গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে কী কী ফল খাবেন

ডা. অচিন্ত্য মিত্র | Mar 09, 2021 09:39 pm
গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে কী কী ফল খাবেন

গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে কী কী ফল খাবেন - ছবি : সংগৃহীত

 

ক্ষণস্থায়ী বসন্তের পর গ্রীষ্মকাল প্রায় আগত। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের মধ্যে পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন দেখা যায়। আমাদের চারপাশের গাছপালা, পশুপাখি এমনকী মানবজীবনেও তার প্রভাব পরে। এই সময়ে তিক্ত, কষায় ও কটূ রসের বৃদ্ধি পায় এবং শরীরকে রুক্ষ ও শুষ্ক করে দেয়। ফলে বল হানিও হয়। বিভিন্ন ঋতুতে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখার জন্য প্রকৃতি আমাদের কাছে তার অকৃত্রিম সম্পদও সাজিয়ে রেখেছে। গ্রীষ্মের বিভিন্ন ফলমূল যেমন— আম, তরমুজ, ফুটি, লিচু, তাল শাঁস, জাম, বেল, জামরুল, লেবু, নারকেল, ফলসা, পেয়ারা, পেঁপে, তাল, আঙুর, আনারস ইত্যাদি গ্রাম-বাংলায় সহজেই পাওয়া যায়। এগুলি আমাদের শরীরের বলবৃদ্ধি করে। পাশাপাশি পুষ্টি প্রদানও করে।

গরমকালে খাদ্য ও পানীয় কেমন হবে?
গ্রীষ্মকালে মধুর রস, লঘু ও স্নিগ্ধ, শীত ও দ্রবজাতীয় আহার ও পানীয় গ্রহণ করা উচিত। বিভিন্ন ঘরোয়া দেশীয় শরবত যেমন— পাতিলেবু শরবত, আমের পান্না ও কাঁচা আম পোড়ার শরবত, ধনে ও মৌরীর সরবত, গোলাপের শরবত অত্যন্ত উপাদেয়। এগুলি শরীরে তৎক্ষণাৎ শক্তি ও পুষ্টি প্রদান করে। এছাড়া শরীরে ইলেকট্রোলাইসের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে ও সূর্যের প্রখর তাপ থেকে রক্ষা করে।

পাকা ও কাঁচা আম
আমকে আমরা ফলের রাজা বলে থাকি তার স্বাদ ও পুষ্টিগুণের জন্য। আমের আর একটি পোশাকি নাম আছে—‘রসাল’। আম শরীরে রস প্রদান করে যা গ্রীষ্মকালের প্রখর সূর্যালোকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। গরমে পাকা আম অবশ্যই খাদ্যতালিকায় রাখবেন।

কাঁচা আমেরও গুণের শেষ নেই। আম পান্না ও আম পোড়ার শরবত বানাতে কাঁচা আম লাগে। কাঁচা আমের চাটনি শেষ পাতে অবশ্যই যেন থাকে। আম থেকে তৈরি বিভিন্ন আচার, জ্যাম, জেলি ইত্যাদি অত্যন্ত উপকারী। আমের সরবত বানাতে গেলে কাঁচা আমকে টুকরো টুকরো করে কেটে পানিতে সিদ্ধ করে নেবেন অথবা গোটা আমকে আগুনে ঝলসে নিয়ে শাঁসকে পানিতে মিশিয়ে তরল করতে হবে। মিশ্রণটিকে ভালো করে ছাঁকনিতে ছেঁকে পরিমাণমতো আখের গুড় বা চিনি, ভাজা জিরে গুঁড়ো, পুদিনাপাতা এবং লবণ মেশাতে হবে। দুপুরে এক গ্লাস করে পান করলে ‘লু’ লাগা বা সান স্ট্রোক থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

বেল, ছাতু : পাকা বেলের শরবত, ছাতুর শরবত, ফলসার শরবতের কোনো জবাব নেই। ২৫০ গ্রাম পাকা ফলসার ফল পরিষ্কার কাপড়ে রেখে হাত দিয়ে ভালোভাবে রস বের করে অল্প চিনি, সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে ফলসার শরবত তৈরি করা যায়। ফলসার বিশেষ উপকার আছে যা প্রদাহ, জ্বর ইত্যাদিতে কাজ দেয়।

কেমন হবে ফলের ডায়েট?

গ্রীষ্মকালে আমাদের খাদ্যতালিকায় অতিঅবশ্যই দেশীয় ফলমূলকে প্রাধান্য দিতে হবে। সকালের বা বিকেলের নাস্তার সঙ্গে আম, তরমুজ, ফুটি, জামরুল, পেয়ারা ইত্যাদি থাকলে ভালো। দিনে কমপক্ষে তিন ধরনের ফল খেলে শরীরের স্নিগ্ধতা রক্ষা করা যায়। দুপুরের খাবারের সাথে পাতিলেবু খাওয়া যেতে পারে। আর শেষ পাতে টক দই থাকতে অগ্ন্যাশয়ের কার্যকারিতাকে ত্বরান্তিত করে। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন শরবত বা পানীয় বা ফলের রস পান করা যেতে পারে।

কী করবেন না?
 ঠাণ্ডা পানীয় যতটা বর্জন করুন।
 আমদানিকৃত বিদেশি ফলমূল বেশি দামে না খাওয়াই ভালো। সেগুলি কী অবস্থায় আনা হয়েছে, কীভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে আমরা জানি না।
 দেশীয় সহজলভ্য ফলমূল গ্রহণ করাই বাঞ্ছনীয়।
 কাটা ফল বা রাস্তার ধারের শরবত পান করবেন না। এতে পানিবাহিত রোগ হতে পারে।

কী করবেন
১. প্রতিদিন কমপক্ষে তিন ধরনের ফল খাবেন।
২. দেশীয় সহজলভ্য ফলমূল খাওয়াই ভালো। এতেই প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান হয়।
৩. প্রতিদিন প্রচুর পানিপানের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ফলের শরবত পান করা যেতে পারে। বিশেষত পাতিলেবুর শরবত বিশেষ উপকারী।
৪. যে সময়ে যে ফল পাওয়া যায় বা সহজলভ্য, সেই সময়ে সেটাই গ্রহণ করাই ভালো।

সূত্র : বর্তমান


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us