পুতিনের বিরুদ্ধে রণহুঙ্কার বাইডেনের : মাশুল দিতে হবে
পুতিন ও বাইডেন - ছবি সংগৃহীত
অতীতে হিলারি ক্লিন্টনকে মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে হারানোর অভিযোগ উঠেছিল রাশিয়ার পুতিন সরকারের বিরুদ্ধে। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়েও এমন অভিযোগ উঠল। মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি, গত নভেম্বরে নির্বাচনে ট্রাম্পকে জেতাতে কলকাঠি নেড়েছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। মঙ্গলবার প্রকাশিত ১৫ পাতার ওই রিপোর্ট নিয়ে এবার মুখ খুলল রাশিয়া।
আমেরিকায় অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাসের পক্ষ থেকে ফেসবুকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘মার্কিন গোয়েন্দাদের তৈরি কথা নথিতে একগুচ্ছ ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। দাবি করা হয়েছে মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপের।’ রাশিয়ার তরফে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনো উপযুক্ত প্রমাণ বা তথ্য ছাড়াই এমন অভিযোগ করছে ওয়াশিংটন। তাদের পাল্টা অভিযোগ, আমেরিকা নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাশিয়ার নাক গলানোর এমন অভিযোগ তুলে রাশিয়ার ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে।
মার্কিন গোয়েন্দাদের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বাইডেনের ছেলের বিরুদ্ধে ইউক্রেনে ব্যবসা সংক্রান্ত ভুয়ো অভিযোগ আনার চেষ্টা করেছিলেন পুতিন। উদ্দেশ্য ছিল ভোটের আগে বাইডেনের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। এতে নাকি ট্রাম্প ঘনিষ্ঠদেরও সমর্থন ছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন আবার হুঙ্কার ছেড়েছেন। ‘খুনি’ পুতিনের উদ্দেশে বলেছেন, ‘পাপের মূল্য চোকাতে হবে।’ বাইডেন আরও বলেছেন, ‘রাশিয়ার বিরোধী নেতা নাভালনিকে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন পুটিন। এটা ঘটনা ডোনাল্ড ট্রাম্প যে পথে হেঁটে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য ছিল, বাইডেন প্রশাসন তা থাকবে না। নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য পুতিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আফগানিস্তানে আমেরিকান সেনা সদস্যদের হত্যার পরিকল্পনা নিয়েও সরব বাইডেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের সঙ্গে গত চার বছর রাশিয়ার যে সম্পর্ক ছিল, তা বজায় রাখার কোনো ইচ্ছাই নেই বাইডেন প্রশাসনের।
ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ কোন কোন ব্যক্তি রাশিয়ার এই প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তা খোলসা না করলেও গোয়েন্দাদের নজরে উঠে এসেছে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত অ্যাটর্নি রুডি জিউলিয়ানির নাম। সেই সঙ্গে আমেরিকার নাগরিক নন, এমন কয়েকজনের নামও উঠে এসেছে ওই রিপোর্টে। গোয়েন্দাদের দাবি, তাদের মধ্যে একজন হলেন অ্যান্দ্রি ডেকরাখ নামে ইউক্রেনের আইনসভার এক সদস্য। রাশিয়ার কর্মকর্তা তথা সে দেশের গোয়েন্দাদের সঙ্গে ডেকরাখের ভালোই যোগাযোগ ছিল বলেও দাবি আমেরিকার গোয়েন্দাদের। সেই সঙ্গে কনস্তানতিন কিলিমনিক নামে রাশিয়ার এক প্রভাবশালী এজেন্টও এতে জড়িত বলে জানিয়েছেন তারা। আমেরিকার গোয়েন্দাদের মতে, রুডির সঙ্গে রাশিয়ার এজেন্টদের যোগাযোগ ছিল। নির্বাচনের আগে বাইডেনের ছেলে হান্টারকে ইউক্রেনে তার এক ব্যবসায়িক সংস্থার মাধ্যমে কেলেঙ্কারিতে ফাঁসাতে চেষ্টা করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই ওই প্রচেষ্টায় রুডি সফল হলে তা ডেমোক্র্যাট তথা বাইডেনের জয়ের পথে বাধা তৈরি করত বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা।
মঙ্গলবারই বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, খুব দ্রুত মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা ভাবছে আমেরিকা। নির্বাচনে চক্রান্ত করার পাশাপাশি মার্কিন সরকারি নেটওয়ার্ক থেকে তথ্য চুরির অভিযোগও তোলা হয়েছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এই হ্যাকিংয়ের অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছে পুটিন প্রশাসন। আমেরিকার এমন অভিযোগকে ভাল চোখে দেখছে না রাশিয়া। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ওয়াশিংটনের মূল লক্ষ্যই হলো বিশ্বের কাছে রাশিয়ার একটি নেগেটিভ ভাবমূর্তি তৈরি করা। আমেরিকার এমন অভিযোগের ফলে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কই যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
সূত্র : আজকাল