মাছ আর কাঁকড়ায় সয়লাব হতে পারে উপকূল...

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Mar 20, 2021 02:32 pm
মাছ আর কাঁকড়া

মাছ আর কাঁকড়া - ছবি সংগৃহীত

 

সাগরপাড়ের পরিবেশ প্রতিবেশ জীব-বৈচিত্র রক্ষায় কাঁকড়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ন। নদী-সাগরে সুক্ষ্ম ফাঁসের জালের ব্যাপক ব্যবহারে প্রতিদিন নানা প্রজাতির অসংখ্য কাঁকড়া মারা পড়ছে। মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. লতিফুর রহমান এর মতে, এই জালে কাঁকড়ার সঙ্গে ছোট্ট সাইজের বিভিন্ন রেণুসহ পোনা মাছ এবং মাছের খাবার, অনুজীবও মারা পড়ছে। গোটা উপকূলে যদি মাত্র পাঁচটি বছর সুক্ষ্ম ফাঁসের জালের ব্যবহার বন্ধ করা যায়; উপকূলে মাছে এবং কাঁকড়ায় সয়লাব হয়ে যাবে।

জেলেদের সাথে আলাপ করে এবং খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে কাঁকড়ার ব্যাপক বাণিজ্যিক মূল্য রয়েছে। বড় কাঁকড়া সরাসরি বিক্রি হয় আর ছোট সাইজের কাঁকড়া শুটকি করে মেশিনে ফিস ও পোল্ট্রির খাবার তৈরি করা হচ্ছে। কারখানাগুলোর চাহিদা মেটাতে বঙ্গোপসাগরসহ উপকূলীয় নদী, খালগুলোতে নির্বিচারে বিভিন্ন প্রজাতির কাঁকড়া নিধন চলছে।। এখানকার বেড়িবাঁধের ঢালে, নদী তীরে, চরে কাঁকড়ার পোনা ফ্রি-স্টাইলে শুঁটকি করা হচ্ছে।
মৎস্য বিভাগের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কাঁকড়া মূলত আর্থোপ্রোডা পর্বের একটি ক্রাস্টসিয়া প্রাণী। কাঁকড়ার শরীর একটি পুরু বহিঃকঙ্কালে আবৃত থাকে এবং এদের এক জোড়া দাঁড়া থাকে। বাংলা পিডিয়ার তথ্যমতে, এ পর্যন্ত কাঁকড়ার ছয় হাজার ৭৯৩টি প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে। সূত্রমতে, বাংলাদেশে লোনা, আধালোনা ও স্বাদুপানি থেকে এ পর্যন্ত ১৪টি গোত্র এবং ২৫টি গনের অধীনে মোট ৪০ প্রজাতির কাঁকড়ার তিনটি ঋষি বা ভূয়া কাঁকড়া ও ৩৭টি আসল কাঁকড়ার সন্ধান পাওয়া গেছে। আমাদের দেশের উপকূলীয় এলাকায় সাধারণত ১৬ প্রজাতির কাঁকড়া পাওয়া যায়।

বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপুর্ণ জাত বা শীলা কাঁকড়া সাধারণত সমুদ্রের পানিতে ডিম ছাড়ে। জোয়ারের পানিতে লার্ভাগুলো সমুদ্র উপকূলে চলে আসে। এরা ১৮-২৪ মাসের মধ্যে প্রাপ্ত বয়ষ্ক হয়। প্রাপ্তবয়ষ্ক একটি কাঁকড়ার ওজন সাধারণত ৩০০-৬০০ গ্রাম হয়। তবে এক কেজি পর্যন্ত হতে পারে। স্ত্রী কাঁকড়া নিষিক্ত ডিমগুলোকে প্রশস্ত করে উদরের মধ্যে বহন করে। কাঁকড়া মোহনা ও জোয়ার-ভাটা এলাকার একটি প্রধান উভচর প্রাণী।

বরগুনা ও পটুয়াখালী অঞ্চলে সাধারনত লাল কাঁকড়া ছাড়াও ধূসর বর্ণের প্রচুর কাঁকড়ার দেখা মেলে। লাল কাঁকড়া সৈকতের বিচে, সাগর মোহনার বেলাভূমে দেখা যায়। সাগরে, নদীতে এক ধরনের সুক্ষ্ম ফাঁসের বেহুন্দি জালে ধরা পড়ছে প্রচুর পরিমান কাঁকড়া। এসব কাঁকড়া স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয়না।

বরগুনার পরিবেশ কর্মী মুশফিক আরিফ জানান, সাগরপাড়ের পরিবেশ প্রতিবেশ জীব-বৈচিত্র রক্ষায় কাঁকড়ার বিকল্প নেই। কিন্তু নির্বিচারে নিধনের কারণে সবকিছু হুমকির মুখে পড়ছে। নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার বন্ধে কখনও কখনও অভিযান পরিচালিত হলেও ছোট সাইজের কাঁকড়া নিধন বন্ধ হয়নি।

কলাপাড়ার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী জানান, শুধু কাঁকড়া নয় মাছ শিকারসহ বিভিন্ন ধরনের সুক্ষ্ম জালের ব্যবহার বন্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র : বাসস


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us