যে কারণে নতুন দল করতে চান না ট্রাম্প

অন্য এক দিগন্ত | Mar 01, 2021 08:28 pm
ডোনাল্ড ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প - ছবি : সংগৃহীত

 

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ব্যাপারে তার কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ সেরকম কিছু হলে রিপাবলিকান ভোট ভাগ হয়ে যাবে।

ফ্লোরিডাতে রক্ষণশীলদের এক সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট এই মন্তব্য করেন।

জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথম কোথাও ভাষণ দিলেন ট্রাম্প যাতে তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ এখন "সবার আগের পরিবর্তে সবার শেষে চলে গেছে।"

অরল্যান্ডোতে রোববার কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্স সিপিএসির সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে তিনি যে ভাষণ দিয়েছেন তা থেকে বোঝা যায় রিপাবলিকান পার্টির ভেতরে এখনও তার প্রভাব রয়েছে।

এই সম্মেলনকে যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীলদের একটি প্রভাবশালী সমাবেশ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং রিপাবলিকান পার্টির দিক নির্দেশনার বিষয়ে এটিকে বিবেচনা করা হয় ব্যারোমিটার হিসেবে। ১৯৭৪ সাল থেকে এই সম্মেলনটি হয়ে আসছে।

সম্মেলনের পরিবেশ ছিল পুরোপুরি ট্রাম্পপন্থী। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে আরো যারা বক্তব্য রেখেছেন তাদের মধ্যে ছিলেন টেক্সাসের সেনেটর টেড ক্রুজ এবং ট্রাম্পের ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারে এখনো নিষিদ্ধ ট্রাম্প। জানুয়ারি মাসে ক্যাপিটল হিলে সহিংস হামলার এসব প্ল্যাটফর্ম তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

হোয়াইট হাউজ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি ফ্লোরিডাতে তার গল্ফ কোর্সের রিসোর্টে বসবাস করছেন।

কী বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প?
চুয়াত্তর বছর বয়সী সাবেক প্রেসিডেন্ট যখন ভাষণ দিতে মঞ্চে আরোহণ করেন তখন তার সমর্থকরা চিৎকার করে তাকে স্বাগত জানায়। এসময় অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না।

"আজ আমি আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি এটা ঘোষণা করতে যে চার বছর আগে আমরা সবাই মিলে যে অবিশ্বাস্য যাত্রা শুরু করেছিলাম সেটা এখনও শেষ হয়ে যায়নি," বলেন তিনি।

"আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলতে আমরা এখানে জড়ো হয়েছি। আমাদের আন্দোলনের ভবিষ্যৎ, আমাদের দলের ভবিষ্যৎ এবং আমাদের প্রিয় দেশের ভবিষ্যৎ।"

নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ব্যাপারে যেসব কথাবার্তা শোনা যাচ্ছিল সেগুলোকে তিনি গুজব বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, "এসব ফেক নিউজ বা ভুয়া খবর।"

এর পর তিনি কৌতুক করে বলেন, "এটা কি দারুণ ঘটনা হবে না? চলুন আমরা নতুন একটা দল করি যাতে আমাদের ভোট বিভক্ত হয়ে যায় এবং আমরা আর কখনো জিততে পারব না।"

"আমাদের আছে রিপাবলিকান পার্টি। এই দলটি এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশি একতাবদ্ধ এবং শক্তিশালী হয়ে উঠবে," বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যাওয়া এবং ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়লেও মি. ট্রাম্প তার ভোটারদের কাছে এখনও প্রচণ্ড জনপ্রিয়।

গত সপ্তাহে তার ভোটারদের ওপর একটি জরিপ চালানো হয়েছে এবং তাতে দেখা গেছে তিনি যদি রিপাবলিকান পার্টি ছেড়ে একটি নতুন দল গঠন করেন, সমর্থকদের ৪৬% তাকেই ভোট দেবেন।

সিপিএসি সম্মেলনে দেয়া ভাষণেও তিনি দাবি করেন যে নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের কারণে তিনি ডেমোক্র্যাটসদের কাছে হেরে গেছেন।

এসময় তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ারও ইঙ্গিত দেন। বলেন, "কে জানে আমি তাদেরকে তৃতীয়বারের মতো পরাজিত করার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিতে পারি।"

প্রেসিডেন্ট বাইডেন সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি বাইডেন প্রশাসন খারাপ করবে কিন্তু তারা কতটা খারাপ করবে আমাদের কেউ সেটা কল্পনা করতে পারবে না।"

রাজনীতিতে ফিরলেন ট্রাম্প?
যুক্তরাষ্ট্রে বিবিসির একজন বিশ্লেষক অ্যান্থনি জুর্কার বলেন, এক মাস দৃশ্যপটের বাইরে থাকার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিরে এসেছেন। আর এজন্য তিনি এই সম্মেলনকেই বেছে নিয়েছেন।

আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আভাস দিলে সম্মেলনে উপস্থিত সবাই তাকে সমর্থন জানিয়েছেন বলেও তিনি জানান।

অ্যান্থনি জুর্কার বলেন, "রিপাবলিকান দলের ভেতরে তার প্রভাব অটুট আছে তবে আরো একটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি তার এই প্রভাব কতটা কাজে লাগাতে পারবেন তা এখনও পরিষ্কার নয়।"

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে রিপাবলিকান আইন-প্রনেতারা মোটামুটি তার প্রতি অনুগত ছিলেন। কিন্তু প্রতিনিধি পরিষদে ১০ জন তাকে অভিশংসিত করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর সেনেটে বিচার চলাকালে সাতজন ভোট দিয়েছেন তাকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য।

কংগ্রেসে রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেল সাবেক প্রেসিডেন্টের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন এবং বিচারে খালাস পাওয়ার পর ক্যাপিটল হিলের সহিংসতায় উস্কানি দেওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করেন। তবে শেষ পর্যন্ত মি. ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করার বিরুদ্ধে তিনি ভোট দিয়েছেন।

এর পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ম্যাককনেলের সমালোচনা করে তাকে "একগুঁয়ে, গোমড়া-মুখো" বলে উল্লেখ করেন।

সূত্র : বিবিসি


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us