রাফাল নিয়ে বড় ধরনের বিপাকে ভারত!
রাফাল জঙ্গি বিমান - ছবি : সংগৃহীত
ফ্রান্সের কাছ থেকে রাফাল জঙ্গি বিমান কিনে উল্টা বিপাকে পড়েছে ভারত সরকার। পাকিস্তান ও চীনকে সামনে রেখে এই অত্যাধুনিক বিমান কিনেছিল ভারত। ফ্রান্স থেকে বিমানগুলো আসতেও শুরু করেছে। বেশ কয়েকটি বিমান বিভিন্ন স্থানে মোতায়েনও করা হয়েছে। কিন্তু তবুও নতুন করে বিপাকে পড়েছে ভারত সরকার এই বিমান নিয়ে।
কলকাতাভিত্তিক সংবাদ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাফালে বিতর্কে যেন কিছুতেই ইতি পড়ছে না। সুপ্রিম কোর্টের ক্লিনচিটের পর যে বিতর্ক ২০১৯ সালেই ধামাচাপা পড়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছিল, তা যেন পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে মিডিয়াপার্ট নামের ফ্রান্সের এক সংবাদমাধ্যমের একের পর এক বিস্ফোরক দাবিতে। এর আগে ওই সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছিল রাফালে চুক্তিতে ভারতীয় মধ্যস্থতাকারীকে দশ লক্ষ ইউরো ‘উপহার’ দিয়েছিল ফরাসি সংস্থা দাসল্ট । এবার আরো বিস্ফোরক দাবি করেছে ওই সংবাদমাধ্যম। তাদের দাবি, রাফালে চুক্তির আগে কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোপন নথি ফ্রান্সের সংস্থাটির কাছে ফাঁস করেছিলেন চুক্তির মিডলম্যান সুষেন গুপ্তা।
মিডিয়াপার্ট নামের ওই ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমের দাবি, ফ্রান্সের সংস্থা দাসাল্ট ও তাদের সঙ্গী সংস্থা থেল বিদেশের একাধিক অ্যাকাউন্ট এবং ভুয়া অকেজো সংস্থার মাধ্যমে মোট ১৪৬ লাখ ডলার ভারতীয় মধ্যস্থতাকারী সুষেন গুপ্তাকে দিয়েছে। সিঙ্গাপুরের একাধিক অকেজো সংস্থার মাধ্যমে এই টাকা সুষেন এবং তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দিয়েছে দাসাল্ট ও থেল। এর পরিবর্তে সুষেন গুপ্তা ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোপন তথ্য তুলে দিয়েছে দাসাল্টের হাতে। সুষেনের দেয়া তথ্য হাতে পাওয়ায় ভারত সরকারের সঙ্গে রাফালের দর কষাকষিতে সুবিধা পেয়েছে ফ্রান্সের সংস্থাটি। আসলে, রাফালের দর কষাকষির ক্ষেত্রে ভারত সরকারের প্রতিনিধিরা কী অবস্থান নেবেন, এবং কতটা নমনীয় হবে, সুষেন গুপ্তা ওই তথ্য আগেই দিয়ে দেয় ফ্রান্সের সংস্থাটিতে। ফলে তারা, সেইমতো এই ফাইটার জেটগুলোর দাম নিজেদের পক্ষে বাড়িয়ে নেয় বলে অভিযোগ ফ্রান্সের এই সংবাদমাধ্যমটির। মিডিয়া পার্টের দাবি, তাদের হাতে এই গোটা কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত যাবতীয় নথি আছে। দাসাল্ট কীভাবে সুষেন গুপ্তাকে টাকা দিল, ওইসব নথিও আছে তাঁদের হাতে।
সংবাদ প্রতিদিনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মিডিয়াপার্টের এই দাবি যদি সত্যি হয় তাহলে কংগ্রেস সংসদ সদস্য ও দলটির সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী এই চুক্তিতে বড়সড় দুর্নীতির যে অভিযোগ করছিলেন, তা আংশিকভাবে হলেও সত্যি প্রমাণিত হবে। যদিও, দাসাল্টের পক্ষ থেকে রাহুলের এই অভিযোগ ইতিমধ্যেই অস্বীকার করা হয়েছে।
ওই সংস্থাটি জানিয়েছে, ভারত সরকারের সঙ্গে তাদের চুক্তিতে নিয়মভঙ্গের যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। দাসাল্ট ফ্রান্স সরকারের যাবতীয় নিয়ম মেনেই ভারতের সঙ্গে এই চুক্তি করেছে। তাছাড়া, এই চুক্তির আলোচনা হয়েছে সরাসরি দুই সরকারের মধ্যে, তাই এই ধরনের নিয়মভঙ্গের প্রশ্নই ওঠে না।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন