বিমানবন্দরে দুধের শিশুকে ফেলে কেন পালালেন মা
আর্মড পুলিশের এক সদস্যের কোলে উদ্ধার করা শিশুটি - ছবি : বিবিসি
কর্মকর্তারা বলছেন, শিশুটির বয়স আনুমানিক আট মাস। শুক্রবার সকাল আটটার পরে সে যখন বিমানবন্দরের ভেতরে একটি চেয়ারে বসে ফিডারে দুধ খাচ্ছিল তখন পুলিশের নজরে আসে।
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক শিশুকে অভিভাবকবিহীন অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কর্মকর্তারা বলছেন, শিশুটির বয়স আনুমানিক আট মাস। শুক্রবার সকাল আটটার পরে সে যখন বিমানবন্দরের ভেতরে একটি চেয়ারে বসে ফিডারে দুধ খাচ্ছিল তখন পুলিশের নজরে আসে।
অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির কোনো অভিভাবককে পায়নি পুলিশ বিমানবন্দরে দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন।
আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, রাত দুইটার দিকে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে এক নারী যাত্রী আসেন এবং এরপর তিনি ৫ নং বেল্ট থেকে মালামাল সংগ্রহ করেন।
হোসেন জানান, সেই নারীর সাথে এই শিশুটি ছিল। শিশুটিকে নিয়ে সে নারী সকাল পর্যন্ত অ্যারাইভাল বেল্টের পাশেই শিশুটিকে নিয়ে বসে ছিলেন।
"সকাল পর্যন্ত সে নারী বিমানবন্দরেই ছিলেন। আটাটার দিকে শিশুটিকে ফেলে তিনি চলে যান। এরপর আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করি," বলেন হোসেন।
যে নারী এই শিশুটিকে ফেলে চলে গেছেন তিনি সৌদি আরবে কর্মরত অবস্থায় একটি বিয়ে করেছিলেন বলে দাবি করেন আরেকজন যাত্রীর কাছে।
ঐ যাত্রীর নাম আসমা। পুলিশ তার সাথে কথা বলেছে।
পুলিশ ধারণা করছে, হয়তো লোকলজ্জার ভয়ে শিশুটিকে সাথে না নিয়ে এয়ারপোর্টে রেখেই চলে যান সে নারী।
আসমা পুলিশকে বলেছে, "আমি চারটার দিকে নামছি। তখন থেকে ঐ বাচ্চাকে ওখানে ঘুমিয়ে আছে। আর ওর মা ওখানে দাঁড়ায়ে আছে।"
"বলছে ও সৌদি আরবে ছিল। বলছে, আপা সৌদি আরবে আমি বিয়ে করছি। আমি বলছি আপনার এটা করা উচিত হয়নি। বলতে বলতে কেঁদে দিছে।"
যে নারী এই শিশুটিকে বিমানবন্দরে রেখে চলে গেছেন তাকে এরই মধ্যে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
শিশুটি এখন পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর জানিয়েছেন, এখন শিশুটিকে দত্তক দেবার ব্যবস্থা করা হবে।
"দত্তক নেবার জন্য এরই মধ্যে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যাচাই-বাছাই করে ভালো একটি জায়গায় দত্তক দেবার কথা আমরা চিন্তা করছি, " বলছিলেন আলমগীর।
তিনি বলেন, "সে নারী বাধ্য হয়তো দেশ ফিরে তার এই সন্তানের কথা প্রকাশ করতে চাননি। তিনি বাধ্য হয়েই এ সন্তানকে ফেলে গেছেন। এখন জোর করে শিশুটিকে আবারো তার কাছে দিলে ভালো হবে না।"
পুলিশ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে সে নারীর নাম, ঠিকানা এবং অবস্থান জানা গেছে। কিন্তু সেটি প্রকাশ করা হবে না।
সূত্র : বিবিসি