অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট এত সুবিধা পান!
ট্রাম্প ও ওবামা : সাবেক দুই মার্কিন প্রেসিডেন্ট - ছবি সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্টরা তাদের প্রেসিডেন্সির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সাধারণত বেকার জীবনযাপন করেন। বেকার বলছি এই অর্থে যে তাদের নিয়মিত উপার্জনের পথ তখন বন্ধ হয়ে যায়। মেয়াদ শেষে অনেকে অবশ্য বিভিন্ন বেসরকারি চাকরির অফার পান, কিন্তু সেগুলোতে যোগ দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের মর্যাদা খাটো করতে চান না কেউই। নিজের মেয়াদকাল শেষে প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান অনেক বেসরকারি চাকরির অফার পেয়েছিলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পদটিকে বাণিজ্যিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চান না বলে তিনি সবগুলো চাকরির অফার ফিরিয়ে দেন। অন্য কোনো উপার্জন না থাকায় তিনি অর্থকষ্টে ভুগছিলেন। ট্রুম্যানের এই অর্থকষ্ট দেখেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার ১৯৫৮ সালে ‘ফর্মার প্রেসিডেন্টস অ্যাক্ট’ পাশ করেন, যাতে প্রেসিডেন্টরা সাবেক হয়ে গেলে তাদেরকে অর্থকষ্টে ভুগতে না হয়।
এই আইনের অওতায় সাবেক প্রেসিডেন্টরা সরকারি পেনশন, নিজস্ব অফিস খরচ ও ভ্রমণ ভাতা পান। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রণালয় থেকে এখন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার, বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ. বুশ এবং বারাক ওবামা, প্রত্যেকে আমৃত্যু বার্ষিক ২০ হাজার ডলার করে পেনশন পান। সাবেক প্রেসিডেন্টদের মধ্যে যদি কেউ মারা যান, তাহলে তার স্বামী/স্ত্রী আজীবন ওই পেনশন পাবেন।
সাবেক প্রেসিডেন্টদের নিজস্ব অফিস, অফিসের ফার্নিচার ও স্টাফের যাবতীয় খরচও সরকার দেয়। এই খরচ একেক প্রেসিডেন্টের বেলায় একেক রকম। যেমন, ২০১০ সালে জিমি কার্টার তার অফিসের জন্য বার্ষিক ১ লাখ দুই হাজার ডলার পেয়েছেন, কিন্তু বিল ক্লিনটন পেয়েছেন ৫ লাখ ১৬ হাজার ডলার।
পেনশন এবং অফিস খরচের বাইরেও সাবেক প্রেসিডেন্টরা, তাদের স্ত্রী/স্বামী এবং তাদের ১৬ বছর বয়সের নিচের সন্তানেরা ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের নিরাপত্তা পান। ১৯৮৫ সালে, প্রেসিডেন্সির মেয়ার শেষ হওয়ার ১১ বছর পর, রিচার্ড নিক্সন যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে জানিয়ে দেন যে তার আর সিক্রেট সার্ভিসের নিরাপত্তা লাগবে না। তার জন্য নিরাপত্তা দিতে সরকারের বাৎসরিক যে ৩০ লাখ ডলার খরচ হয়, সে অর্থ তিনি আর খরচ করতে চাচ্ছিলেন না। তার পরিবর্তে তিনি নিজের অর্থে ব্যক্তিগত বডিগার্ড রেখেছিলেন। নিক্সনই এখন পর্যন্ত একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি সিক্রেট সার্ভিসের নিরাপত্তা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
শীতকালে ঘন ঘন প্রস্রাব করতে হয় কেন?
ধরুন, বাইরে বেশ ঠান্ডা পড়েছে। আপনি একটু আরাম করে কম্বলের নিচে নিজেকে এলিয়ে দিলেন। কম্বলও একটু উষ্ণ হতে শুরু করেছে। ঠিক এমন সময়ই আপনার প্রস্রাবের বেগ হলো। আপনার মনে রিবক্তি আসাটাই স্বাভাবিক। সেই সঙ্গে একটি প্রশ্নও মনে জাগতে পারে, শীতকালে তো আমরা পানি বেশি খাই না, তাহলে কেন এত ঘন ঘন প্রস্রাব করতে হয়!
অনেকেরই শীতকালে ঘন ঘন পস্রাব করতে হয় এবং এর পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণও আছে।
প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের শীরের সম্পর্ক এর জন্য দায়ি। এটা আসলে মানুষের এক ধরণের সাইকোলজিক্যাল রিঅ্যাকশন, যা ‘কোল্ড ইনডিউসড ডাইয়ুরেসিস’ নামে পরিচিত। শীতকালে বেশি ঠান্ডা লাগে, যার প্রভাবে আমাদের আমাদের ঘন ঘন পস্রাবের চাপ তৈরি হয়। মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্র ৩৬-৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু শীতের সময় অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় আমাদের শরীরে কাঁপুনি ধরে, রক্তনালীগুলো আরও সংকুচিত হয়ে যায়, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গে আরও বেশি রক্ত সঞ্চালন করে এবং শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
এই অতিরিক্ত রক্তপ্রবাহ যখন কিডনিতে সঞ্চালিত হয়, তখন একে বলে ‘ভাস্কোকনস্ট্রিকশন’। কিডনির কাজই হচ্ছে রক্ত থেকে বর্জ্য আলাদা করে ফেলা এবং এই বর্জ্যটাই হচ্ছে পস্রাব। শীতকালে যখন কিডনিতে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহিত হয়, তখন কিডনিও অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য হয়। অর্থাৎ, সে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বর্জ্য উৎপাদন করে। এ কারণেই আমাদেরও ঘন ঘন বাথরুমে যেতে হয়। ব্লাডার (প্রস্রাবের থলি) পরিপূর্ণ থাকলে শরীর তাপমাত্রা হারাতে থাকে। তাই শরীরকে উষ্ণ রাখতে দ্রুত পস্রাব করে নেয়াই ভালো। অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহওয়া শরীরের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা ও বিভিন্ন সিস্টেমকে কে দুর্বল করে দেয় এবং ব্লাডারের সঙ্গে সংযুক্ত নার্ভ সিস্টেমের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। যার ফলে এই রকম পরিস্থিতিতে মানুষ অনেক সময় স্ট্রেস অনুভব করতে পারে।
শীতকালে ঘন ঘন বাথরুমে যেতে হয় বলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। বরং অতিরিক্ত ঠান্ডা থেকে আমাদের শরীর এভাবেই আমাদেরকে সুরক্ষিত রাখে। তাই এটি অবশ্যই শরীরের জন্য ভালো। তবে অতিরিক্ত পস্রাব কিন্তু আবার হাইপোথার্মিয়ার লক্ষণও হতে পারে। এইরকম পরিস্থিতি তৈরী হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। শীতকালে ঘন ঘন বাথরুমে যেতে না চাইলে নিজেকে সবসময় উষ্ণ আবহাওয়ায় রাখুন অথবা বেশি বেশি শারীরিক পরিশ্রম করুন।