ঘামে দুর্গন্ধ? রইল সমাধানের উপায়
ঘামে দুর্গন্ধ? রইল সমাধানের উপায় - ছবি সংগৃহীত
মাত্র ২ মিনিটের নোটিশে বাড়ি থেকে বেরোলে কী কী সঙ্গে নেন আপনি? প্রশ্ন করলে কেউ বলবেন, টাকার ব্যাগ, মোবাইল, কেউ বা হেডফোন। অনেকের আবার সঙ্গে ডিও রাখা মাস্ট। শুধু নিজের জন্য নয়, রাস্তা ঘাটে, অফিসে সহযাত্রী কিমবা সহকর্মীদের জন্যেও সুগন্ধী রাখেন অনেকে। নইলে দিনভর নাকে চাপা দিয়ে কাটাতে হয়। এই গরমে বাসে ট্রেনে যাতায়াতের সময় সে কথা ভালোই টের পেয়েছেন আপনি।
কেন কারোর কারোর খুব দুর্গন্ধ হয় গায়ে?
ত্বক বিশেষজ্ঞরা বলেন, গায়ের গন্ধ তৈরি হওয়া একটা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। এটি পিউবার্টির (প্রজনন চক্রে প্রবেশের সময়) সময় শুরু হয়, চলে আজীবন। তবে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ হওয়াটা নিঃসন্দেহে একটা সমস্যা। গন্ধ কিন্তু শুধু মানবশরীরেই হয় না। প্রাণী জগতে অনেক প্রাণীর ক্ষেত্রে দেহ থেকে ফেরোমেন নিঃসৃত হয়। এই ফেরোমেনের জন্যই প্রজনন কালে স্ত্রী বাঘ পুরুষ বাঘকে চিহ্নিত করে।
যে খাবার খাচ্ছেন, সমস্যা তাতেই
চিকিৎসকেরা বলেন, আপনি যা খাচ্ছেন সেখান থেকে যৌগ ভেঙ্গে সরলীকরণ হয়, সেই পদ্ধতিতে সমস্যা থাকছে। খাবারে সালফারের পরিমাণ বেশি থাকলে অনেকের গায়ে দুর্গন্ধ হয়। রেড মিট, ডিম, পেয়য়াজ, ব্রকোলি, রসুন ইত্যাদি খবারে সালফারের পরিমাণ বেশি থাকে। সব খাবারে আলাদা আলাদা রকম ব্যাকটেরিয়া থাকে। এ সব খাবার খেলে নানা রকমের গন্ধ তৈরি হয়। ঘাম উৎপাদক সোয়েট গ্ল্যান্ডের ব্যাকটেরিয়াল ব্রেক ডাউনের ফলে দুর্গন্ধ হয়।
উদ্বেগজনিত সমস্যা
মানসিক ভাবে উদ্বিগ্ন থাকলে দেহের অ্যাপোক্রিন গ্রন্থি সক্রিয় হয়ে ওঠে। আপনার সিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেমকে আরও উত্তেজিত করে তোলে এই গ্রন্থি। স্ট্রেস বা উদ্বেগ কিন্তু দুর্গন্ধের কারণ না, দুর্গন্ধ বাড়িয়ে দেয় শুধু।
শারীরিক সমস্যা
বয়ঃসন্ধিতে অনেকেরই এই সমস্যা হয়। কিন্তু অনেক দিন পেরিয়ে গেলেও সমস্যা চলতে থাকলে বুঝতে হবে বড় কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে।
যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের অনেক সময় গায়ে দুর্গন্ধ হয়। স্নায়ুর অসুখ অথবা হাইপারথায়রইয়েডিসম থাকলেও সমস্যা বাড়তে পারে।
বেশি অ্যালকোহল পান করছেন আপনি
খুব বেশি অ্যালকোহল পান করলে আপনার স্বেদ গ্রন্থি অ্যাসিডিক হয়ে যায়। এর ফলে গায়ে দুর্গন্ধ হয়। যাদের গায়ে দুর্গন্ধ বেশি হয়, তারা এই বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
বক্ষব্যাধির ইমার্জেন্সি
ডা: এ কে এম মোস্তফা হোসেন
বক্ষব্যাধির বেশ কিছু ইর্মাজেন্সি দেখা দেয়। অনেকে এগুলোকে আমলে আনতে চান না। রোগ পালন করে অকালে ঝরে পড়ে অনেক প্রাণ। অথচ একটু সচেতন হলে এ প্রাণগুলো রক্ষা করা যায়। এ ধরনের রোগ নিয়ে আজকের আলোচনা।
হঠাৎ করে তীব্র হাঁপানি-শ্বাসকষ্ট : যদি হঠাৎ করে হাঁপানির তীব্রতা বেড়ে যায় এবং ইনহেলারের ডোজ দ্বিগুণ করার পরেও যদি শ্বাসকষ্ট না কমে তাহলে দেরি না করে তখনই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসবেন। যদি বিশ্রামের সময় শ্বাসকষ্ট থাকে, এক নিঃশ্বাসে একটি বাক্য বলতে না পারে, গলা দিয়ে তীব্র আকারে বাঁশির মতো শব্দ হয়, শ্বাসকষ্টের জন্য রাত্রে ঘুমাতে না পারে, শরীর নীল বর্ণ হয়ে যায়, অজ্ঞান ভাব হয় এই উপসর্গগুলো থাকলে কালবিলম্ব না করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।
অ্যাকুউট এক্সাজারবেশন অব সিওপিডি : দীর্ঘ দিনের ধূমপানের ইতিহাস, বয়স ৪০-এর বেশি, দীর্ঘ দিনের কাশি ও শ্বাসকষ্টের ইতিহাস থাকে, পরিবেশের তারতম্যের কারণে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় এই ধরনের রোগীর যদি হঠাৎ কারে শ্বাসকষ্টের তীব্রতা বেড়ে যায়, কফের পরিমাণ বেড়ে যায়, কফের রঙ হলুদ-সবুজ হয় এবং এর সাথে যদি জ্বর, কাশি, বাঁশির মতো শব্দ আগের চেয়ে বেড়ে যায় তাহলে দেরি না করে অতিসত্বর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসতে হবে। এ ছাড়া দীর্ঘ দিনের কফের সাথে সাথে শরীর নীল হয়, পা ফুলে যায়, অজ্ঞান ভাব হয় বিলম্ব না করে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাবেন।
টেনশন নিউমোথেরাক্স : হঠাৎ করে তীব্র শ্বাসকষ্ট ও একদিকে বুকে ব্যথা থাকলে এর সাথে পূর্বের ফুসফুস সংক্রান্ত জটিলতা যেমন ক্রনিক কফ, যক্ষা, হাঁপানি কাশির ইতিহাস, ফুসফুসে ফোড়ার ইতিহাস থাকলে, ফুসফুসে পূর্বের জটিলতা ছাড়াও তীব্র শ্বাসকষ্ট হতে পারে জন্মগত কারণ থাকলে অনেক সময় টেনশন নিউমোথোরাক্স হতে পারে এবং হৃদরোগ আলাদা করা কঠিন হয়ে যায়, তাই এই রকম সমস্যা থাকলে অতিসত্বর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যেতে হবে।
নিউমোনিয়া
অল্প দিনের বেশি জ্বরের ইতিহাস এবং এর সাথে প্রথম শুকনা কাশি, পরে মরিচা রঙের মতো কফ বের হলে বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হলে দেরি না করে জরুরি বিভাগে নেয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া বুকে ব্যথা, বুক ধরফর করা, শোয়ার কিছুক্ষণ পর শ্বাসকষ্ট হলে, পূর্বে হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে অতিসত্বর রোগীকে হাসপাতালে নেয়া প্রয়োজন। হঠাৎ করে বুকে তীব্র ব্যথা, সাথে সাথে ঘা ঘাম দেয়া, বুকের মাঝে চাপ চাপ লাগা, শ্বাসকষ্ট থাকলে, হৃদরোগ হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়।