কিডনি রোগী কতটা পানি পান করবেন?
কিডনি রোগী কতটা পানি পান করবেন? - ছবি সংগৃহীত
দীর্ঘদিনের কিডনির অসুখ দু’ধরনের হয়-
১. যেক্ষেত্রে দেখা যায় রোগীর পা ফুলে আছে, সেক্ষেত্রে বুঝতে হয় রোগীর শরীরে পানি বেশি জমতে শুরু করেছে। তাই এমন রোগীকে বেশি মাত্রায় পানি পান করার অনুমতি দিলে পা আরো ফুলতে শুরু করবে, শ্বাসকষ্ট শুরু হবে। মাঝরাতে ফুসফুসে পানি জমে গেলে ডায়ালিসিস করাতে হাসপাতাল দৌড়তে হবে।
২. আর এক ধরনের ক্রনিক কিডনি ডিজিজের রোগী আছেন, যাদের হাত-পা এভাবে ফুলে যায় না। এই ধরনের রোগীর কিডনির টিবিউলগুলো এমনভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে, পানি বেরিয়ে যায়। এই ধরনের রোগীর পানি পান করার মাত্রা কমিয়ে দিলে বিপদ। সেক্ষেত্রে এমন রোগীর শরীরে ক্রিয়েটিনিন-এর মাত্রা বেড়ে যাবে। তাই চিকিৎসককে দেখতে হবে কিডনি রোগী ঠিক কী ধরনের সমস্যায় ভুগছেন। সেই বুঝে পানি পানের মাত্রা ঠিক করতে হবে।
• কিছু ক্রনিক কিডনি ডিজিজ-এ ভোগা রোগীর সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ডায়ালিসিস করাতে হয়। রোগীর সাধারণত ইউরিন খুব কম হয়। এমন রোগীর কিডনির কার্যক্ষমতা খুব কম থাকে। কিডনি শরীর থেকে পানি বের করতে পারে না। এই ধরনের রোগী পানি বেশি পান করলে বিপদ। রোজই তার ডায়ালিসিস করাতে হবে। তাই রোগীকে সারা দিনে তরল গ্রহণের মাত্রা এক লিটারের মধ্যেই রাখতে বলা হয়।
পরিশেষে
অতিরিক্ত পানি পান করবেন না। তৃষ্ণা পেলে তবেই পানি পান করুন। কিডনি রোগীরা পানি পান নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। চিকিৎসকের বলে দেয়া পন্থায় পানি পান করলে দীর্ঘদিন সুস্থ জীবনযাপন করা সম্ভব।
লেখক : নেফ্রোলজিস্ট, পিয়ারলেস হসপিটাল অ্যান্ড বি কে রয় রিসার্চ সেন্টার
সূত্র : বর্তমান
কিডনি রোগের ঝুঁকি বেশি নারীর!
পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে ভুগছে। আর আক্রান্তদের মধ্যে ৪০ হাজারের কিডনি পুরোপুরি অকেজো হচ্ছে প্রতি বছর। এর বড় একটা অংশ নারী। তাই পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও প্রয়োজন সচেতনতা ও সতর্কতা।
নারীদের যেসব সতর্কতা প্রয়োজন
গর্ভাবস্থা কিডনির ওপর একটি চাপ সৃষ্টি করে। অনেক সময় অল্প ও অধিক বয়সী নারীরা গর্ভাবস্থায় কিডনি রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। যাদের গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি হয় অথবা গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়বেটিস ও প্রেসারে আক্রান্ত থাকবেন তারা কিডনি রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে গর্ভধারণের আগে সতর্কতা ও গর্ভকালীন নিয়মিত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে চললে কিডনির রোগের ঝুঁকি রোধ করা যায়।
এ ছাড়া অবৈজ্ঞানিক উপায়ে / গ্রাম্য চিকিৎসা করা গর্ভরোধ ও গর্ভকালীন রক্তপাত কিডনি ফেইলরের পাশাপাশি রোগীর জীবনের জন্যও মারাত্মক হুমকির কারণ হতে পারে। অনেক সময় গর্ভকালীন অবস্থায় রোগীরা প্রস্রাবের ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়ে থাকেন এ ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে সংক্রমণের পর দ্রুত সঠিক চিকিৎসা না নিলে নারীর গর্ভকালীন স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
সাধারণভাবে নারীদের মধ্যে বয়স বাড়ার সাথে সাথে ওজন বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যায়। যা পক্ষান্তরে কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ ক্ষেত্রে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে ডায়বেটিস, প্রেসার, থাইরয়েডসহ কিডনি রোগের ঝুঁকিও কমানো সম্ভব।
অনেক নারীর মধ্যে প্রস্রাব চেপে রাখার ও কম পানি পানের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, যা পরে কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ ছাড়াও নারীদের মধ্যে অনেকের অপরিকল্পিত স্লিমিং/ অবৈজ্ঞানিক উপায়ে ওষুধ খেয়ে কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ইন্টারনেট।