প্রতিকারের উপায়

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন | Mar 14, 2021 05:17 pm
মাদরাসায় পড়াশোনা

মাদরাসায় পড়াশোনা - ছবি সংগৃহীত

 

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর একটি মাদরাসায় আট বছর বয়সী এক ছাত্রকে নির্মম মারধরের ভিডিও গোটা দেশে ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি হাটহাজারী সদরে মারকাযুল কুরআন ইসলামিক একাডেমির হিফজ মাদরাসার শিক্ষক। ১০ মার্চ গ্রামের বাড়ি রাঙ্গুনিয়া থেকে তাকে আটক করা হয়। গত ৯ মার্চ রাতে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে। হাটহাজারী থানার ওসি বলেন, শিশুটিকে নির্যাতনের অভিযোগে তার বাবা বাদি হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন। শিশুটির জন্মদিন ছিল ওই দিন। এ উপলক্ষে মা-বাবা তাকে দেখতে বিকেলে মাদরাসায় আসেন। তারা চলে যাওয়ার পরপরই শিশুটি মাদরাসা থেকে মা-বাবার পেছনে পেছনে বের হয়। ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষক ইয়াহিয়া শিশুটিকে ঘাড় ধরে মাদরাসার ভেতরে নিয়ে গিয়ে ফ্লোরে ফেলে নির্দয়ভাবে পেটান। হাইকোর্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে জানতে চেয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

২০১৯ সালে যশোরের বেনাপোলে স্কুল ড্রেস না পরায় মেহেদী হাসান সাগর (১৫) নামে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করেন শার্শা সরকারি মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক। তার বাবা ইটভাটার শ্রমিক। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে স্কুল ড্রেস বানিয়ে দিতে পারেননি। শিক্ষকরা মেহেদীকে স্কুল ড্রেস বানানোর জন্য সাত দিনের সময় বেঁধে দেন। তবে দু’দিন যেতে না যেতেই ড্রেসের শার্ট না পরে স্কুলে যাওয়ার কারণে প্রধান শিক্ষক ক্লাসরুম থেকে ডেকে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেন তাকে। পুরো শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায় এতে। খবর পেয়ে বাবা স্কুলে গিয়ে আহত ছেলেকে নিয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যান। ছেলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ইউএনও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। পরে তাকে শার্শা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় (জাগো নিউজ২৪.কম)।

ফেনী জেলার সোনাগাজীতে আলোচিত ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত হত্যায় দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সে মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করায় অধ্যক্ষ তার অনুসারীদের হত্যার প্ররোচনা ও নির্দেশনা দেন। ২০১৯ সালের এপ্রিলে নুসরাতের গায়ে আগুন লাগিয়ে হত্যা করা হয়। ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলাসহ ১৬ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুকে শারীরিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের ঘটনা নতুন নয়। এসব অভিযোগে পুলিশ ও র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে অনেকে জেলে আছেন। মিডিয়ার আর্কাইভে এ জাতীয় বহু ঘটনার ভিডিও রেকর্ড ও প্রতিবেদন জমা আছে। দেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে এমন তিন শতাধিক মামলা তদন্ত ও বিচারাধীন রয়েছে।

ধর্মপ্রাণ মানুষ তাদের সন্তানদের পবিত্র কুরআন শিক্ষা ও হিফজ করানোর জন্য মাদরাসায় ভর্তি করান। কিন্তু কিছু মাদরাসার অব্যবস্থাপনা, অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, কেন্দ্রীয় কোনো কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকা প্রভৃতি কারণে অভিভাবকদের স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। অনেক ছাত্র মাদরাসা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ কর্র্তৃপক্ষ হাইয়াতুল উলিয়া, বেফাকুল মাদারিসসহ ছয়টি আঞ্চলিক শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন মহল এ ব্যাপারে ‘নির্বিকার’ থাকায় সচেতন মানুষ উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাইয়া বা বেফাক যদি জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে না আসে, তাহলে এর জন্য জাতিকে চড়া মূল্য দিতে হবে।

হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের সভাপতি মাওলানা হাফেজ ক্বারি আবদুল হক জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলার হিফজ মাদরাসার ৩০ হাজার শিক্ষককে তারা প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। বিশুদ্ধ তিলাওয়াত, মানসম্মত পাঠদান, পাঠ আদায়, চরিত্র নির্মাণ, প্রশিক্ষণ বা তারবিয়ত ও না পিটিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে স্নেহপূর্ণ আচরণ প্রভৃতি প্রশিক্ষণের পাঠ্যসূচি। এভাবে তারা দেশের সব হিফজ মাদরাসাকে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসবেন।
সর্ববৃহৎ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার সহ-সভাপতি মাওলানা মুসলেহুদ্দিন ও বেফাক মহাসচিব, রাজধানীর মুহাম্মদপুর জামিয়া রহমানিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হকের সাথে সাম্প্রতিক সময়ে শিশু নির্যাতন নিয়ে কথা বলেছি। তারা জানালেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা আছে। আমরা খুব উৎকণ্ঠিত।

