আবার স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে কাতালোনিয়া?
আবার স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে কাতালোনিয়া? - ছবি সংগৃহীত
কাতালোনিয়া কি আবার স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে হাঁটবে? বার্সেলোনা কি একটি স্বাধীন দেশের রাজধানী হবে? রিয়াল মাদ্রিদ আর বার্সেলোনার মধ্যে ডার্বি হবে না? এমন অনেক প্রশ্ন আবার সামনে চলে এসেছে। রোববার স্পেনের কাতালোনিয়া প্রদেশের আঞ্চলিক নির্বাচনে বিচ্ছি্ন্নতাবাদী দলগুলোর পাল্লাভারী৷ ফলে স্বাধীনতার দাবিতে মাদ্রিদের সঙ্গে সংঘাতের আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে৷ জোট সরকার গঠনে জটিলতার সম্ভাবনা রয়েছে৷
স্পেন থেকে কাতালোনিয়া প্রদেশের স্বাধীনতার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক পথে চাপ আরো বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে বিচ্ছি্ন্নতাবাদী দলগুলো৷ রোববারের নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার পর আঞ্চলিক পার্লামেন্টে তারা শেষ পর্যন্ত ৭৩ থেকে ৮০টি আসন পেতে পারে৷ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা জন্য ৬৮টি আসনের প্রয়োজন৷ সে ক্ষেত্রে স্বাধীনতার পক্ষে প্রস্তাব পাস করাতে এই শিবিরের পথে কার্যত কোনো বাধা থাকবে না৷
নির্বাচনে এমন সাফল্য সত্ত্বেও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সামনে কিছু বড় সমস্যা থেকে যাচ্ছে৷ প্রথমত মাদ্রিদ এখনো পর্যন্ত কাতালোনিয়া প্রদেশের স্বাধীনতার প্রচেষ্টার ঘোর বিরোধিতা করে আসছে৷ দলমতনির্বিশেষে এই প্রশ্নে ঐক্য বজায় রয়েছে৷ তার উপর রোববারের নির্বাচনে একক দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে সমাজতন্ত্রী দল৷ প্রায় ২৩ শতাংশ ভোট ও সম্ভবত ৩৩টি আসন পাচ্ছে সমাজতন্ত্রীরা৷ এই দল কাতালোনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ভোটারদের সমর্থন পেয়েছে৷ তবে তারা আলোচনার মাধ্যমে এই প্রশ্নের নিষ্পত্তি চায়৷
স্পেনের বাকি অংশের সঙ্গে কাতালোনিয়ার আপসের মাধ্যমে বিচ্ছিন্নতাবাদের স্পৃহা দূর করার অঙ্গীকার করছে এই দল৷ দলের নেতা ও স্পেনের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালভাদোর ইলিয়া বলেন, ‘‘আশা ভয়ের তুলনায় আরও শক্তিশালী৷’’
নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর কাতালোনিয়ার আগামী জোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে আলোচনা শুরু হবে৷ বাকি বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলোর সঙ্গে বিদায়ী সরকারের প্রধান বিচ্ছিন্নতাবাদী ইআরসি দলের মতপার্থক্য সেই প্রক্রিয়া জটিল করে তুলতে পারে৷ সমাজতন্ত্রীদের মতো ইএসসি দলও শেষ পর্যন্ত ৩৩টি আসন পেয়ে যেতে পারে৷ ফেডারেল ও রাজ্য স্তরে দলীয় রাজনীতির অনেক জটিল সমীকরণ আগামী সরকার গঠনের পথে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
এমন প্রেক্ষাপটে বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো জোট ক্ষমতায় এলে আবার একতরফাভাবে স্বাধীনতার পক্ষে গণভোট আয়োজনের চেষ্টা চালাতে পারে৷ গতবার এমন প্রচেষ্টার পর ফেডারেল সরকার সেই প্রদেশে ২০১৭ সালের শরৎকালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল৷ আন্দোলনের অনেক নেতা হয় দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন অথবা দেশদ্রোহের অভিযোগে বিচারের পর তাদের কারাবন্দি করা হয়েছিল৷ এবার গণভোট হলে করোনা সংকটের কারণে বিপর্যস্ত মানুষ বিচ্ছিন্নতাবাদের প্রতি কতটা সমর্থন দেখাবেন, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে৷ রোববারের নির্বাচনে মাত্র ৫৩ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন৷ ২০১৭ সালে ভোটগ্রহণের হার ছিল ৭৯ শতাংশ৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে