছিলেন না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে বা পরে ইহুদি বিদ্বেষ পারস্য শাসকদের মধ্যে কোনোভাবে আসেনি।
এখন হাউছিদের ক্ষেপণাস্ত্র মারা হচ্ছে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ এবং দেশটির তেল ক্ষেত্রগুলোতে। এটি হাউছিদের উপর বিমান হামলার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তবে এই পদক্ষেপ ইসরাইলের চেয়েও সৌদি আরবকে ইরানের বড় শত্রুতে পরিণত করছে। সৌদি আরব নিজের নিরাপত্তার জন্য ইসরাইলি বৈরিতার বিষয়টি বিসর্জন দিতে চাইছে। অথচ সৌদি নেতৃত্বাধীন সুন্নি রাষ্ট্রগুলো ৫০ থেকে ৯০-এর দশক পর্যন্ত ফিলিস্তিন স্বার্থের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ অনেক ভূমিকা পালন করেছে। ইরানের শক্তিমত্তা অর্জনের জন্য ইসরাইল বৈরিতা কতটা নিজেদের স্বার্থে কাজে আসছে সেটি বিবেচনা করার সময় এসেছে বলে ইরানিদের ভাবনায় নিয়ে আসার চেষ্টা হচ্ছে।
এই ভাবনায় আরব সুন্নিদের সাথে ইরানের সমঝোতার বিষয় নেই। রয়েছে ইসরাইলকে ইরানের স্বীকৃতি দেয়া এবং এই দেশটির সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নেয়া। পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনার গোপন দিকটি সম্ভবত এখানে। ইরানকে যত শক্তিধর হিসেবে তুলে ধরে শত্রুরা আঘাত হানছে বাস্তবের অবস্থা যে সে রকম নয় তা বেশ খানিকটা স্পষ্ট হয় ইরানি পরমাণু স্থাপনা এবং বিজ্ঞানীদের উপর অব্যাহত আঘাতের পরও তার কোনো জবাব দানে অক্ষমতায়। এটি অক্ষমতা না হয়ে সমঝোতার অংশও হতে পারে। এই কারণেও সিরিয়ায় ইরানি স্বার্থে আঘাত করার পাল্টা কোনো ব্যবস্থা হয়তো এখনো দেখা যাচ্ছে না। হাউছিদের ক্ষেপণাস্ত্র রিয়াদে আঘাত করছে। কিন্তু হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র তার চেয়ে অনেক কাছে তেলআবিবে পাঠানোর চেষ্টা নেই। নেতানিয়াহুর কথায় তো মনে হয় তারা ইরানের পুরো পরমাণু প্রকল্প গুঁড়িয়ে দেবার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু ইরানের তাতে ভাবান্তর নেই।
বাইডেন প্রশাসন সম্ভবত সেটি না করে ইরানের সাথে ইসরাইলের সমঝোতা প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। নেতানিয়াহু এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন কতটা করেন সন্দেহ রয়েছে। ইসরাইলে নেতানিয়াহুকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যদি তার সরকার গঠনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে প্রতিপক্ষের হাতে এ দায়িত্ব যায় তবে ইসরাইল-ইরান বোঝাপড়া আরো দ্রুত সামনে এগুবে বলে মনে হয়। নেতানিয়াহু অবশ্য বাইডেনের দৃষ্টিভঙ্গি মেনে নিয়ে তার অবস্থান পাল্টাতেও পারেন।
যাই হোক মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থা পাল্টানোর এই বিষয়টি উপলব্ধি করতে ফ্যান হাংডারের লেখাটি হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ। এটি বিবেচনায় লেখাটির হুবহু বাংলা অনুবাদ নিচে প্রকাশ করা হলো। আশা করি পাঠকরা লেখাটির গভীরতা ও তাৎপর্য উপলব্ধি করবেন-
ইরান-ইসরাইল দ্বন্দ্ব এবং আত্মক্ষতি
কোন দেশ বর্তমানে ইরানকে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করে? ইসরাইল অবশ্যই এর শীর্ষ তিন দেশের মধ্যে রয়েছে। বর্তমানে কোনো দেশ সবচেয়ে বেশি মনে করছে জবরদস্তিমূলকভাবে ইরান আক্রমণ করবে? এটা যে ইসরাইল তাতে সন্দেহ নেই।
২০২১ সালের মার্চের গোড়ার দিকে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে ইসরাইলি সেনাবাহিনী ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার পরিকল্পনাটিকে আপডেট করছে এবং ইরানের পারমাণবিক উন্নয়ন রোধে স্বতন্ত্রভাবে পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আসলে, ইসরাইল বারবার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আক্রমণ করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমরা সিরিয়ায় তথাকথিত 'ইরানি লক্ষ্য'-এর উপর ইসরাইলের সামরিক হামলাও দেখেছি।
ইরানের সাথে বৈরিতা এই মুহূর্তে ইসরাইলে একটি সামাজিক ঐকমত্য। আমি যখন ইসরাইলে ছিলাম তখন আমি স্পষ্টভাবে ইরান ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি দেশটির চরম অবিশ্বাস অনুভব করেছি। ইসরাইলিরা সাধারণভাবে বিশ্বাস করে যে ইরানের পারমাণবিক বিকাশের চূড়ান্ত লক্ষ্য পারমাণবিক অস্ত্র প্রাপ্তি।
কয়েক বছর আগে, আমি ইসরাইলে একটি একাডেমিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছি। সম্মেলনে অংশ নেয়া ইসরাইলি পণ্ডিত ও সাবেক সামরিক নেতারা ইরানের পারমাণবিক বিকাশের বিষয়ে তাদের বড় রকমের উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন এবং তারা আশঙ্কাও করেছিলেন যে ইরানের পদক্ষেপগুলো মধ্যপ্রাচ্যে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আমি ইসরাইলি অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করলাম, যদি ইসরাইল তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেয়, তাহলে ইরান কি পারমাণবিক উন্নয়ন বন্ধ করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের পারমাণবিক প্রতিযোগিতা বন্ধ হবে?
আমার প্রশ্নটি স্পষ্টতই ইসরাইলি অংশগ্রহণকারীদের স্তম্ভিত করেছে, যারা এই ইস্যুতে একটি অবিশ্বাস্য রকমের আবহ তৈরি করেছিল এবং এ নিয়ে হায় হুতাশ করেছিল। এক সাবেক সামরিক জেনারেল এর জবাব দিয়ে বলেছিলেন যে 'ইসরাইল ইরান থেকে আলাদা।' তিনি বলেছিলেন, "ইসরাইলের পারমাণবিক উন্নয়ন শান্তির জন্য আর ইরানের পারমাণবিক উন্নয়ন আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকিস্বরূপ। কারণ ইরানি সরকার 'দুবৃত্ত'।"
আমি ইসরাইল ও ইরান উভয়কেই আরো বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। বস্তুনিষ্ঠভাবে বলতে গেলে, ইসরাইল গুরুতরভাবে 'ইরানি হুমকি'কে অতিরঞ্জিত করেছে। ইরানি কর্মকর্তারা যদিও প্রায়ই ইসরাইলবিরোধী মন্তব্য করেন, বাস্তবে ইরানে বর্তমানে ইসরাইল বিরোধী সামাজিক ঐকমত্য সেভাবে নেই।
নেতানিয়াহুর কাহিনী
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার ওই গল্পটির উল্লেখ করেন যে প্রাচীন পার্সিয়ান রাজা সমস্ত ইহুদিকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এই গল্পটি বাইবেলে স্পষ্টভাবে লেখা হয়েছে। এটি ছিল ইহুদিদের আরব শত্রু যারা পারস্যের রাজার সামনে ইহুদিদের অপবাদ দিয়েছিল। সত্যটি আবিষ্কার হবার পর, পারস্য রাজা কেবল ইহুদিদের হত্যা থেকে বিরত থাকেননি তাই নয়, যিনি ইহুদিদের অপবাদ দিয়েছিলেন সেই কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ডও দিয়েছিলেন।
ইতিহাসের কথা বলতে গেলে, ইহুদিদের মনে রাখা উচিত যে গ্রেট সাইরাস গ্রেফতারকৃতদের 'ব্যাবিলনীয়দের মুক্ত করেছিলেন', যা বাইবেলে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এছাড়াও, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, ফ্রান্সে ইরানি কনস্যুলেট নাৎসিদের অত্যাচারের মুখোমুখি ইহুদিদের রক্ষা করেছিল। দুই হাজার বছরেরও বেশি দীর্ঘ সময় ধরে, পারস্য ও ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে বড় কোনো বিরোধ ছিল না।
সেক্ষেত্রে ইসরাইল কেন ইরানকে এত ঘৃণা করে? কারণ ইরান কখনো ইসরাইল রাষ্ট্রের বৈধতার স্বীকৃতি দেয়নি। বলা যেতে পারে যে ইসরাইলের সাথে ইরানের শত্রুতা ইরানের প্রতি ইসরাইলের ঘৃণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফিলিস্তিনের লেন্স
ইরানে ইসলামী বিপ্লবের শীর্ষস্থানীয় চিন্তাভাবনা আসে ইসলাম থেকে। যেহেতু এটি 'ইসলামী' বিপ্লব ছিল, তাই ইরান বিপ্লবীদের মধ্য প্রাচ্যের ইসলামি বিশ্বের প্রধান উদ্বেগগুলোর ব্যাপারে সেই সময়ের প্রতিক্রিয়া জানানো দরকার ছিল। এইভাবে, ফিলিস্তিন ইরানের ইসলামি বিপ্লবী নেতাদের ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। অনেক আরব দেশের মতো দেশটি ইসরাইলকে একটি স্বাধীন ও আইনি দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে।
স্পষ্টতই, ফিলিস্তিনের কারণে ইরান ইসরাইলকে ঘৃণা করে। তবে ফিলিস্তিন আজ ৪০ বছর আগের ফিলিস্তিন থেকে আলাদা। যদিও ফিলিস্তিন ইসরাইলকে একটি বৈধ দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং অনেক আরব দেশ ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে অথচ ফিলিস্তিনের কারণে ইরান এখনো ইসরাইলের বৈধতাকে অস্বীকার করছে। এটা কি সত্যিই যুক্তিযুক্ত হচ্ছে? ইসরাইলের প্রতি নিম্নলিখিত নীতিটি ইরানের গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।
ইরান যদি ইসরাইলের প্রতি তার বৈরী নীতি বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখে, তবে ইসরাইলের ইরানের প্রতি বিদ্বেষের অবসান হবে না, ইসরাইল আরব দেশগুলির সাথে আরও সহযোগিতা করার জন্য 'ইরানি হুমকি' ব্যবহার করবে এবং ইসরাইল ইরানকে দমন করার জন্য আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিতে থাকবে।
ইরান যদি ইসরাইলের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে তবে ইসরাইল কেবল ইরানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ হবে না, বরং ইসরাইল আরব দেশগুলিকে ইরানের বিরুদ্ধে একত্রিত হতে বাধা দেবে। ইহুদিদের অন্তরে গভীর এবং মধ্য প্রাচ্যে ইসরাইলের প্রথম আদর্শ অংশীদার আরব বিশ্ব নয় (পড়ুন ইরান)।
আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ইরান-ইসরাইলের সম্পর্কের উন্নতি সম্ভবত ধীরে ধীরে ইরান-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে। সর্বোপরি, ইরান-ইসরাইল সম্পর্ক এবং ইরান-মার্কিন সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
সবার জন্য উপকার
সংক্ষেপে, ইসরাইলের প্রতি ইরানের মনোভাব সহজ করা ইরানের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে উপকারী। তদুপরি, ইসরাইলের সাথে ইরানের সম্পর্কের উন্নতি ফিলিস্তিনের ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্যও আরও সহায়ক হবে।
এখনও অবধি, ইরান এবং ইসরাইল ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। পারস্পরিক শত্রুতা এই দুটি দেশের জন্য আরও বেশি নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আসছে।
বর্তমানে ইসরাইল সত্যি গুরুতরভাবে 'ইরানের হুমকি'কে অতিরঞ্জিত করেছে। ইসরাইলের প্রতি ইরানের বৈরিতাও নিজের উপকারে আসে না। উভয় দেশকে তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয় পুনর্বিবেচনা করা দরকার।