কেমন লোক অ্যামাজনের পরবর্তী সিইও অ্যান্ডি জ্যাসি
অ্যান্ডি জ্যাসি - ছবি : সংগৃহীত
ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদ ছাড়ছেন জেফ বেজোস। আগামী জুলাই থেকে এই পদে স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন অ্যামাজনেরই ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবসা বিভাগের প্রধান অ্যান্ডি জ্যাসি।
১৯৬৮ সালের ১৩ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন অ্যান্ডি জ্যাসি। তার শৈশব কেটেছে নিউইয়র্কের স্কারসডেল শহরে। সেখানেই তার স্কুলজীবন শুরু। অ্যান্ডি জ্যাসি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন হার্ভার্ড কলেজ থেকে এবং এমবিএ সম্পন্ন করেন হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে। স্নাতক সম্পন্নের পর এমবিএ করার আগেই প্রকল্প ব্যবস্থাপক হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছর চাকরি করেছিলেন জ্যাসি। ওই কাজের অভিজ্ঞতা অ্যামাজনে কাজ পেতে সহায়তা করেছিল।
১৯৯৭ সালে অ্যামাজনে যোগদান করেছিলেন অ্যান্ডি জ্যাসি। এরপর অ্যামাজনের ক্লাউড ব্যবসা বিভাগ ‘অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেসের (এডব্লিউএস)’ নেতৃত্ব দেন তিনি। তার নেতৃত্বেই এডব্লিউএসের ব্যবসায় রেকর্ড উল্লম্ফন দেখা যায় এবং অ্যামাজনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা বিভাগে পরিণত হয় এডব্লিউএস।
অ্যামাজনে কর্মজীবন শুরুর পর ২০০০ সালের দিকে জেফ বেজোসের কারিগরি অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অ্যান্ডি জ্যাসি। তখনো অ্যামাজনের পরিচয় অনলাইন বই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায় বৈচিত্র্য আনতে এবং অনলাইন বই বিক্রেতার তকমা ঘোচাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন অ্যান্ডি জ্যাসি।
অ্যামাজনের ক্লাউড ব্যবসা বিভাগ এডব্লিউএসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্ডি জ্যাসি। ২০০৬ সালে অ্যামাজনের এ বিভাগ চালুর সময় অ্যান্ডি জ্যাসির দলে ৫৭ জন কাজ করেন। প্রতিষ্ঠাতা হলেও দীর্ঘ ১০ বছর পর এডব্লিউএসের সিইও হিসেবে অ্যান্ডি জ্যাসির নাম ঘোষণা করা হয়। এবার অ্যামাজনের সিইও হিসেবে অ্যান্ডি জ্যাসির নাম ঘোষণার প্রধান কারণ হলো তার নেতৃত্বে এডব্লিউএসের ব্যাপক ব্যবসায় সাফল্য। এডব্লিউএসের সুবাদে ই-কমার্সের পাশাপাশি অ্যামাজন এখন ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তি খাতে শীর্ষে রয়েছে। এডব্লিউএসের সাফল্যের জেরে ২০১৬ সালের মার্চে দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ খেতাব পান অ্যান্ডি জ্যাসি। একই বছরের এপ্রিলে এডব্লিউএসের সিইওর দায়িত্ব পান তিনি।
অ্যান্ডি জ্যাসি মনে করেন, জীবনে সফল হওয়ার চাবিকাঠি হলো পুনর্বিন্যাস। তার দাবি, আপনি তখনই পুনর্বিন্যাসের চেষ্টা করবেন, যখন আপনি সুস্থ থাকবেন। আপনি সর্বদা পুনর্বিন্যাসের চেষ্টায় থাকবেন। সত্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছতে আর্থিক সচ্ছলতার পাশাপাশি নিরলস পরিশ্রমী ও কঠোর হতে হবে। আপনাকে জানবে হবে কোনটা কাজে দেবে, আর কোনটা কাজে দেবে না।
অ্যামাজনের শেয়ারের মালিকানায় রয়েছেন অ্যান্ডি জ্যাসি। যার আর্থিক মূল্য তিন কোটি ডলার। অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেসের সিইও হিসেবে গত বছর তার পারিশ্রমিক ছিল এক লাখ ৭৫ হাজার ডলার।
২৭ বছর আগে জেফ বেজোসের হাত ধরে কার্যক্রম শুরুর সময় অ্যামাজনের পরিচয় ছিল কেবল অনলাইনে বই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। অ্যামাজনের সে পরিচয় এখন ‘দ্য এভরিথিং স্টোর’ হিসেবে পরিচিত, অর্থাৎ যে দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি থেকে খুঁটিনাটি সবকিছু পাওয়া যায়।