পানি তো নষ্ট হয় না, তাহলে পানির বোতলে মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ লেখা থাকে কেন?
পানির বোতল - ছবি সংগৃহীত
অপচনীয় পণ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ লেখাটা কিছুটা অযৌক্তিক। মাছ, মাংস বা দুগ্ধজাত পণ্যের গায়ে মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ লেখাটা হয়তো ঠিক আছে। কিন্তু খাবার পানির বোতলে মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ লেখাটাকে অনেকের কাছে ‘ননসেন্স’ মনে হতে পারে। H2O কী দীর্ঘদিন কিংবা আজীবন একইরকম থাকার কথা না?
উত্তর হচ্ছে- ‘হ্যাঁ’। কিন্তু এই মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখের সঙ্গে পানির কোনো সম্পর্ক নেই। ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি রাজ্য নতুন এক আইন জারি করে যার ফলে সেই রাজ্যে বিক্রিত প্রতিটি খাদ্যপণ্যে সর্বোচ্চ দুই বছর বা তার কম মোয়াদোত্তীর্ণ তারিখ লেখা থাকতে হবে। এই আইনের কারণে নিউ জার্সিতে বিক্রিত সব পানির বোতলের গায়ে দুই বছরের মেয়াদ লেখা থাকতো। এমনকি সেখান থেকে অন্যান্য রাজ্যগুলোতেও যেসব পানি রফতানি করা হতো, সেগুলোর গায়েও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ লেখা থাকতো। সেই থেকে ধীরে ধীরে এটি একটি রীতিতে পরিণত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) কখনোই খাবার পানির জন্য নির্দিষ্ট কোনো মেয়াদোত্তীর্ণের সময়সীমা বেধে দেয়নি। নিউ জার্সিও এক পর্যায়ে এই আইন বাতিল করে। কিন্তু বহু বছর প্রচলিত থাকার ফলে এটি স্থায়ী রীতিতে পারিণত হয়। বোতলজাত কোম্পানিগুলোও এই রীতি মেনে বোতলের গায়ে এক্সপাইরেশন ডেট লেখা চালু করেছে।
‘এক্সপায়ার্ড’ পানি শরীরের জন্য ক্ষতিকর না, এটা যেমন ঠিক, তেমনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর এ পানি পান না করাই ভালো। পানির বোতলে যে প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয় সেখানে পলিথিন টেরিপথালেট এবং হাই ডেনসিটি পলিথিন ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘদিন বোতলে থাকার কারণে তাই পানির স্বাদ কিছুটা নষ্ট হয়ে যায়।
পরমাণু হামলা থেকেও রক্ষা পেতে পারে তেলাপোকা!
বিশ্বব্যাপী অনেকের মধ্যে একটা ধারণা প্রচলিত আছে যে তেলাপোকা পরমাণু বোমা হামলা মোকাবেলা করেও বেঁচে থাকতে সক্ষম। কিন্তু সামান্য কীটনাশকেও যে প্রাণীটি মারা যায়, সে কীভাবে এমন ভয়াবহ হামলা মোকাবেলা করে বেঁচে থাকতে পারে?
ওকে, অদ্ভুত শোনালেও এটি মোটামুটি সঠিক যে তেলাপোকা পরমাণু বোমা হামলায় বেঁচে যেতে পারে, তবে তার জন্য অনেক জিনিস তেলাপোকার পক্ষে থাকতে হবে।
মেরুদণ্ডী প্রণীদের তুলনায় পোকামকড়ের রেডিয়েশন রেজিস্ট্যান্স বেশি। মানে, দূষিত রেডিয়েশনে মেরুদণ্ডী প্রাণীদের তুলনায় পোকামাকড় বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারবে। এর কারণ, পোকামাকড় আকারে খুবই ছোট হয়। আবার, তেলাপোকার একটা বিশেষ গুণ হচ্ছে এরা স্বল্প পুষ্টিতেও দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকতে পারে।
কোনো শহরের ওপর যদি নিউক্লিয়ার বোমা হামলা চালানো হয়, তাহলে তার প্রথম আঘাতটা আসবে মেরুদণ্ডী প্রাণী যেমন- মানুষ, গরু, ছাগল ইত্যদির ওপর। তেলাপোকার মতো অন্যান্য পোকামাকড় তখন এই সহজেই বিপদ এড়াতে গর্তে ঢুকে যেতে পারে। সমতলে যেমন রেডিয়েশন থাকবে, গর্তের ভেতর তেমন কোনো রেডিশেনই থাকবে না। অর্থাৎ, তেলাপোকা গর্তের ভেতরে নিরাপদেই থাকতে পারবে।
এরপর আসে প্রাণীর খাবার যোগানের ব্যাপার। এখানেই তেলাপোকা এগিয়ে যায়। অন্যান্য প্রাণীর কিছুক্ষণের মধ্যেই খাবারের সন্ধানে বের হতে হবে, কিন্তু তেলাপোকা যেহেতু স্বল্প পুষ্টিতে দীর্ঘ দিন বেঁচে তাকতে পারে, তাই তার গর্ত থেকে না বের হলেও চলে।
এই ব্যাপারটি মাথায় রেখেই অনেক গবেষকও বলেন যে নিউক্লিয়ার বোমা হামলায়ও তেলাপোকার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে।
এবার আসি তেলাপোকার বিষের প্রসঙ্গে। কীটনাশক দিয়ে খুব সহজেই তেলোপোকাকে মেরে ফেলা যায়। কারণ ওই নির্দিষ্ট কীটনাশক তৈরী করাই হয়েছে তেলাপোকাকে মারার জন্য এবং এটি যখন সরাসরি সেটিকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় তখন সে এই কীটনাশক থেকে পালিয়ে যেতে পারে না। কিন্তু নিউক্লয়ার হামলা চালানোর সময় কেউ তেলাপোকাকে সরাসরি লক্ষ্য করে না। কিন্তু তেলাপোকা যদি কোনো ক্ষতিকর রেডিয়েশনের আওতা থেকে না বের হতে পারে, তাহলে সে অবশ্যই মারা যাবে।