হঠাৎ করে হাত-পায়ে ঝি-ঝি লাগে বা অবশ হয়ে যায় ? মারাত্মক রোগের ইঙ্গিত!
হঠাৎ করে হাত-পায়ে ঝি-ঝি লাগে বা অবশ হয়ে যায় ? মারাত্মক রোগের ইঙ্গিত! - ছবি সংগৃহীত
আপনার কি হঠাৎ হঠাৎ হাত পায়ে ঝি-ঝি লেগে যায়? মানে ধরুন অনেক্ষণ কোথাও বসে আছেন, তারপর হঠাৎ পায়ে ঝি-ঝি লেগে যাওয়া বা অবশ হয়ে যাচ্ছে। কিংবা হাতে ভর দিয়ে কাজ করছিলেন হঠাৎ দেখলেন হাতটা অবশ হয়ে গেছে নাড়াতে পারছেন না। কিংবা মাঝে মধ্যেই শরীরের কিছু অংশ অবশ হয়ে যাচ্ছে? তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে আপনাকে। কঠিন রোগ হতে পারে আপনার!
থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, বা স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা থাকে এতে। ভেতরে ভেতরে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে থাইরয়েড বা ডায়াবেটিস।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্নায়ু যদি কোনো কারণে চাপ পড়ে শরীরের সেই অংশে কোনো অনুভূতি কাজ করে না ঝিন ঝিন করে বা অবশ লাগে। চিকিৎসকদের মতে, শারীরিক দুর্বলতা বা কোনো রকম সংক্রমণের প্রভাব থাকলে এমনটা হতে পারে।
যদি আমাদের শরীরে রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে না হয় তবে তা আমাদের শিরাগুলোতে প্রভাব ফেলে, যার কারণে আমাদের দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন ঠিকমতো পৌঁছায় না তখন আমাদের ঝিমঝিম বা অবশ হয়ে যায় শরীরের অংশ।
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, নিউরালজিয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। শরীরের যেকোনো অংশেই এই সমস্যা হতে পারে এই রোগ। বিশেষ করে কোনো সংক্রমণের কারণে। তাই এই রকম অবশ হয়ে গেলে আগে ডাক্তারের কাছে যান। অবহেলা করবেন না।
সূত্র : নিউজ ১৮
তোতলাদের নিয়ে ঠাট্টা নয়
ডা: হুমায়ুন কবীর হিমু
বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের নাম জানেন না এমন কেউ নেই। তোতলানোর জন্য স্কুলে বন্ধুরা তাকে উত্ত্যক্ত করত। এরিস্টটলও কিন্তু তোতলা ছিলেন। শুধু এরাই নন, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭০ মিলিয়ন মানুষ তোতলামির সমস্যায় ভুগছেন। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। তোতলামির কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে কিছু কিছু বিষয়কে এর জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। বংশগত কারণ আসে প্রথমে। বাবা-মা, ভাই-বোন, মামা, চাচা এমন কারো থাকলে এ সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। গবেষকরা বলেছেন তিনগুণ বেশি। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বংশগতির ধারক জিনের মিউটেশন বা রূপান্তরের কারণেও হতে পারে তোতলামি। অনেক দিন ধরে গবেষণা করেও মস্তিষ্কের কোনো কারণে এ সমস্যা হয় কি না, তা জানাতে পারেননি গবেষকরা। সম্প্রতি বলা হচ্ছে মস্তিষ্কের যে অংশ কথা বলার জন্য কাজ করে তোতলা ব্যক্তিদের সে অংশটি কম কাজ করে। মানসিক চাপ, ভীতি তোতলামির জন্য সরাসরি দায়ী না হলেও এ সমস্যাকে বেশ বাড়িয়ে দেয়।
তোতলামির এ সমস্যা শিশু বয়সে বেশি দেখা দেয়। কিন্তু ভালো হলো তা আবার আপনাআপনি ভালো হয়ে যায়। প্রায় ৮০ শতাংশ তোতলা শিশু ৮-১০ বছরের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থতা লাভ করে। বাকি ২০ শতাংশ আজীবন তোতলাতে পারে। এদের মধ্যে আবার কারো সমস্যা খুব বেশি থাকে কেউ আবার অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই কথা বলে। এদের তোতলামি ধরা পড়ে না সহজেই।
তোতলামি হলে সবচেয়ে যে সমস্যা হয় তা হলো- কারো সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা কঠিন হয়। এদের কথা বলতে বেশি সময় লাগে। মনের ভাব প্রকাশ করা কষ্টকর হয়। অনেকে এতে বিরক্ত হন। ফলে তোতলানো ব্যক্তি দমে যান। বিষণ্নতায় ভোগেন। সবসময় মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। কর্মক্ষেত্রে এরা সুবিধা করতে পারেন না বলে হতাশ হয়ে পড়েন।
মা-বাবা তোতলা শিশুকে নিয়ে খুব হতাশ হয়ে যান। সমাজের অন্যদের থেকে দূরে রাখেন। এতে সমস্যা আরো বাড়ে। এমনটা করবেন না। শিশুকে অন্যদের সাথে মিশতে দিন। কেউ উত্ত্যক্ত করলে ব্যবস্থা নিন। শিশুকে সাহস দিন। তার মনোবল চাঙ্গা করুন। দেখবেন সে আত্মবিশ্বাসী হলে সমস্যা কমে যাবে।
তোতলামি দূর করার চিকিৎসা নেই। তবে কিছু ব্যায়াম বেশ ভালো কাজ করে। স্পিচ থেরাপি ভালো কাজ করে। এভাবে তোতলামি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হবে। অনেকে মনে করেন তোতলামি পাপের ফসল। এটা বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা। অনেকে শিশুর চিকিৎসার জন্য মুখের মধ্যে পয়সা রাখেন। এটাও কুসংস্কার। কোনো গবেষণায় এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়নি। উল্টো শিশু পয়সা গিলে ফেললে শ্বাসবন্ধ হয়ে মারাও যেতে পারে। তাই সাবধান