বোর্ডের সদস্যদের সাথে ইতোমধ্যে মতবিনিময় করেছি। এ ব্যাপারে নীতিমালা তৈরি করে নজরদারি করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এদিকে, দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত মহিলা মাদরাসার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৯ সালে বেফাকে নিবন্ধিত দাওরায়ে হাদিস ছেলেদের মাদরাসার সংখ্যা ৬৩৮। অপর দিকে দাওরায়ে হাদিস মেয়েদের মাদরাসার সংখ্যা ৬৬৭। মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের বড় বড় কওমি মাদরাসার কোনো মহিলা শাখা নেই। তারা যদি মহিলা মাদরাসা পরিচালনায় এগিয়ে আসতেন তাহলে গুণগত পরিবর্তন আসত। জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল আওয়ার ইসলামের সম্পাদক মাওলানা হুমায়ুন আইয়ুব বলেছেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু নিপীড়নের হার যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। মিডিয়ায় প্রকাশিত হচ্ছে এর মাত্র শতভাগের এক ভাগ। ফিতনার আশঙ্কায় এক শ্রেণীর মুহাক্কিক ও বিদগ্ধ আলেম মহিলা মাদরাসার বিরোধী ছিলেন। পরে শর্তসাপেক্ষে মহিলা মাদরাসা স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু আফসোসের কথা হচ্ছে, এসব শর্ত মানা হচ্ছে না। হাইয়াতুল উলিয়া লিল মাদারিসিল কওমিয়ার অধীনে একটি আধুনিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করা যায় কি না মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে। বাংলাদেশসহ গোটা দুনিয়ায় প্রাথমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত পাঠদানকারী শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক, সেখানে কওমি মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থায় এ জাতীয় কোনো নিয়ম ও পদ্ধতি গড়ে উঠেনি আজো।

বিশিষ্ট ইসলামী স্কলার ও আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ মাওলানা আহমদুল্লাহ নয়া দিগন্তের সাথে এক সাক্ষাৎকারে শিশু নির্যাতন ও যৌন নিপীড়ন নিরোধে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব রাখেন।
১. প্রতিটি মাদরাসা, নূরানি ও হিফজখানায় আট ঘণ্টার শিফট পদ্ধতি চালু করতে হবে। ভোর ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত একজন শিক্ষক কর্তৃক পাঠদান অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক। এতে শিক্ষকের মন মেজাজ রুক্ষ ও খিটখিটে হয়ে ওঠে।
২. শিক্ষকদের মানসম্মত বেতন ও বোনাস দিতে হবে। বেতন মাসে মাসে দি তে হবে। এতে তাদের মানসিক প্রশান্তি বৃদ্ধি পাবে।
৩. পবিত্র কুরআন হিফজ করার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয় যেমন- আরবি, বাংলা, ইংরেজি ও গণিত শিক্ষা দিতে হবে। এতে শিশুদেরকে একঘেঁয়েমি থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে।
৪. উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণে সনদধারীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
৫. কোনো কক্ষে ঢালাও বিছানায় ছাত্রদের রাত্রিযাপনের সুযোগ দেয়া যাবে না। প্রতিটি ছাত্রের জন্য পৃথক খাটের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে দু’তলা বা তিনতলাবিশিষ্ট স্টিলের খাট তৈরি করা যেতে পারে।
৬. শিক্ষকদের জন্য সস্ত্রীক আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো শিক্ষক ছাত্রদের কক্ষে অথবা তাদের বিছানায় রাত্রিযাপন করতে পারবেন না।
৭. শ্রেণিকক্ষ, দফতর, শিক্ষকদের বিশ্রামাগার, শিক্ষার্থীদের শয়নকক্ষ ও শৌচাগার সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে।
৮. ঘুমের ব্যাঘাত যাতে না ঘটে, এভাবে ছাত্রদের শয়নকক্ষে মৃদু আলোর বাতি জ্বালিয়ে রাখতে হবে।

৯. হিফজখানাসহ সব মাদরাসাকে বেফাক অথবা আঞ্চলিক বোর্ডের শক্তিশালী কর্তৃপক্ষের আওতায় এনে নজরদারি জোরদার করতে হবে। কোনো মাদরাসা এসব শর্ত না মানলে অথবা লঙ্ঘন করলে তার অ্যাফিলিয়েশন বাতিল করা হবে। নিয়ন্ত্রণহীন মাদরাসা চালাতে দেয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষত জেলা ও উপজেলা সদরে প্রতি বছর নতুন নতুন কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, নূরানি, ইবতেদায়ি, মাদরাসা ও হিফজখানা গড়ে উঠছে। একটি বা দুটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে এর শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোনো শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য বোর্ড বা কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। এসব প্রতিষ্ঠানের কারণে এলাকায় শিক্ষার বিস্তার ঘটছে এটা যেমন সত্য, তেমনি যেকোনো মুহূর্তে কেলেঙ্কারিও ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাই উত্তেজিত জনতা বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। এ জাতীয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে কার্যকর কোনো পরিচালনা পর্ষদ বা মজলিসে শূরা নেই। ভাড়া করা ফ্ল্যাটে আবাসিক ও অনাবাসিক বালিকা মাদরাসা পরিচালিত হচ্ছে। অথচ কারো কাছে কোনো জবাবদিহি নেই। উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। অপর দিকে, হিফজখানা বা একাডেমিতে ভর্তি করাতে এবং মাসে মাসে ফি দিতে হাজার হাজার টাকা গুনতে হয়।

শিক্ষার্থীদের আদব শিক্ষা দেয়ার জন্য একেবারে লঘু শাস্তির অনুমোদন দিয়েছেন বিশ্বখ্যাত ইসলামী শিক্ষা নিকেতন, ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের বিজ্ঞ মুফতিরা। চিকন বেত দিয়ে আলতোভাবে তিনবার প্রহার করা যাবে। তবে শক্ত বেত, লাঠি বা বেল্ট ব্যবহার করা যাবে না। তিনবারের বেশি প্রহার করলে আল্লাহ তায়ালার কাছে জবাবদিহি করতে হবে এবং তিনি এর বদলা নেবেন। হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কাউকে অন্যায়ভাবে প্রহার করবে, কিয়ামতের দিন তার থেকে এর প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে।’ (মুসনাদে বাযযার, হাদিস-৩৪৫৪, আল মুজাম, তাবারানি, হাদিস-১৪৬৮) ইমাম গাজ্জালি রাহ. বলেন, ‘শিক্ষার্থীর ভুল-ত্রুটিগুলো যথাসম্ভব কোমলতা ও উদারতার সাথে সংশোধন করতে হবে এবং দয়া ও করুণার পন্থা অবলম্বন করতে হবে। ধমক ও ভর্ৎসনা নয়। (আর রাসূলুল মুয়াল্লিম, পৃষ্ঠা-১১) এ সম্পর্কে হাকিমুল উম্মত হজরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রাহ. বলেন, ‘কখনো রাগান্বিত অবস্থায় শিশুকে প্রহার করবে না। পিতা ও উস্তাদ উভয়ের জন্যই এ কথা। এ সময় চুপ থাকবে। যখন ক্রোধ দূর হয়ে যাবে তখন ভেবেচিন্তে শাস্তি দেবে। এতে শাস্তির মাত্রা ঠিক থাকবে। সীমালঙ্ঘন হবে না। কিন্তু যদি রাগান্বিত অবস্থায় মারতে আরম্ভ করো, তাহলে এক থাপ্পড়ের জায়গায় দশ থাপ্পড় দিয়ে ফেলবে। এর কারণে একে তো গুনাহ হলো; কেননা, প্রয়োজনের অধিক শাস্তি দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এতে শিশুর ক্ষতি হবে। কেননা, সব বিষয়েই মাত্রা অতিক্রম করলে ক্ষতি হয়ে যায়।

তৃতীয়ত, এর জন্য পরে অনুতাপ করতে হবে। তাই তিনি বলেন, ক্রুব্ধ অবস্থায় শাস্তি দেবে না। মুফতি মুহাম্মদ শফী রাহ. বলেন, ‘শিশুদেরকে প্রহার করা খুবই ভয়াবহ। অন্যান্য গুনাহ তওবার মাধ্যমে মাফ হতে পারে। কিন্তু শিশুদের ওপর জুলুম করা হলে এর ক্ষমা পাওয়া খুবই জটিল। কেননা, এটা হচ্ছে বান্দার হক। আর বান্দার হক শুধু তওবার দ্বারা মাফ হয় না। যে পর্যন্ত না, যার হক নষ্ট করা হয়েছে সে মাফ করে। এদিকে যার ওপর জুলুম করা হয়েছে সে হচ্ছে নাবালেগ। নাবালেগের ক্ষমা শরিয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। এ জন্য এ অপরাধের মাফ পাওয়া খুবই জটিল। আর তাই শিশুদেরকে প্রহার করা এবং তাদের সাথে মন্দ আচরণ করার বিষয়ে সাবধান হওয়া উচিত। (মুহাম্মদ আনসারুল্লাহ হাসান, মাসিক আল কাউসার, এপ্রিল-২০১২; ইসলাহি মাজালিস, মুফতি মুহাম্মাদ তাকী উসমানী)

জাপানসহ বহু দেশে শিশুদেরকে বাসা থেকে নিজস্ব পরিবহনে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। প্রাতরাশ, দুপুরের খাবার, বিকেলের নাশতা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় সরবরাহ করা হয়। সারাদিন লেখাপড়া হাতে-কলমে শিক্ষা দেয়া হয়। বিকেলে খেলাধুলা করে সন্ধ্যার পর তাদের বিশেষ কোচিং দেয়া হয়। কেবল ঘুমানোর জন্য বাসা-বাড়িতে শিক্ষার্থীদের পাঠিয়ে দেয়া হয়। ফলে অভিভাবকদের আর কোনো দুশ্চিন্তা থাকে না। এ বিষয়গুলো নিয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও বিশেষজ্ঞদের ভাবতে হবে।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও গবেষক

drkhalid09@gmail.com

 

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us