সন্তানের জন্মের পর মায়ের কেন কান্না পায়, অস্থির লাগে
সন্তানের জন্মের পর মায়ের কেন কান্না পায়, অস্থির লাগে - ছবি সংগৃহীত
মা হওয়ার পরে জীবন অনেকটা বদলে যায় সকলেরই। ব্যস্ততা, নতুনভাবে ভালো লাগা সবই থাকে। তবে তারই সঙ্গে আসে একটি অস্বস্তি। আর তার পরে অনেক সময়েই আসে অবসাদ। কিন্তু অন্য সময়ের অবসাদের থেকে তার ধরন খানিক আলাদা হয় অনেক ক্ষেত্রে।
সাধারণত সন্তানের জন্মের তিন দিনের মাথায় শুরু হয় এই অস্বস্তি। অনেক আনন্দের মধ্যে মাঝেমাঝে কান্না পাওয়া, অতিরিক্ত চিন্তা, খেতে ইচ্ছে না করা, যখন-তখন মনের ভাব পরিবর্তন হওয়ার মতো কিছু সমস্যা দেখা দেয়। আর তার সাথে থাকে নতুন মাতৃত্বের ক্লান্তি। এই ধরনের অবসাদকে ‘পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন’ বলে থাকেন চিকিৎসকেরা।
অনেকেই মনে করেন, সন্তানের জন্মের পরে একসাথে অনেকটা দায়িত্ব এসে পড়ায় কোনো কোনো নারী ওই চাপ সামলাতে পারেন না। কিন্তু জন্ম দেয়ার পরে অবসাদ হওয়া মানে একেবারেই ধরে নেয়া যায় না যে ওই মহিলা মানসিক বা শারীরিকভাবে কমজোর। বরং চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সন্তান হওয়ার পরে মায়ের মধ্যে অবসাদ বা মানসিক চাপের কোনো রকম চিহ্ন দেখা দিলে, সাথে সাথেই সাহায্য নেয়া প্রয়েজন।
বারবার কান্না পাওয়া, খেতে ইচ্ছে না করা, মন খারাপ লাগার সমস্যা হয়। অনেকের সন্তানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হতেও সময় লাগে। কারো ক্ষেত্রে অস্থিরতা বেড়ে যায়। এমনকি, আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে ওঠার আশঙ্কাও দেখা দেয় কিছু ক্ষেত্রে। সদ্য সন্তানের জন্ম নেয়া মায়ের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা দরকার।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
দু’ মিনিট আগে চেয়ার ছাড়লেও বেতন কর্তন
আজ আমার একটু তাড়া রয়েছে...। কিছুটা আগে আমি বেরিয়ে যাব— আর কোনো কথা না বাড়িয়ে চেয়ারটা ছাড়তে পারলেই যেন তিনি বাঁচেন! ‘তিনি’ বলতে হয় সরকারি আপিসের বড়বাবু অথবা সামান্য গ্রুপ ডি কর্মী। দেশ-কাল ভেদে সরকারি কর্মীদের গড়পরতা এটাই কর্মসংস্কৃতি। তবে এবার তাদের সেই নিপাট নির্দ্বিধায় অফিস কেটে পড়া রুখতে কড়া দাওয়াইয়ের বন্দোবস্ত করল জাপান সরকার। হাজিরার বায়োমেট্রিক মেশিনে দু’ মিনিট আগে আঙুল ছোঁয়ালেই বেতন কর্তন! এমন নির্দেশিকায় কর্মীমহলে অসন্তোষ দানা বাঁধা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে নেটদুনিয়ার বাহবা কুড়োচ্ছে জাপান।
জাপানের চাইবা প্রিফেকচারের সরকারি দফতর। বেশ কিছু দিন ধরে সেখানে কর্মসংস্কৃতি প্রায় লাটে উঠেছিল। কর্মীরা ছুটির ঘণ্টা বাজার আগেই চেয়ার ছেড়ে পালাতেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলতি মাসের ১০ তারিখ কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছে, ছুটির নির্ধারিত সময়ের দু’মিনিট আগেও যদি কেউ বায়োমেট্রিকে পাঞ্চ করেন, তাহলে তার বেতন কেটে নেয়া হবে। জারি হওয়া ওই নির্দেশিকা কপালে ভাঁজ ফেলেছে ফুনাবাশি সিটি বোর্ড অব এডুকেশনের কর্মচারীদের।
তবে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা এব্যাপারে একটি সাফাই দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, দপ্তর থেকে বেরনোর নির্ধারিত সময় বিকেল ৫টা ১৫ মিনিট। আর তারা বেরিয়ে গিয়েছেন মাত্র দু’মিনিট আগে। অর্থাৎ ৫টা ১৩ মিনিটে। কারণ অফিসের কাছ থেকেই ৫টা ১৭ মিনিট নাগাদ একটি বাস ছাড়ে। অফিস থেকে বেরিয়ে হাতে চার মিনিট সময় থাকলে সেই বাস ধরার সুযোগ থাকে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে বেরলে বাসটি আর ধরা যায় না। পরের বাসের সময় ৫টা ৪৭ মিনিট। প্রায় আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তাই বাড়ি ফেরার তাড়ায় তারা মাত্র দু’মিনিট আগে বেরিয়ে পড়তেন।
কর্মচারীদের এহেন যুক্তিতে অবশ্য মন গলেনি কর্তৃপক্ষের। দপ্তরের হাজিরা খাতার দায়িত্বে যিনি রয়েছেন, সেই ৫৯ বছরের মহিলা কর্মচারীর দিকেও আঙুল উঠেছে। অভিযোগ, তিনি নাকি কর্মচারীদের আগে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আড়াল করতেন। আর এই অভিযোগে তার আগামী ৩ মাসের বেতনের দশ ভাগের এক ভাগ কেটে নেওয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এরই পাশাপাশি দু’জন কর্মচারীকে লিখিতভাবে সতর্ক করা হয়েছে এবং আরো চারজনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার নোটিস পাঠানো হয়েছে। স্বভাবতই এই পদক্ষেপকে ঘিরে অন্য কর্মচারীরা আতঙ্কে ঢোক গিলছেন।
জাপান বরাবরই সময়ানুবর্তিতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। ওই দেশে এমনও ঘটনা ঘটেছে যে নির্ধারিত সময়ের কয়েক সেকেন্ড আগে ট্রেন ছেড়ে যাওয়ায় সরকারি বিবৃতি প্রকাশ করে যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল। সেখানে সরকারি দফতরের কর্মচারীরাই যদি আগে দফতর থেকে বেরিয়ে যান, তাহলে তাদের ওপর যে বড় কোপ পড়বে সেটাই স্বাভাবিক।
সূত্র : আজকাল