কেমন হবে কিডনির রোগের ডায়েট?
কেমন হবে কিডনির রোগের ডায়েট? - ছবি সংগৃহীত
কিডনির রোগের ডায়েট প্ল্যান করার সময় অনেকগুলো বিষয় মাথায় রাখতে হয়। দেখতে হয়, কোন স্টেজ রেনাল ডিজিজে রোগী আক্রান্ত। স্টেজ ১-এ ডায়েট একরকম তো স্টেজ ৪-এ একরকম। এছাড়াও রক্ত পরীক্ষা করে জেনে নিতে হয়, রোগীর শরীরে ক্রিয়েটিনিন, ইউরিয়া, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদির মাত্রা কত। এতগুলি বিষয় জানার পরই ঠিক করা হয় ডায়েট প্ল্যান।
ডায়েট প্ল্যানের মুখ্য বিষয়
• সোডিয়াম : এই অসুখে মাথা ব্যথার অপর নাম সোডিয়াম। তাই খাবারে লবণ যতটা সম্ভব কমাতে হবে। দিনে ৫ গ্রামের কম লবণ খাওয়া উচিত।
• প্রোটিন : কিডনির অসুখে প্রোটিন খাওয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে রোগী অনুযায়ী ডায়েটকে লো প্রোটিন ১, লো প্রোটিন ২, স্ট্রিক্ট রেস্ট্রিকশন ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা হয়। কোন রোগীর কতটা প্রোটিন দরকার তা রোগী ভেদে আলাদা হয়। এবার প্রশ্ন হতে পারে কোন ধরনের প্রোটিন খাওয়া দরকার? প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে ডিমের সাদা অংশ, মাছ, চিকেন চলবে। রেড মিট এড়াতে হবে। তবে শরীরে কোলেস্টেরল বেশি, হার্টের রোগ থাকলে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন যেমন সোয়াবিন, লেটুস শাক ইত্যাদি খাওয়াই ভালো।
• পটাশিয়াম : ১০০ গ্রাম খাদ্যে কত গ্রাম পটাশিয়াম আছে দেখা হয়। ২০০ মিগ্রার উপরে পটাশিয়াম থাকলে খাওয়া যাবে না। এমন খাদ্য হল— ধনেপাতা, সজনে ডাঁটা, পালং শাক, ওল, কচু, থোড়, আলু, কাঁচা পেঁপে ইত্যাদি। চেষ্টা করতে হবে ১০০ মিগ্রার কম পটাশিয়াম আছে এমন খাবার খাওয়ার যেমন : বীট, উচ্ছে, করলা, লাউ, বিনস, শসা, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, কড়াইশুঁটি, লেটুস শাক, সজনে শাক, সজনে ডাঁটা ইত্যাদি।
• ফসফরাস : ডায়েটে ফসফরাস সমৃদ্ধ খাদ্য রাখলেও চলবে না। দুধ, ডাল, পাকা পেঁপে, আনারস, কলা, পেয়ারা, তরমুজ ইত্যাদি খাদ্যে ফসফরাস বেশি থাকে। এই ধরনের খাদ্য যতটা সম্ভব এড়িয়ে যেতে হবে। এমন অবস্থায় দুধ, ছানার বদলে টক দই খাওয়া যায়।
• ফ্যাট : ঘি, মাখন, বনস্পতি, চিজের মতো সম্পৃক্ত ফ্যাট এড়িয়ে চলুন। এগুলো কিডনি রোগীর পক্ষে ক্ষতিকর। রান্নার তেল হল অসম্পৃক্ত ফ্যাট। একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো রান্নায় তেল ব্যবহার করুন।
মনে রাখবেন, কিডনি রোগীর ডায়েট ঠিক করার ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া দরকার। সেই মতোই চলতে হবে। নইলে শরীর দ্রুত খারাপ হবে। রোগ চলে যাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বা সিকেডি কী?
ধীরে ধীরে কিডনির কাজ করার ক্ষমতা কমে যাওয়াকে সিকেডি বলা হয়। এটা কয়েক মাস থেকে শুরু করে বছর খানেকের মধ্যে হতে পারে। রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ও প্রস্রাবে প্রোটিনের মাত্রা দেখে অতি সহজে এই রোগ নির্ণয় করা যায়।
কিডনির কাজের ক্ষমতাকে ‘আনুমানিক গ্লোমেরুলার ফিলট্রেসন রেট’ (সংক্ষেপে ইজিএফআর) হিসেবে প্রকাশ করা হয়। ইজিএফআর-এর হিসাবে সিকেডি’কে পাঁচটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়।
স্টেজ ১: ইজিএফআর—৯০
স্টেজ ২: ইজিএফআর—৬০-৮৯
স্টেজ ৩: ইজিএফআর—৩০-৫৯
স্টেজ ৪ : ইজিএফআর—১৫-২৯
স্টেজ ৫: ইজিএফআর <১৫
(একে এন্ড স্টেজ রেনাল ডিজিজও বলা হয়)
সূত্র : বর্তমান