পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ
পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ - ছবি সংগৃহীত
বাংলাদেশে ১৪ এপ্রিল থেকে দেশব্যাপী এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন শুরুর আগে আগামীকাল ও পরশু অর্থাৎ ১২ এপ্রিল এবং ১৩ এপ্রিল দেশে প্রথম দফা লকডাউনের ধারাবাহিকতা চলবে।
সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোববার এ কথা জানিয়েছেন।
সরকারের দেয়া প্রথম দফা এক সপ্তাহের লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ ১১ এপ্রিল।
প্রথম দফা ঢিলেঢালা লকডাউনে চালু ছিল গণ-পরিবহন, দোকানপাট ও শপিংমল, বইমেলা, কলকারখানা এবং গার্মেন্টস কারখানা।
বন্ধ ছিল দূরপাল্লার যানবাহন ও অভ্যন্তরীণ রুটের বিমান চলাচল।
পরবর্তী ঘোষণা আসার আগে, আগামী দুই দিন কি তাহলে দূরপাল্লার যানবাহন, লঞ্চ এবং অভ্যন্তরীণ রুটের বিমান চলবে?
কাদের বলেছেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে দূর পাল্লার যাত্রী পরিবহন।
সরকারের প্রভাবশালী এই মন্ত্রী রোববার এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান, যা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'সোমবার এবং মঙ্গলবার যথারীতি শুধুমাত্র দেশের সিটি কর্পোরেশন এলাকায় শর্তসাপেক্ষে সমন্বিত ভাড়ার অর্ধেক আসন খালি রেখে গণ-পরিবহন চলবে এবং দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।'
তিনি বিআরটিসিসহ পরিবহন মালিক শ্রমিক সংগঠনসমূহকে সরকারি নির্দেশনা মেনে পরিবহন চালানোর অনুরোধ জানান।
প্রথম দফা লকডাউনের মেয়াদ শেষ এবং ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয় নিয়ে রোববার বিকেলে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হবার কথা রয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় সর্বাত্মক লকডাউন বিষয়ক একটি প্রজ্ঞাপন জারি হবে--এমন আভাস দিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বুধবার থেকে যদি পূর্বঘোষণা অনুযায়ি 'কঠোর লকডাউন' শুরু হয়ে যায় তাহলে স্পষ্টতই দূরপাল্লার যানবাহন আর চালু হবার সুযোগ থাকছে না।
বিশেষজ্ঞরা গত কয়েক দিন ধরে বলে আসছেন, যেভাবে এ দফায় লকডাউন চলছে, তাতে দৃশ্যত সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।
এর ফলাফলও দেখা যাচ্ছে, মানে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শনিবারের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৭৭ জন মানুষ মারা গেছেন, যা এখন পর্যন্ত একদিনে মারা যাওয়া সর্বোচ্চ সংখ্যক ব্যক্তি।
এর আগে ৯ এপ্রিল বাংলাদেশের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, সংক্রমণের উর্ধ্বগতি ঠেকাতে ১৪ এপ্রিল থেকে পুরোদেশে সাত দিনের 'কঠোর লকডাউন' শুরু হবে।
ফরহাদ হোসেন বলেছেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী এই কঠোর লকডাউন দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
এই সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিতসহ সব ধরণের অফিস এবং একই সাথে কল কারখানাও বন্ধ থাকবে।
কঠোর লকডাউনের সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, লকডাউন যাতে কার্যকর করা যায়, সেজন্য হতদরিদ্র মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে দেশের সব ইউনিয়ন ও উপজেলায় সাড়ে পাঁচ শ' কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি