কোমল পানীয় থেকে হৃদরোগ!
কোমল পানীয় থেকে হৃদরোগ! - ছবি সংগৃহীত
জাম্পেস খাওয়ার পর তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে কোমল পানীয় বা কোকের গ্লাসে চুমুক দেননি এমন কেউ কি আছেন? দিনে ৫-৬ গ্লাস কোক পান করেন এমন ব্যক্তিরও দেখা মিলবে হরহামেশাই। কিন্তু এটা কি স্বাস্থ্যসম্মত?
সম্প্রতি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে কোক বা কোমল পানীয় পান কিন্তু ক্ষতিকর। এ কারণে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক ও হৃদরোগ। হার্ভাড স্কুল অব পাবলিক হেলথের নিউট্রিশন ও এপিডেমিওলজির অধ্যাপক ফ্রাঙ্ক হু-এর নেতৃত্বে একদল গবেষক দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এ বিষয় নিয়ে গবেষণা করেন।
তাদের গবেষণায় এসেছে যারা দিনে এক গ্লাস কোমল পানীয় পান করেন তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ২০ শতাংশ বাড়ে। ‘সার্কুলেশন’ নামক বিখ্যাত জার্নালে এটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা ২২ বছর ধরে ৪০-৭৫ বছরের প্রায় ৪৫ হাজার পুরুষকে ফলোআপ করেন। প্রতি দুই বছর পর পর তাদের খাবার ও খাদ্যাভাস সম্বন্ধে বিস্তারিত জানা হয়। এতে দেখা যায় এদের মধ্যে প্রায় চার হাজারজন হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছেন।
পরে গবেষকরা তাদের খাদ্যাভাস পর্যালোচনা করে দেখতে পান তাদের বেশির ভাগই কোক পান করেছেন। আরো দেখা গেছে যারা কোক পান করেননি তাদের থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।
- কানাজাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান
কেমন রোগ গাইনোকোমাসটিয়া?
ডা: মো: আব্দুল মান্নান
কোনো কারণে পুরুষের স্তন বৃদ্ধি হলে এটাকে গাইনোকোমাসটিয়া (স্তন বৃদ্ধি) বলে। একটি ছেলে যখন যৌবনে পদার্পণ করে তখন তার টেসটোসটেরন নামে পুরুষ হরমোন জাগ্রত হয়ে পুরুষের অবকাঠামো পুরুষাঙ্গ, অণ্ডকোষ দাড়ি, গোঁফ, পুরুষাঙ্গের চারিদিকে লোম বড় হতে শুরু করে এবং তৎসঙ্গে স্তনও বৃদ্ধি হয়, তবে স্তন যে পর্যন্ত বাড়ে বা যত বড় হয় তার ৭৫ ভাগই ১-২ বছরের মধ্যেই পূর্বের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। প্রায় ৭০ শতাংশ যুবক বালকদের উঠতি বয়সে এই স্তন বৃদ্ধি হতে পারে, ৪০ শতাংশ যুবকের স্তনে কিছু কিছু ব্যথা হতে পারে এবং ৪ শতাংশ যুবকের স্তন থেকে কিছু তরল পদার্থ নিঃসরণ হতে পারে। একজন পুরুষের তিন ধাপে স্তন বাড়তে পারে- একটি নিউবরন অর্থাৎ ছোট বয়সে, দ্বিতীয় যৌবন কালে এবং তৃতীয়ত বৃদ্ধকালে। মূলত পুরুষ হরমোন এবং মেয়ে হরমোন এই দুইয়ের অসামাঞ্জস্য অর্থাৎ পুরুষ হরমোন কমিয়ে মেয়েলি হরমোন বেশি হলে এই গাইনোকোমাসটিয়া হতে পারে।
গাইনোকোমাসটিয়ায় (স্তনবৃদ্ধি) অনেক সময় রোগী মানসিক যন্ত্রণায় ভোগেন। অনেকে এই রোগকে গোপন করে যান। এর ফলে রোগীর অস্বস্তি আরো বাড়তে পারে। এই গাইনোকোমাসটিয়ার অনেক জানা-অজানা কারণ রয়েছে, তার মধ্যে ফিজিওলজিক্যাল বাচ্চাদের পির্ডবার্টি গাইনোকোমাসটিয়া। কিছু ওষুধ আছে এই গাইনোকোমাসটিয়ায় কাজ করতে পারে। যেমন ডাই ইউরেটিস-ইসপাইরোনোলেকটন, ডিগোকসিন, সিমিটিডিন, এন্টিএন্ডোজেন, সিপ্রোটেরন এসিটেড, এনাবলিক স্টেরয়েড, ডিপ্রেশন এর কিছু ওষুধ যেমন এমিট্রিপটাইলিন ইত্যাদি। কিছু জেনেটিক কারণ যেমন ক্রাইন ফিলটার সিন্ড্রম। কিছু রোগে মেয়েলি হরমোন বেড়ে গিয়ে এ ধরনের পরিস্থিতি হতে পারে। তার মধ্যে লিভার সিরোসিস, অণ্ডকোষের টিউমার অকার্যকর, কিডনির রোগ ইত্যাদি। ২৫ শতাংশের ক্ষেত্রে এর কারণ জানা যায় নাই। এই গাইনোকোমাসটিয়া বা স্তন বৃদ্ধি চিকিৎসা হিসেবে প্রধানত দুই ক্যাটাগরিতে পড়ে। একটি হলো মেডিক্যাল চিকিৎসা মাধ্যমে অন্যটি সার্জিক্যাল পদ্ধতির মাধ্যম।
যেহেতু কারণ অনুযায়ী এর চিকিৎসা রয়েছে। তাই এর জন্য যথাশীঘ্র চিকিৎসার পরামর্শ একজন হরমোন বিশেষজ্ঞ বা এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের কাছে যাওয়া দরকার।
লেখক : অধ্যাপক, ডায়াবেটিস অ্যান্ড
অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ
আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা