করোনার নতুন ঢেউ শিশুদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক!
করোনার নতুন ঢেউ শিশুদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক! - ছবি : সংগৃহীত
কোভিড-১৯-এর আতঙ্কের মাঝেই ভারতে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। ফলে, ভারতে ফের উধ্বর্মুখী করোনা গ্রাফ। আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে, মারাও যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউ বাচ্চাদের জন্য সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে। তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বাচ্চাদের জন্য কেন মারাত্মক এবং এর লক্ষণ কী।
করোনার প্রথম ঢেউ বাচ্চাদের জন্য কম বিপজ্জনক ছিল। ওই সময়ে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বাচ্চাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কম ছিল। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউ বাচ্চাদের জন্য ভীষণ ক্ষতিকারক। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করছে যে এটি শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দিচ্ছে।
কোভিডের দ্বিতীয় ভেরিয়েন্ট কী বাচ্চাদের জন্য বিপজ্জনক?
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মানুষের মধ্যে এক বছর আগের আতঙ্ক ফিরিয়ে দিয়েছে৷ বিশেষজ্ঞদের দাবি, করোনার দ্বিতীয় ওয়েভে গতবারের তুলনায় এবারে বাচ্চারা অনেক বেশি মাত্রায় সংক্রমিত হচ্ছে৷ এটি কেবলমাত্র ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে তুলছে না, পাশাপাশি এটি রিসেপ্টরস-এর সাথে মিলে শরীরে আরো দ্রুত ছড়াচ্ছে। তাই পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরো বেশি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটি বাচ্চাদের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
কাদের মধ্যে বেশি সংক্রমণ হচ্ছে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২-১৬ বছর বয়সের বাচ্চারা বেশি সংক্রামিত হচ্ছে। জার্নাল অফ ট্রপিকাল পেডিয়াট্রিক্স-র রিপোর্ট অনুসারে, তিনজনের মধ্যে এক বাচ্চার মধ্যে এর লক্ষণ ও এর প্রকোপ অধিক হচ্ছে। এক্ষেত্রে, এটি হালকাভাবে নেয়ার পরিবর্তে বাচ্চাদের নিয়ে আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
বাচ্চাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের জন্য কোন কারণগুলো দায়ী?
বিশেষজ্ঞদের মতানুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এ বছর বাচ্চাদের মধ্যে সংক্রমণ অধিক হওয়ার পিছনে অনেক কারণ আছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হলো প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা। স্কুল খোলার ফলে বাচ্চারা বেশি সংক্রামিত হচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ভেরিয়েন্ট অনেক বেশি বিপজ্জনক, এটি বাচ্চাদের দ্রুত সংক্রামিত করছে এবং বাচ্চাদের এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেওয়ার অনুমতি নেই, যার কারণে সংক্রমণের ঘটনা দ্রুত বাড়ছে।
হাভার্ড হেলথ রিপোর্ট অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সময় অনেক বাচ্চার কোনো লক্ষণই প্রকাশ পায় না এবং অনেকের মধ্যে আবার কিছু লক্ষণ দেখা যায়, যেমন - কাশি, হালকা জ্বর, সর্দি, ক্লান্তি, ইত্যাদি।
তবে সম্ভাব্যভাবে মাল্টি সিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিনড্রোম (MIS-C) বাচ্চাদের মধ্যে দেখা দিতে পারে, যা হার্ট এবং শরীরের অন্যান্য অংশের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক MIS-C এর লক্ষণগুলো
* দীর্ঘদিন ধরে জ্বর
* ব়্যাশ
* চোখ লাল
* পেট ব্যথা
* গলায় ব্যথা
* ঠোঁট লাল হওয়া ও ঠোঁট ফাটা
* জিভ অতিরিক্ত লাল হওয়া
* বমি বা ডায়রিয়া
* হাত-পা ফোলা
* বিরক্তি এবং ক্লান্তি
* শরীর ও জয়েন্টে ব্যথা।
সূত্র : বোল্ডস্কাই