ভারতে টিকা–নেয়ারাই ভাইরাস ছড়াচ্ছে, যেকোনো মুহূর্তে করোনা বিস্ফোরণ!
ভাইরাস - ছবি : সংগৃহীত
ভারতের মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, বেঙ্গালুরুতে দ্রুত হারে ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারে, নেতাদের জনসভায় ব্যাপক ভিড়৷ কী হতে চলেছে ভোটের পর?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এখন ঘন ঘন পশ্চিমবঙ্গে আসছেন সভা করতে৷ সেই সভায় নেতারা নিরাপদ দূরত্বে, সুরক্ষা–প্রাচীরের পিছনে এবং মাস্ক পরে থাকলেও সভায় উপস্থিত জনতার প্রায় কারো মুখেই মাস্ক নেই৷ নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব যে বজায় রাখা হচ্ছে না, সে কথাও বলাই বাহুল্য৷ মমতা ব্যানার্জির সভাতেও ভিড়ের থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকছেন নেতা–নেত্রীরা৷ কিন্তু সমর্থক, কর্মীদের ভিড়ে সে সবের বালাই নেই৷ রাস্তায় মিছিল হচ্ছে, রোড–শো হচ্ছে প্রায় প্রতিদিন, পথসভায় ভিড় করছে মানুষ, কিন্তু কাউকে দেখেই মনে হচ্ছে না, সারা দেশে কোভিড সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমশ সঙ্গীন হয়ে উঠছে৷ গত বছর এই সময়ে যখন প্রথম দেশে কোভিড ছড়াতে শুরু করেছিল, তখন যে হারে করোনা হচ্ছিল, আজকে তার হার অনেক বেশি৷ বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ সোয়া লাখ লোক কোভিড আক্রান্ত হয়েছে৷
এমন পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার পর এক ‘টিকা উৎসব'–এর ডাক দিয়েছেন৷ বলেছেন, আগামী তিন–চার দিনে যত বেশি সম্ভব মানুষকে যেন কোভিডের টিকা দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থা করতে৷ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও দাবি তুলেছেন, দেশের সব নাগরিককে যেন অবিলম্বে টিকা দেয়া হয়৷ কিন্তু এই গণ টিকাকরণের একটা উল্টো মতও এখন শোনা যাচ্ছে৷ বিজ্ঞানীদের একাংশ বলছেন, এখন যে কোভিড ভাইরাস আরো বেশি শক্তিশালী, আরো প্রাণঘাতী চেহারা নিয়েছে, তার কারণ, টিকা–নেয়া লোকেদের শরীর থেকেই এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে, যা কোভিড প্রতিষেধকের ক্ষমতাকেও হারিয়ে দেয়ার মতো শক্তি সঞ্চয় করে নিয়েছে। সেক্ষেত্রে কী হবে পশ্চিমবঙ্গে, ভোটের পর?
কলকাতার ‘স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন', যে প্রতিষ্ঠান বহু বছর ধরে সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে, তার প্রাক্তন অধিকর্তা ডাঃ অমিতাভ নন্দী আশঙ্কা প্রকাশ করলেন, যে ভোটের পর হয়ত একটা কোভিড বিষ্ফোরণ ঘটবে রাজ্যে৷ যেহেতু নির্বাচনি জনসভা, মিছিল–মিটিংয়ের সুবাদে প্রতিদিন লাখ লাখ লোক সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন৷ অথবা হয়ত তেমনটা হবে না, যেহেতু গোটা দেশেরই প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ কোভিড পরীক্ষা কম করিয়ে সংক্রমণের হার কম করে দেখানোর দুর্নীতিতে বিশ্বাসী৷ তবে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে ডা. নন্দী আরো জরুরি একটা প্রশ্ন তুলেছেন৷ যে, তথাকথিত যে ভ্যাকসিন ভারতে দেয়া হয়েছে, তার কার্যকারিতা, তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার স্থায়িত্ব, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি- এগুলো কি যথেষ্ট পরীক্ষিত? সেই তথ্য কোথায়? কোভিডের টিকা নেয়ার পরও সংক্রামিত যে সব মানুষ, যারা মারা যাচ্ছেন, তাদের শরীরে কি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, যে কোথায় সমস্যা হল? কেন তাঁরা মারা গেলেন?
ডাঃ অমিতাভ নন্দী সাফ জানালেন, ‘আমি ভ্যাকসিন নিইনি, নেবও না। তথাকথিত ভ্যাকসিন। প্রথম কথা আমি এটাকে ভ্যাকসিন বলে নাম দিতে রাজি নই৷ ভ্যাকসিন তাকেই বলা হবে, যা বেশ কয়েক বছরের ধারাবাহিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গেছে। তার পরে, যে মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে, আমি যদি জীবন্ত ভাইরাস তার নাকে–মুখে ঢুকিয়ে দিই, যেটাকে চ্যালেঞ্জ এক্সপেরিমেন্টেশন বলে, তাতে যত দিন না সাফল্য আসছে, ততক্ষণ এটা প্রতিষেধক সুরক্ষা দেবে, এমন আমি বলতে পারি না৷'
ডা. নন্দীর উদ্বেগ, কারা ভ্যাকসিন নিতে পারবেন, আর কাদের নেয়াটা ঠিক হবে না, এটাও কর্তৃপক্ষ বলতে পারছে না৷ ভ্যাকসিন নেওয়ার পর যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, সে নিয়েও কোনো গবেষণা হচ্ছে না৷ ফলে আগামী দিন ঠিক কী হতে যাচ্ছে, তার চেহারা কতটা ভয়ঙ্কর হবে, এ নিয়ে গভীর আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে