দাম ২০ কোটি টাকা, বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধটি কোন রোগের?
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধ - ছবি সংগৃহীত
বাংলাদেশী মুদ্রায় ওষুধটির দাম ২০ কোটি টাকা। ভাবতে পারছেন? সম্প্রতি বাজারে আসা এটাই এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধ। এ নিয়ে গোটা দুনিয়ায় এখন শুরু হয়েছে যুক্তি-তক্ক-গপ্প। যত দূর জানা গেছে, বিরল বংশগত রোগ একেবারে ভালো করে তুলতে পারে এই ওষুধ। বংশগত জটিল রোগের ক্ষেত্রে জিন থেরাপি হিসেবে কাজ করবে নতুন এই Zolgensma। এই ওষুধটির অনুমোদন দিয়েছে ইউনাইটেড কিংডমের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বা এনএইচএস।
এই ওষুধের এক একটি ডোজ বাংলাদেশী মূল্যে মূল্যে মাত্র ২০ কোটি টাকা। যদি কোনো শিশু স্পাইনাল মাসকুলার অট্রোফি সমস্যায় ভোগে তাদের এই ওষুধ প্রয়োগ করা হবে। পাশাপাশি বিরল ও জটিল জিনগত রোগ, প্যারালাইসিস, পেশীগত সমস্যা সমাধানে এই ওষুধ কার্যকর। এর প্রয়োগে স্পাইনাল মাসকুলার অট্রফি আক্রান্ত শিশুরা ভেন্টিলেটর ছাড়াই শ্বাস নিতে পারবে। কারণ এই ধরনের রোগে আক্রান্তরা তাদের পেশীগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। ফলে নতুন ওষুধ প্রয়োগে তাদের মুখে হাসি ফুটবে এমনটাই মনে করছে এনএইচএস।
সূত্র : আজকাল
তোতলাদের নিয়ে ঠাট্টা নয়
ডা: হুমায়ুন কবীর হিমু
বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের নাম জানেন না এমন কেউ নেই। তোতলানোর জন্য স্কুলে বন্ধুরা তাকে উত্ত্যক্ত করত। এরিস্টটলও কিন্তু তোতলা ছিলেন। শুধু এরাই নন, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭০ মিলিয়ন মানুষ তোতলামির সমস্যায় ভুগছেন। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। তোতলামির কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে কিছু কিছু বিষয়কে এর জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। বংশগত কারণ আসে প্রথমে। বাবা-মা, ভাই-বোন, মামা, চাচা এমন কারো থাকলে এ সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। গবেষকরা বলেছেন তিনগুণ বেশি। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বংশগতির ধারক জিনের মিউটেশন বা রূপান্তরের কারণেও হতে পারে তোতলামি। অনেক দিন ধরে গবেষণা করেও মস্তিষ্কের কোনো কারণে এ সমস্যা হয় কি না, তা জানাতে পারেননি গবেষকরা। সম্প্রতি বলা হচ্ছে মস্তিষ্কের যে অংশ কথা বলার জন্য কাজ করে তোতলা ব্যক্তিদের সে অংশটি কম কাজ করে। মানসিক চাপ, ভীতি তোতলামির জন্য সরাসরি দায়ী না হলেও এ সমস্যাকে বেশ বাড়িয়ে দেয়।
তোতলামির এ সমস্যা শিশু বয়সে বেশি দেখা দেয়। কিন্তু ভালো হলো তা আবার আপনাআপনি ভালো হয়ে যায়। প্রায় ৮০ শতাংশ তোতলা শিশু ৮-১০ বছরের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থতা লাভ করে। বাকি ২০ শতাংশ আজীবন তোতলাতে পারে। এদের মধ্যে আবার কারো সমস্যা খুব বেশি থাকে কেউ আবার অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই কথা বলে। এদের তোতলামি ধরা পড়ে না সহজেই।
তোতলামি হলে সবচেয়ে যে সমস্যা হয় তা হলো- কারো সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা কঠিন হয়। এদের কথা বলতে বেশি সময় লাগে। মনের ভাব প্রকাশ করা কষ্টকর হয়। অনেকে এতে বিরক্ত হন। ফলে তোতলানো ব্যক্তি দমে যান। বিষণ্নতায় ভোগেন। সবসময় মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। কর্মক্ষেত্রে এরা সুবিধা করতে পারেন না বলে হতাশ হয়ে পড়েন।
মা-বাবা তোতলা শিশুকে নিয়ে খুব হতাশ হয়ে যান। সমাজের অন্যদের থেকে দূরে রাখেন। এতে সমস্যা আরো বাড়ে। এমনটা করবেন না। শিশুকে অন্যদের সাথে মিশতে দিন। কেউ উত্ত্যক্ত করলে ব্যবস্থা নিন। শিশুকে সাহস দিন। তার মনোবল চাঙ্গা করুন। দেখবেন সে আত্মবিশ্বাসী হলে সমস্যা কমে যাবে।
তোতলামি দূর করার চিকিৎসা নেই। তবে কিছু ব্যায়াম বেশ ভালো কাজ করে। স্পিচ থেরাপি ভালো কাজ করে। এভাবে তোতলামি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হবে। অনেকে মনে করেন তোতলামি পাপের ফসল। এটা বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা। অনেকে শিশুর চিকিৎসার জন্য মুখের মধ্যে পয়সা রাখেন। এটাও কুসংস্কার। কোনো গবেষণায় এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়নি। উল্টো শিশু পয়সা গিলে ফেললে শ্বাসবন্ধ হয়ে মারাও যেতে পারে। তাই সাবধান।