আঁটোসাঁটো জিনসের কারণে প্রজনন ক্ষমতা কমছে?
আঁটোসাঁটো জিনস - ছবি : সংগৃহীত
ডেনিমের প্যান্ট এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় পোশাকের একটি। কিন্তু যা সবচেয়ে জনপ্রিয়, তারও অনেক খারাপ দিক থাকে। জিনসের ক্ষেত্রেও তাই। তবে সব ধরনের জিনস নয়। বিশেষ করে খুব আঁটো জিনস। হালের কিছু গবেষণা তো বটেই, যারা এই ধরনের প্যান্ট পরতে ভালোবাসেন, তারাও বেশ কিছু সমস্যা টের পান খুব আঁটো জিনসের কারণে।
কী কী সমস্যা হতে পারে এমন প্যান্ট পরলে? রইল তার কয়েকটির সন্ধান।
রক্ত জমাট : খুব টাইট জিনস পরলে উরু এবং কুঁচকি এলাকায় রক্ত চলাচলে বাধা পড়ে। এর ফলে ওই এলাকাগুলোয় রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা দেখা দেয়। যারা দিনে ১৪-১৫ ঘণ্টা খুব আঁটো ডেনিমের প্যান্ট পরেন, তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি মাত্রায় দেখা যায়।
তলপেটে ব্যথা : এই ধরনের প্যান্ট তলপেটের সঙ্গে খুব আঁটো হয়ে বসে থাকে। তার ফলে এই এলাকার পেশির স্বাভাবিক নড়াচড়া ব্যাহত হয়। তাতে ওখানে ব্যথা হয়। শুধু তাই নয়, এই ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে কোমরের দিকেও। ক্রমশ এই ব্যথার কারণে স্বাভাবিক ভাবে বসতে বা দাঁড়াতেও সমস্যা হতে থাকে।
স্নায়ুর ক্ষতি : এই ধরনের প্যান্টের কারণে উরু ও কোমরের দিকের স্নায়ুতেও বিপুল চাপ পড়ে। ফলে ক্রমশ সেই স্নায়ুর ক্ষতি হতে থাকে। স্নায়ুর ব্যথা হয়। এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা বাড়তে থাকে।
ইস্ট-ঘটিত সংক্রমণ : খুব আঁটো প্যান্ট পরলে তার ভিতরে হাওয়া চলাচল ব্যাহত হয়। ফলে ঘাম হয়। তা থেকে ইস্ট-ঘটিত সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়তে থাকে। বহু গবেষণায় বলছে, আঁটো জিনসের কারণে মহিলাদের মধ্যে ‘ইউরিনারি ট্র্যাক’-এর সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে। এই এলাকায় উত্তাপ বেড়ে যায়, যা নারী এবং পুরুষ— উভয়ের জন্যই ক্ষতিকারক।
প্রজননে সমস্যা : বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আঁটো জিনসের কারণে পুরুষদের শুক্রাণু উৎপাদন ব্যাপক হারে কমে যায়। যারা আঁটো ডেনিমের প্যান্ট পরেন, তাদের তলপেট এবং প্রজনন অঙ্গের এলাকার উত্তাপ অনেকটাই বেড়ে যায়। এই বেড়ে যাওয়া উত্তাপই কমিয়ে দেয় শুক্রাণু উৎপাদন। ফলে হ্রাস পায় প্রজননের ক্ষমতা। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ দিন আঁটো জিনস যারা পরেন, তাদের অনেকের ক্ষেত্রে প্রজনন অঙ্গের ক্যানসারের আশঙ্কাও বাড়ে বলে জানাচ্ছে বেশ কিছু গবেষণা।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
ব্যথানাশক ওষুধ সেবনে হৃদরোগ
আজাদুল কবির আজাদ
একটু ব্যথা হলেই ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করেন না এমন ব্যক্তির সংখ্যা কম। লাল বড়ি হিসেবে পরিচিত ডাইক্লোফেনাক সেবন করেননি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এতদিন জানা ছিল, এ ব্যথানাশক বড়ি সেবন করলে কিডনির সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু এ মাসে প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে, ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করলে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা দেখা দেয়। এ ওষুধ সেবনকারীরা অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনে আক্রান্ত হন। যেটি স্ট্রোক ও হার্ট ফেইলিওরের অন্যতম কারণ।
একদল ডেনিশ গবেষক ১৯৯৯ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনে আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর গবেষণা করেন।
এতে দেখা যায়, যারা নন-সিলেকটিভ এনএসআইডি- ব্যথানাশক ওষুধ যেমন অ্যাসপিরিন, ডাইক্লোফেনাক, কিটোরোলাক, আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন, এনডোমেথাসিন ইত্যাদি সেবন করেন তাদের অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনে আক্রান্ত হওয়ার হার ৪৬ শতাংশ ও কক্স-২ ইনহেবিটর যেমন- সেলেকক্সিব, মেলোক্সিকাম সেবন করেন তাদের ক্ষেত্রে ৭১ শতাংশ বেশি।
গবেষকরা আরো জানান, নন-সিলেকটিভ এনএসআইডি ও কক্স-২ ইনহেবিটর সেবন করলে প্রতি বছর প্রতি এক হাজারে চারজন ও সাতজন অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনে আক্রান্ত হন। এ গবেষণার নেতৃত্ব দেন ডেনিশ আরহাম ইউনির্ভাসিটি হাসপাতলের মারটেন স্ক্যামিড। এ মাসেই এটি বিখ্যাত ‘বিএমজে’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা অযথা ব্যথানাশক ওষুধ সেবন না করার পরামর্শ দিয়েছেন।